গিনির দাপটে ভাতিজা কোটিপতি
অনলাইন নিউজ ডেক্স

পুলিশের নজর এড়িয়ে গাইবান্ধা জেলা যুবলীগ সম্পাদক আহসান হাবীব রাজিব শত কোটি টাকা নিয়ে আত্মগোপনে আছেন। তার অনুপস্থিতিতে কোটি কোটি টাকা তার চামচাদের হাতে আসছে কোন পথে এ নিয়ে শহরে চলছে জল্পনা-কল্পনা। তিনি নেই তাতে কি। শহরের বুকে গড়ে ওঠা আলিশান শপিংমলের নির্মাণ কাজ উঠছে আকাশের দিকে।সাবেক সংসদ-সদস্য ও জাতীয় সংসদের হুইপ মাহবুব আরা বেগম গিনির আপন ভাতিজা আহসান হাবিব রাজিবের নাম গাইবান্ধার মানুষের মুখে মুখে। এক সময়ের রাজিব আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে তার ভাগ্য বদলাতে শুরু করে। তার মূল কাজ ছিল টেন্ডারবাজি। বড় বড় ঠিকাদারের কাজে বিনা পয়সায় ভাগ বসিয়ে রাতারাতি বনে যান শত কোটি টাকার মালিক। গিনির ভাতিজা হওয়ার সুযোগে তিনি অল্প সময়েই হয়ে ওঠেন গাইবান্ধার মাষ্টার মাইন। তাকে ছাড়া কোনো সরকারি দপ্তরে কোনো কাজ হতো না।তবে এক্ষেত্রে রাজিবের কৌশল ছিল ভিন্ন। নিজের লাইসেন্সে কোনো কাজ করতেন না। বড় ঠিকাদারের নামে সাঘাটা থেকে সুন্দরগঞ্জ পর্যন্ত তিস্তা যমুনার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণের নামে বালু দিয়ে বাঁধ তৈরি করে শত শত কোটি টাকার উত্তোলন করেন পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে।গাইবান্ধার জেনারেল হাসপাতালের অত্যাধুনিক ৮ তলা ভবন নির্মাণ থেকে শুরু করে, গণপূর্ত, সড়ক জনপদ, এলজিইডির শত শত কোটি টাকার কাজের ভাগ নিয়ে তিনি হয়ে ওঠেন মাহবুব আরা বেগম গিনির অর্থ কালেকশনের ছায়া সম্রাট। অল্প বয়সে যুবলীগের সম্পাদকের পদ পেয়ে বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। উপজেলা পরিষদের টিআর, কাবিখা, কাবিটা থেকে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়োগ বাণিজ্যে নেমে পড়েন। তার পেছনে থাকেন তার ফুফু মাহবুব আরা বেগম গিনি। স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগের ক্ষমতার সময়ে তিনি গাইবান্ধা শহরের নিয়ন্ত্রণ হাতে নেন। পুলিশ প্রশাসনের নাকের ডগার ওপর দিয়ে দলীয় প্রভাবে চলে মাদক মাস্তানি, চাঁদাবাজি টেন্ডারবাজি। এডিপি, টিআর কাবিখার ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে তিনি অগাধ টাকার মালিক বনে যান। তার স্ত্রী ও মেয়ে এবং শ্বশুর কাইজারের নামে বিভিন্ন ব্যাংকে গোপনে টাকার পাহার জমিয়ে রাখেন। ঢাকায় ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর ও ফরাসগঞ্জে নিজের নামে একাধিক ফ্লাট কেনেন। গাইবান্ধা শহরের প্রাণ কেন্দ্র পুরাতন জেলখানার সামনে রাস্তার পাশে বিশাল জায়গা কিনে দশতলা শপিংমল নির্মাণ শুরু করেন। গাইবান্ধা শহরের থানা পাড়ায় নানা রকম পাথর দিয়ে ৫তলা বাড়ি নির্মাণ করে গাইবান্ধাবাসীকে তাক লাগিয়ে দেন।আওয়ামী লীগের ক্ষমতার সময়ে সরকারি কর্মকর্তারা তার বিরুদ্ধে কিছু বলার সাহস ছিল না বলে তার নামে টেন্ডারবাজি চলতো দীর্ঘদিন। দামি গাড়ি নিয়ে গভীর রাত পর্যন্ত চামচাদের নিয়ে দাপিয়ে বেড়াতেন সারা শহর। তার টাকার হিসাব তিনি নিজেই জানতেন না বলে ম্যানেজার হিসাবে ৫ জন মাস্তানকে দায়িত্ব দেন। জুলাই আগস্ট বিপ্লবের পর আহসান হাবীব রাজিব স্ত্রী কন্যাকে শ্বশুরবাড়িতে রেখে পালিয়ে যান।তবে এই যুবলীগ নেতা রাজিব এতো টাকা কোথায় রেখেছেন, কোন ব্যাংকে রেখেছেন তার খবর শুধু পরিবারের লোকজন জানে। তবে দীর্ঘদিন পালিয়ে থাকলেও তার আলিশান শপিংমলের কাজ বন্ধ হয়নি। গোপন পথে টাকা আসছে। আর সেই টাকায় চলছে শপিংমলের নির্মাণ কাজ।যুবলীগ নেতা রাজিব পালিয়ে থাকলেও কোথায় থেকে তার টাকা আসছে গাইবান্ধার কয়েক চামচার হাতে এই প্রশ্ন গাইবান্ধাবাসীর। গাইবান্ধার বিএনপি অফিসে অগ্নিসংযোগসহ হামলার ঘটনায় তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়েছে তার বিরুদ্ধে। ফুফু সাবেক হুইপ মাহবুব আরা বেগম গিনি ঢাকায় পুলিশের হাতে ধরা পড়লেও রাজিবসহ অনেকেই এখনও সীমান্ত পার হয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে।
