গাজায় কমলেও পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি নিপীড়ন বেড়েছে


গাজায় কমলেও পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি নিপীড়ন বেড়েছে
ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে প্রায় নিয়মিতই হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে ইসরায়েল। তবে এ হার আগের তুলনায় অনেকটা কম। এ অবস্থায় অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের নিপীড়ন বেড়েছে। সেখানে ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ ও গুলির করে হত্যার ঘটনা বেড়েছে। গাজা সিটিতে তথাকথিত ‘হলুদ রেখা’র পাশে থাকা ভবনগুলোতে বোমা ও কামানের গোলা ছোড়া হচ্ছে। পাশাপাশি দক্ষিণ গাজা ও মধ্যগাজার বুরেইজ শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি বাহিনী গুলি চালিয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার আলজাজিরা জানায়, গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও তা মানছে না ইসরায়েল। তারা বারবার উস্কানিমূলক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। এতে উপত্যকার বিভিন্ন শরণার্থী শিবিরে দুর্ভোগে থাকা ফিলিস্তিনিদের মধ্যে স্বস্তি নিয়ে আসতে পারেনি যুদ্ধবিরতি। এরই মধ্যে তীব্র ঠান্ডা পড়তে শুরু করেছে। বাস্তুচ্যুত লাখ লাখ ফিলিস্তিনি কীভাবে এ ভয়ংকর ‘দুর্যোগ’ মোকাবিলা করবেন, তা বড় প্রশ্ন হয়ে সামনে আসছে। পশ্চিম তীরে দুই যুবককে গুলি করে হত্যা অধিকৃত পশ্চিম তীরে গতকাল মঙ্গলবার পৃথক ঘটনায় দুই ফিলিস্তিনি যুবককে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। আলজাজিরা জানায়, প্রথম ঘটনাটি ঘটেছে হেবরনে। সেখানে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বা আইডিএফ ১৭ বছর বয়সী মুহান্নাদ তারিক মুহাম্মদ আল-জুগাইরকে গুলি করে হত্যা করে। আইডিএফের দাবি, জুগাইর এক সেনাকে ছুরিকাঘাতের চেষ্টা করেছিল। আহত অবস্থায় সে হেবরনের দিকে চলে যায়। সেখানে একটি গাড়ির ভেতরে তাকে গুলি করে আইডিএফ। অপর ঘটনাটি ঘটেছে রামাল্লায়। সেখানে ১৮ বছর বয়সী রাসলান আসমারকে সেনারা প্রথমে ধরে রাখে। পরে মাটিতে ফেলে গুলি করে রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে রেখে যায়। অধিকৃত পশ্চিম তীরের সর্বত্র ইসরায়েলের অভিযান চলছে। সেখানে সম্প্রতি এক দম্পতিকে ইসরায়েলি বাহিনী গুলি করে হত্যা করে। ফুটেজে দেখা যায়, ওই দম্পতি হাত ওপরে তুলে আত্মসমর্পণ করেছিলেন। কিন্তু তার পরও তাদের ওপর গুলি চালানো হয়। হত্যার পাশাপাশি ফিলিস্তিনিদের তাদের বাড়িঘর থেকে বিতাড়নও করা হচ্ছে। দুই বছরে ২১ হাজার ফিলিস্তিনি গ্রেপ্তার গাজায় জিম্মিদের ফেরত পেতে কয়েক হাজার ফিলিস্তিনি বন্দি মুক্তি করে ইসরায়েল। কিন্তু যে সংখ্যক তারা মুক্ত করেছে, তার কয়েকশ গুণ বেশি ফিলিস্তিনিকে তারা বন্দি করেছে। ফিলিস্তিন প্রিজনার্স সোসাইটির তথ্য অনুযায়ী, গাজায় গণহত্যা যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইসরায়েল নির্বিচারে গ্রেপ্তারের অভিযান অব্যাহত রেখেছে। গাজা থেকে হাজার হাজার মানুষের পাশাপাশি অধিকৃত পশ্চিম তীর ও জেরুজালেম থেকে ২১ হাজার ফিলিস্তিনিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ গ্রেপ্তার ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে দখলদারিত্ব নীতির অংশ। এসব বন্দির ওপর চরম নির্যাতন চালানো হয়। সম্প্রতি ইসরায়েলেরই এক কর্মকর্তা এ নির্যাতনের তথ্য ফাঁস করেন। নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দুর্নীতির মামলায় নেতানিয়াহুকে বিচারের আওতায় আনার দাবিতে ইসরায়েলে বিক্ষোভ হয়েছে। দুর্নীতির মামলা থেকে ক্ষমা চাওয়ার অনুরোধের পর জেরুজালেমে নেতানিয়াহুর বাসভবনের সামনে বিক্ষোভকারীরা জড়ো হন। তারা তাঁকে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান। তাদের মতে, ইসরায়েল ‘ট্রাম্পের আশ্রিত রাজ্য নয়’। এর আগে গত মাসে নেতানিয়াহুকে সম্পূর্ণ ক্ষমা করার জন্য ট্রাম্প আনুষ্ঠানিকভাবে ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজোগ বরাবর অনুরোধ করেন। এ প্রেক্ষাপটে গত সোমবার হারজোগ বলেন, নেতানিয়াহুর ক্ষমা চাওয়ার অনুরোধ ‘অনেক মানুষকে অস্থির করে তুলেছে’। তিনি বলেন, অনুরোধটি ‘সবচেয়ে সঠিক ও সুনির্দিষ্টভাবে পরিচালনা করা হবে। ইসরায়েলি সমাজের মঙ্গল বিবেচনা করব।’ বর্তমানে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে ঘুষের একটি এবং জালিয়াতি ও বিশ্বাস ভঙ্গের তিনটি অভিযোগ আনা হয়েছে।