এক ‘অ্যান্টিক কয়েনের’ দাম ২০ বিলিয়ন ডলার বলে প্রতারণা


এক ‘অ্যান্টিক কয়েনের’ দাম ২০ বিলিয়ন ডলার বলে প্রতারণা
রাজধানীতে অ্যান্টিক মেটাল কয়েনের ব্যবসার নামে অভিনব প্রতারণার অভিযোগে একটি চক্রের চারজনকে গ্রেফতার করেছে আদাবর থানা পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত থানার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। প্রতারক চক্র জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রে কয়েনের ব্যাপক চাহিদার প্রলোভন দেখিয়ে এক ব্যক্তির কাছ থেকে ১ কোটি ৭০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।শুক্রবার ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান। তিনি জানান, ভুক্তভোগী মিজানুর রহমানকে অ্যান্টিক মেটাল কয়েন ব্যবসার কথা বলে প্রলোভনে ফেলে চক্রটি। তারা কয়েনগুলোর মূল্য ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হবে বলে বিশ্বাস অর্জনের চেষ্টা করেন। এ অভিযোগে গ্রেফতাররা হলো- ইফতেখার আহম্মেদ (৪৪), আবু নাঈম মো. ফাইজানুল হক ওরফে ডক্টর নাঈম (৪৮), মো. আব্দুল হালিম তালুকদার কুরাইশি (৪২) ও আবুল কালাম আজাদ (৪৬)।মো. ইবনে মিজান বলেন, আট মাস আগে একটি আইটি প্রতিষ্ঠানের মালিক মিজানুর রহমানের সঙ্গে ইফতেখার আহম্মেদের পরিচয় করিয়ে দেন তারই বাসার এক ভাড়াটিয়ার মেয়ে। ইফতেখারের ‘অ্যান্টিক মেটাল কয়েন’ (ধাতব মুদ্রা) ব্যবসা সম্পর্কে বিজ্ঞ জানিয়ে মিজানুর রহমানকে কয়েন ক্রয় করতে বলেন। তিনি বলেন, জাপান এবং যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে এই কয়েনের প্রচুর চাহিদা আছে। তারা উচ্চমূল্যে কয়েনগুলো প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিক্রয় করে দিতে পারবেন।এমন প্রলোভনে ১৮ সেপ্টেম্বর গুলশানের একটি হোটেলে ইফতেখার আহম্মেদ এবং বিদেশি কোম্পানির প্রতিনিধি হিসেবে আবু নাঈম মো. ফাইজানুল হক ওরফে ডক্টর নাঈম এবং মো. আব্দুল হালিম তালুকদার কুরাইশি মিজানুর রহমানকে ডেকে নেন এবং কয়েকটি ধাতব কয়েন দেখান। কয়েনগুলো প্রতিটির বাজার মূল্য আনুমানিক ২০ বিলিয়ন ইউএস ডলার হবে বলে তাকে ধারণা দেওয়া হয়। এ সময় তারা তাদের নিজস্ব ভুয়া কেমিস্ট মো. আব্দুল হালিম তালুকদার কুরাইশির মাধ্যমে অ্যান্টিক মেটাল কয়েনগুলো সঠিক কিনা তা পরীক্ষা নিরীক্ষা করে রিপোর্ট দেন।তিনি বলেন, ২৭ অক্টোবর আদাবরের জাপান গার্ডেন সিটির নিকটস্থ একটি ভবনে মিজানুর রহমান তাদের কাছে ‘অ্যান্টিক মেটাল কয়েন’ কিনতে অগ্রিম ৪৫ লাখ টাকা দেন। পরবর্তীতে তিনি বিভিন্ন সময়ে অ্যান্টিক মেটাল কয়েন কেনার জন্য তাদের চাহিদা মোতাবেক আরও ৭৫ লাখ টাকা নগদ এবং ৫০ লাখ টাকার একটি চেক দেন। এরপর তিনি জানতে পারেন, ধাতব মুদ্রা ভুয়া এবং তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন। এ ঘটনায় মিজানুর রহমান আদাবর থানায় একটি নিয়মিত মামলা করেন। এ মামলায় আদাবর থানার বিভিন্ন এলাকায় সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করে আসামিদের গ্রেফতারসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম ও নগদ অর্থ উদ্ধার করে পুলিশ।গ্রেফতারদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে তিনি জানান, তারা আন্তঃজেলা ম্যাগনেটিক কয়েন প্রতারক চক্রের সদস্য। দীর্ঘদিন ধরে ম্যাগনেটিক কয়েনের প্রলোভন দেখিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে এভাবে প্রতারণা করে আসছেন। তাদের নামে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।সংবাদ সম্মেলনে মোহাম্মদপুর জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) মেহেদী হাসান ও আদাবর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম জাকারিয়া উপস্থিত ছিলেন।