খালেদা জিয়ার জনপ্রিয়তাকে ভয় পায় সরকার: মির্জা ফখরুল
অনলাইন নিউজ ডেক্স
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, শর্তসাপেক্ষে সরকার খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করে তাকে প্রকারান্তরে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে। তার জনপ্রিয়তা, রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তিকে জনবিচ্ছিন্ন এই সরকার ভয় পায়। কারণ তিনি দেশের মানুষের সাহসের বাতিঘর। স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্রের ঐক্যের প্রতীক, আশা-ভরসার নির্ভরযোগ্য মজলুম দেশনেত্রী। অথচ তার ওপর জেল-জুলুম, নির্মম-নির্যাতন হয়েছে, তার অধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে। সরকারের অন্যায় চাপ ও অগণতান্ত্রিক কাজের প্রতি মাথানত করেননি, আপস করেননি। চলমান গণ-আন্দোলন সফল করে তার লালিত স্বপ্ন গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের সম্মিলিত সংগ্রাম চলছে। এই সংগ্রাম সফলতার দিকে ধাবিত হচ্ছে।
গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বুধবার তিনি একথা বলেন। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ৫ম কারাবন্দি দিবস উপলক্ষ্যে এক বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ৮ ফেব্র“য়ারি বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে এক কলঙ্কের দিন। ২০১৮ সালের এই দিনে প্রতিহিংসাপরায়ণ আওয়ামী লীগ সরকার রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে ১/১১-এর জরুরি অবস্থায় সরকারের বিরাজনীতিকরণের মিথ্যা মামলায় ফরমায়েশি সাজা দিয়ে অন্যায়ভাবে আটক রেখেছে।
তিনি বলেন, শুধু ফরমায়েশি সাজা দিয়ে তাকে আটক রাখা হয়নি, তার জামিনের অধিকার কেড়ে নিয়ে ২৫ মাস অন্যায়ভাবে কারাগারে বন্দি রেখেছিল। সু-চিকিৎসার অভাবে তার অসুস্থতা তীব্রতর, জীবন হুমকির মুখে পড়ে। তার মুক্তির দাবিতে ব্যাপক আন্দোলন গড়ে উঠে। এ আন্দোলন দমন করতে সরকার নিষ্ঠুর নির্যাতন চালায়। দেশ-বিদেশে সর্বত্র খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি সোচ্চার হয়। আইনগতভাবে বারবার তার জামিনের আবেদন করা হলেও সরকারের হস্তক্ষেপে জামিন দেওয়া হয়নি। আইনি লড়াই করতে বিদেশ থেকে আইনজীবী আসতে চাইলেও সরকারের আপত্তির কারণে তাকে আসতে দেওয়া হয়নি।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, খালেদা জিয়ার উন্নত সু-চিকিৎসার জন্য চিকিৎসকরা বিদেশে উন্নত বিশেষায়িত হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করানোর সুপারিশ করলেও, সরকার তাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে দেয়নি। এসব ঘটনায় দিবালোকের মতো প্রমাণিত হয়, অগণতান্ত্রিক, গণবিরোধী, আইন পরিপন্থি কার্যকলাপ, দুর্নীতি, লুটপাট, ভোটের নামে প্রহসন নির্বিঘেœ চালিয়ে যেতে ফ্যাসিবাদী সরকার খালেদা জিয়াকে রাজনীতি ও নির্বাচন থেকে দূরে রাখার জন্যই ফরমায়েশি সাজা দিয়েছে। কিন্তু জনগণ জানে, বিশ্বাস করে তাদের প্রিয় নেত্রী কোনো অপরাধ করেননি। শুধু সরকারের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে খালেদা জিয়ার ওপর নির্মম, নিষ্ঠুর জুলুম নেমে এসেছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়াকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে বন্দি রাখা মানে গণতন্ত্রকে বন্দি রাখা। খালেদা জিয়া ও গণতন্ত্র আজ যেন সমার্থক। জনগণ আজ গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার সংগ্রামে অবতীর্ণ। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে খালেদা জিয়ার মুক্তি, গণতন্ত্র বিরোধী সরকারের পদত্যাগ, নির্দলীয়, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি সন্নিবেশিত করে ১০ দফা দাবি উপস্থাপন করা হয়েছে। ইতোমধ্যেই এ দাবি জনগণের ব্যাপক সমর্থন লাভ করেছে। সরকার এই দাবিকে অগ্রাহ্য করে একদলীয় কর্তৃত্ববাদী শাসন অব্যাহত রাখতে ষড়যন্ত্র করছে। হত্যা, গুম, খুন, মিথ্যা মামলা, গ্রেফতার ও ব্যাপক দমন-নিপীড়ন চালিয়ে, মানবাধিকার হরণ করেও ফ্যাসিস্ট সরকার আন্দোলন দমন করতে পারছে না। সব বাধা অতিক্রম করে আন্দোলন এগিয়ে চলছে দ্রুতগতিতে।
ডোনেট বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।