কাস্টমস কর্মকর্তাদের লাগাতার কর্মবিরতিতে আমদানিকারকরা ক্ষতিগ্রস্ত
অনলাইন নিউজ ডেক্স

কাস্টমস কর্মকর্তাদের লাগাতার কর্মবিরতির কারণে বেনাপোল কাস্টমস হাউসে আমদানিকৃত পণ্য শুল্কায়নের কাজসহ বন্দর থেকে খালাস প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে গেছে। শুল্কায়নের কাজ বন্ধ থাকায় স্থবির হয়ে পড়েছে বেনাপোল কাস্টমস হাউস।কর্মবিরতিতে বন্দর থেকে পণ্য খালাস নিতে না পারায় প্রতিদিন বন্দরের ভাড়া গুনতে হচ্ছে আমদানিকারকদের। আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তারা। তবে আমদানি রপ্তানিসহ আনলোড প্রক্রিয়া ও যাত্রী চলাচল স্বাভাবিক আছে।জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) জারিকৃত অধ্যাদেশ বাতিল ও প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যানকে অপসারণসহ চার দাবিতে অসহযোগ আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ।বুধবার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের জাতীয় রাজস্ব ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ স্বাক্ষরিত প্রেস নোটে জানানো হয়েছে- বুধবার প্রেস ব্রিফিংয়ের পর থেকে এনবিআরের চেয়ারম্যানের সঙ্গে লাগাতার অসহযোগ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়। সেখানে আরও বলা হয়েছে- বৃহস্পতিবার দুপুরে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের দাবিসমূহের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হবে।বৃহস্পতিবার এনবিআর এবং ঢাকা ও ঢাকার বাইরে স্ব-স্ব দপ্তরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে। তবে রপ্তানি ও আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা এর আওতামুক্ত থাকবে।আগামী শনিবার এবং রোববার কাস্টমস হাউস এবং এলসি স্টেশনসমূহ ব্যতীত ট্যাক্স, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সব দপ্তরে পূর্ণাঙ্গ কর্মবিরতি চলবে। এই দুই দিন কাস্টমস হাউস এবং এলসি স্টেশনসমূহে সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত কর্মবিরতি চলবে। তবে রপ্তানি ও আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা কর্মবিরতির আওতামুক্ত থাকবে। সোমবার থেকে আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা ব্যতীত ট্যাক্স, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সব দপ্তরে পূর্ণাঙ্গ কর্মবিরতি চলবে।বুধবার দুপুরের পর থেকে বেনাপোল কাস্টমস হাউসে শুল্কায়নের কাজ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও এ ঘোষণা দেওয়ার পর থেকেই বেনাপোল কাস্টমস হাউসে শুল্কায়নের সব ধরনের কাজকর্ম বন্ধ হয়ে যায়। বেনাপোল কাস্টমস হাউসে কর্মকর্তারা বুধবার সকাল থেকে ১২টা পর্যন্ত কর্মবিরতি পালন করে আসছিলেন। গত ১৪ মে থেকে ১৯ মে পর্যন্ত এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ডাকা কর্মবিরতির কারণে অন্যান্য শুল্ক স্টেশনের মতো বেনাপোল কাস্টমস হাউসের কর্মকর্তারাও কর্মবিরতি পালন করে আসছিল।বুধবার সরেজমিন দেখা গেছে, কাস্টমস হাউস খোলা আছে তবে অধিকাংশ টেবিলই খালি। কর্মকর্তারা বাইরে ঘোরাঘুরি করছেন। কিছু কর্মকর্তা আসনে থাকলেও কোনো কাজ করছেন না। বেনাপোল পেট্রাপোল বন্দরের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য যাত্রী পারাপার স্বাভাবিক রয়েছে।বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান বলেন, কাস্টমস কর্মকর্তাদের লাগাতার কর্মবিরতির কারণে বেনাপোল কাস্টমস হাউসে শুল্কায়ন কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। শুল্কায়ন কার্যক্রম বন্ধ থাকার কারণে বন্দর থেকে পণ্য খালাস হচ্ছে না। আর পণ্য খালাস না হওয়ার কারণে আমদানিকারকদের প্রতিদিন বন্দরের ভাড়া গুনতে হচ্ছে। আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তারা। প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার রাজস্ব আদায় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।বেনাপোল স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের উপ-পরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবির তরফদার বলেন, কাস্টমস হাউসের কর্মকর্তাদের কর্মবিরতি সত্ত্বেও বেনাপোল বন্দর দিয়ে দুই দেশের মধ্যে আমদানি রপ্তানি স্বাভাবিক রয়েছে। কাস্টমস কর্মকর্তারা লাগাতার কর্মবিরতির ডাক দিলেও আওতামুক্ত রাখা হয়েছে আমদানি রপ্তানি বাণিজ্যে। স্বাভাবিক রয়েছে ভারত বাংলাদেশের মধ্যে যাত্রী পারাপার।বেনাপোল কাস্টমস হাউসের অতিরিক্ত কমিশনার এইচএম শরিফুল হাসান কাস্টমস কর্মকর্তাদের লাগাতার কর্মবিরতির সত্যতার কথা স্বীকার করে বলেন, এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সিদ্ধান্তের সঙ্গে সহমত পোষণ করে বেনাপোল কাস্টমস হাউসে কর্মবিরতি পালন করা হচ্ছে।
