অবিলম্বে তারেক রহমানকে দেশে ফেরার সুযোগ দিতে হবে: মির্জা ফখরুল


বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আসন্ন দুর্গা পূজাকে কেন্দ্র করে তারা অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করতে পারে। তাই বিএনপি নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষকে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের পাশে দাঁড়ানোর এবং তাদের সর্বাত্মক নিরাপত্তা নিশ্চিতের আহবান জানান তিনি। আওয়ামী লীগের লোকজন দেশের গার্মেন্টস কারখানায় অশান্তি সৃষ্টির পায়তারা করে এ শিল্পকে ধ্বংসের ষড়যন্ত্র করছে। গার্মেন্টস কর্মীরা বিষয়টি বুঝতে পেরে এখন স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনতে শুরু করেছে। শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় আ.স.ম হান্নান শাহ’র ৮ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে গাজীপুরের কাপাসিয়া পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত স্মরণসভায় প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এ সব কথা বলেন। মির্জা ফখরুল বলেন, শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও এখনো দেশের সংকট কেটে যায়নি। নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও তার সরকারের লোকজন সবাই ভালো মানুষ। এ সরকার সংস্কার চায় এবং আমরাও সংস্কারে বিশ্বাসী। তাই বলে সংস্কারের নামে বেশি সময় ক্ষেপন করা যাবে না। তাছাড়া গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় দেশকে ফিরিয়ে দিতে দেরি হলে অন্য কোনো ব্যবস্থা যেন ঢুকে না পড়ে সে ব্যাপারে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। তাই দ্রুততম সময়ের মধ্যে নির্বাচন দিয়ে গণতান্ত্রিক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের আহবান জানান তিনি। মির্জা ফখরুল আরো বলেন, তারেক জিয়ার নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের বিষয়ে ইতোমধ্যে তালবাহানা শুরু হয়েছে। তার বিরুদ্ধে দায়ের করা সকল ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা অনতিবিলম্বে প্রত্যাহার করে তারেক জিয়াকে দেশে আসার ব্যবস্থা করতে হবে। পাশাপাশি দেশের সকল নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দেওয়া মামলাও অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানান তিনি। কারণ এ সকল মামলাগুলো প্রত্যাহার করা না হলে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হবে না। ফখরুল বলেন, বর্তমানে আমরা স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারছি। কিন্তু বিগত ১৫ বছর ধরে আমরা স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের সুযোগ পেতাম না। আওয়ামী লীগ সরকার পুলিশ ও প্রশাসনকে ব্যবহার করে ক্ষমতাকে কুক্ষিগত রাখতে দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছিল। শেখ হাসিনা ও তার দোসররা ভেবেছিল তারা আজীবন ক্ষমতায় থাকবে এবং দেশে বিদেশে সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলবে। তিনি বলেন, তত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে দেশে স্থায়ীভাবে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। কারণ আওয়ামী লীগ সরকার সংবিধান সংশোধন করে এ ব্যবস্থাকে বাতিল করে দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে ধ্বংসের ব্যবস্থা করেছিল। তারা বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাঁসাতে চেয়েছিল। কিন্তু ছাত্র-জনতার সুনামীর তাণ্ডবে লুটপাট ও চুরির দায় নিয়ে তারা আজ দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। তিনি আরো বলেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আ.স,ম হান্নান শাহ ছিলেন একজন সত্যিকারের নির্ভিক সাহসী সৈনিক। তিনি বীরের বেশে দেশের মানুষকে গণতন্ত্র ফিরিয়ে দেয়ার জন্য আজীবন লড়াই করেছেন। একটি কুচক্রি মহল যখন শহীদ জিয়াকে হত্যা করে লাশ গুম করার ষড়যন্ত্র করছিল তখন তিনি সাহসের সাথে এগিয়ে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ঢাকায় নিয়ে এসেছিলেন। গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলনের সভাপতিত্বে এবং কাপাসিয়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আজিজুর রহমান পেরার সঞ্চালনায় অন্যান্যের মাঝে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও হান্নান শাহ’র ছেলে শাহ্ রিয়াজুল হান্নান রিয়াজ, কেন্দ্রীয় বিএনপির সমাজ কল্যাণ সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজির আহমেদ টিটু, নজরুল ইসলাম আজাদ, সহ স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, জামাতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সুরা সদস্য ও জেলা নায়েবে আমীর মোঃ শেফাউল হক, নির্বাহী সদস্য ওমর ফারুক শাফিন, মজিবুর রহমান, গাজীপুর মহানগর বিএনপি সভাপতি শওকত হোসেন সরকার প্রমুখ। স্মরণসভার পূর্বে প্রয়াত হান্নান শাহ্র রুহের মাগফেরাত কামনায় বিশেষ দোয়া করা হয় । এর আগে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা কর্মীরা উপজেলার ঘাগটিয়ার গ্রামের পারিবারিক গোরস্থানে হান্নান শাহ’র কবরে পুষ্প স্তবক অর্পন করেন।