কাদের হাতে আমরা তুলে দিচ্ছি দেশের পতাকা?
অনলাইন নিউজ ডেক্স

ডিপিএলে সন্দেহজনক আউট নিয়ে তোলপাড় এখন দেশের ক্রিকেট। আলোচনায় গুলশান ক্রিকেট ক্লাব ও শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবের মধ্যকার গতকালের খেলায় একটি আউটের ধরন। দলের জয় যখন মাত্র ৬ রান দূরে, তখন একজন ব্যাটারের আউটের ধরণ নিয়ে চলছে বিতর্ক।টিভি ফুটেজে দেখা যায় ক্রিজ থেকে বেরিয়ে আসার পর উইকেটরক্ষক স্টাম্প ভেঙে দেওয়ার আগমুহূর্তে লাইনে ব্যাট ঢুকিয়েও বের করে নেন শাইনপুকুরের ব্যাটার মিনহাজুল আবেদিন সাব্বির। এ ঘটনা জন্ম দিয়েছে প্রশ্নের। আউটের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তে এই আউটে ফিক্সিংয়ের গন্ধ পাচ্ছেন অনেকে।অথচ, ডিপিএলকে বলা হয় দেশের অন্যতম সেরা ঘরোয়া পর্যায়ের আসর। যেখান থেকে ক্রিকেটাররা উঠে আসে। জাতীয় দলের জন্য প্রস্তুত হয়। ডিপিএল মাতিয়ে জায়গা করে নেয় জাতীয় দলে। সেই লিগেই এবার ফিক্সিংয়ের কালো থাবা। যা নিয়ে তাই ফেসবুকে ক্ষোভ ঝেড়েছেন জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার ইমরুল কায়েস। কাদের হাতে আমরা তুলে দিচ্ছি দেশের পতাকা সেই প্রশ্নও ছুড়ে দিয়েছেন তিনি।জাতীয় দলের সাবেক এই তারকার দাবি, আরেকটি দলকে সুপার সিক্সে উঠতে না দেয়ার ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নেই এমন এক কাণ্ড ঘটিয়েছে গুলশান ক্রিকেট ক্লাব ও শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাব।ফেসবুকে ইমরুল কায়েস বলেন, আজকে আমি হৃদয় থেকে ক্ষোভ নিয়ে কিছু কথা বলতে বাধ্য হচ্ছি। মিডিয়া, ক্রিকেটার, সাংবাদিক, ধারাভাষ্যকার—সবাই আজ একটা ঘটনায় স্তম্ভিত, ক্ষুব্ধ। কারণটা খুব পরিষ্কার—ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে আজ যে কাজটা হয়েছে, সেটা শুধু লজ্জাজনক না, এটা বাংলাদেশের ক্রিকেটকে কলঙ্কিত করেছে।একটা দলকে সুপার লিগে উঠতে না দেওয়ার জন্য পরিকল্পিতভাবে আরেক মাঠে দুই দল নিজেদের মধ্যে পয়েন্ট ভাগাভাগি করে নিয়েছে! এটা কী ধরনের নাটক? আজকের সেই ম্যাচের ভিডিও প্রমাণসহ নিচে রয়েছে—আপনারা নিজেরাই দেখুন, বিচার করুন।ইমরুল আরও লিখেন, এই যদি হয় আমাদের ঘরোয়া ক্রিকেটের অবস্থা, তাহলে ভবিষ্যতে জাতীয় দলে কারা খেলবে? কাদের হাতে আমরা তুলে দিচ্ছি দেশের পতাকা? যারা মাঠে নামার আগেই ম্যাচের ফয়সালা করে নেয়, তাদের দিয়ে কী দেশের প্রতিনিধিত্ব হয়? লজ্জা! যাদের ব্যবহার করে এসব নোংরা খেলা খেলানো হচ্ছে, তাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার, কারণ ওরা আজ নিজেরাই নিজেদের বিক্রি করে দিয়েছে।বিসিবির প্রচেষ্টা নিয়ে ইমরুল বলেন, আমরা যারা বাংলাদেশের হয়ে খেলার স্বপ্ন দেখি, সেই স্বপ্নকে বাস্তব করতে দিনরাত খেটে যাচ্ছি—আর কিছু বিকৃত মানসিকতার মানুষ নিজেদের স্বার্থে গোটা দেশের ক্রিকেটকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড চেষ্টা করছে উন্নতির, কিন্তু এইসব ঘটনাগুলো সেই চেষ্টাকেও মাটিতে মিশিয়ে দিচ্ছে।এমন সন্দেহজনক খেলার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়ে ইমরুল লিখেছেন, ‘আমি জোরালোভাবে দাবি জানাই—এদের বিরুদ্ধে এখনই কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। যারা এই কাজে জড়িত, তাদের চিহ্নিত করে শাস্তি দিতে হবে। আর যদি সেটা সম্ভব না হয়, তাহলে অন্তত আজকের ম্যাচ বাতিল করে পুনরায় রিশিডিউল করা উচিত। বাংলাদেশের ক্রিকেটকে এভাবে শেষ হতে দেওয়া যায় না। আজকে চুপ থাকলে, কাল হয়তো আর কিছু বলার সুযোগ থাকবে না।’
