কৌশলে আবারো বাড়ানো হচ্ছে নিত্যপণ্যের দাম


কৌশলে আবারো বাড়ানো হচ্ছে নিত্যপণ্যের দাম
ঈদের পর ফের সক্রিয় সিন্ডিকেট। কৌশলে বাড়ানো হচ্ছে নিত্যপণ্যের দাম। চক্রের কারসাজিতে সরবরাহ পর্যাপ্ত থাকলেও খুচরা বাজারে আলু ও মসুর ডালের দাম কেজিপ্রতি ৫ টাকা বাড়ানো হয়েছে। ডজনপ্রতি ফার্মের ডিমের দাম বেড়েছে ৬-৭ টাকা। এছাড়া ঈদের পর এক প্রকার নীরবে পেঁয়াজের দামও বাড়ানো হয়েছে। চড়ামূল্যে বিক্রি হচ্ছে আদা ও রসুন। সরবরাহ সংকটের অজুহাতে সবজির দামও বাড়তির খাতায় নাম লেখায়। মুরগির দাম কিছুটা কমলেও সব ধরনের মাছ বিক্রি হচ্ছে বাড়তি দামে।বৃহস্পতিবার রাজধানীর কাওরান বাজার, নয়াবাজার, মালিবাগ কাঁচাবাজারসহ একাধিক খুচরা বাজার ঘুরে ক্রেতা ও বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে।বিক্রেতারা জানান, বৃহস্পতিবার প্রতি কেজি আলু বিক্রি হয় ৩০ টাকা। যা সাত দিন আগেও ২৫ টাকা ছিল। প্রতি কেজি মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা। যা এক সপ্তাহ আগে ১৩৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। প্রতি ডজন ফার্মের ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩৫-১৩৬ টাকা। যা সাত দিন আগে ১২৮-১২৯ টাকায় বিক্রি হয়েছে। পাশাপাশি বোতলজাত প্রতি লিটার সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৭৫ টাকা। তবে প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা। যা ঈদের আগে ১৬৮ ও ঈদের পর ১৭২ টাকায় বিক্রি হয়েছে।রাজধানীর নয়াবাজারে নিত্যপণ্য কিনতে আসা ভ্যানচালক আমিনুল ইসলাম বলেন, রোজায় পণ্যের দাম কম থাকায় কিছুটা স্বস্তি ছিল। কিন্তু ঈদের পর একে একে সব ধরনের পণ্যের দাম বাড়ছে। বিশেষ করে আমরা গরিবরা বাড়তি দামের কারণে মাছ মাংস কিনতে পারি না। সেজন্য ডাল-আলুভর্তা, ডিম কিনে মাসের বেশির ভাগ সময় খাবারের জোগান করি। কিন্তু বাজারে এসে দেখলাম এই পণ্যগুলোর দাম বাড়তে শুরু করেছে। তবে বাজারে এসব পণ্যের কোনো ঘাটতি নেই।কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এসএম নাজের হোসাইন বলেন, বাজারে পণ্যের দাম বাড়লে উচ্চশ্রেণির মানুষের ভোগান্তি না হলেও মধ্যবিত্ত ও নিম্নআয়ের মানুষের কষ্ট বাড়ে। পণ্যের দাম বেশি হওয়ায় তা দিয়ে তাদের চাহিদা মেটাতে কষ্ট হয়। তাই সংশ্লিষ্টদের উচিত হবে, বাজার তদারকি জোরদার করে অসাধুদের আইনের আওতায় আনা। সঙ্গে রোজার মতো বাজারে তদারকি জোরদার বহাল রাখা।এদিকে ঈদের পর এক প্রকার নীরবে বাড়ছে পেঁয়াজের দাম। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। যা সাত দিন আগেও ৪৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। প্রতি কেজি দেশি রসুন ১৬০ ও আমদানি করা রসুন সর্বোচ্চ ২৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশি ও আমদানি করা হলুদ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি সর্বোচ্চ ৪০০-৪২০ টাকা। প্রতি কেজি আদা বিক্রি হচ্ছে মানভেদে ১০০-২০০ টাকা। খুচরা বাজারে জিরার কেজি ৬৫০-৭৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি লবঙ্গ ১৬০০ টাকা, ছোট দানার এলাচ বিক্রি হচ্ছে ৫১০০ টাকা।বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঈদের পর বাজারে কাঁচামরিচ, টমেটো, পেঁপে, শসা, লেবুর দাম বেড়েছে। খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৬০-৬৫ টাকা, যা সাত দিন আগেও ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। প্রতি কেজি পেঁপে কিনতে ক্রেতার গুনতে হচ্ছে ৬০ টাকা, যা আগে ৫০ টাকা ছিল। এছাড়া প্রতি কেজি শসা বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকা, যা আগে ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। পাশাপাশি প্রতি কেজি কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা। ঈদের আগেও খুচরা পর্যায়ে কাঁচামরিচ ৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এছাড়া প্রতিটি লেবু বিক্রি হচ্ছে ৮-১০ টাকা।অন্যদিকে বাজারে মাছের দাম কেজিপ্রতি ৫ থেকে ৩০ টাকা বেড়েছে। সরবরাহ সংকটের অজুহাতে বিক্রেতারা দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছে। বিক্রেতারা জানান, প্রতি কেজি পাঙাশ বিক্রি হচ্ছে ২০০-২২০ টাকা। যা ঈদের আগেও ১৮০-১৯০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। তেলাপিয়া প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০-২২০ টাকা। যা আগে ২০০ টাকা কেজিদরে বিক্রি হয়েছে। সরপুঁটি প্রতি কেজির দাম ২২০-২৩০ টাকা, যা আগে ২১০-২২০ টাকা ছিল। এছাড়া প্রতি কেজি চাষের কই বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকা, বড় আকারের রুই বিক্রি হচ্ছে ৩৫০-৪০০ টাকা, মাঝারি আকারের রুই বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৩২০ টাকা। খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি কাতল মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৩৫০ টাকা, চাষের চিংড়ি ৬৫০-৭৫০ টাকা, নদীর চিংড়ি ৮০০-১০০০ টাকা, শিং মাছের কেজি ৮৫০-৯০০ টাকা, ট্যাংরা ৭০০-৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।