চরম অপুষ্টিতে ভুগছে গাজার ৭১ হাজার শিশু ও ১৭ হাজার মা


চরম অপুষ্টিতে ভুগছে গাজার ৭১ হাজার শিশু ও ১৭ হাজার মা
গাজায় ইসরাইল সব ধরনের সাহায্য প্রবেশ বন্ধ করে দেওয়ায় তীব্রতর হয়েছে ক্ষুধা ও অপুষ্টি। ব্যাপক দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে রয়েছে গাজার বাসিন্দারা। বর্তমানে উপত্যকাটির ৭১ হাজার শিশু এবং ১৭ হাজারেরও বেশি মা তীব্র অপুষ্টিতে ভুগছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।গত ১২ মে জাতিসংঘের শিশু তহবিল ইউনিসেফ প্রকাশিত ‘ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্ল্যাসিফিকেশন’ বা আইপিসি প্রতিবেদন অনুসারে, গাজার ৪ লাখ ৭০ হাজার মানুষ বিপর্যয়কর ক্ষুধার সম্মুখীন। এ ছাড়া, পুরো জনগোষ্ঠী তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ৭১ হাজার শিশু এবং ১৭ হাজারেরও বেশি মা তীব্র অপুষ্টিতে ভুগছেন।তাদের জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসার প্রয়োজন হবে। ২০২৫ সালের শুরুতে সংস্থাগুলো অনুমান করেছিল যে,৬০ হাজার শিশুর চিকিৎসার প্রয়োজন হবে।এই বিষয়ে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) নির্বাহী পরিচালক সিন্ডি ম্যাককেইন বলেছেন, ‘গাজার পরিবারগুলো না খেয়ে আছে, অথচ তাদের প্রয়োজনীয় খাবার সীমান্তে পড়ে আছে। নতুন করে সংঘাত এবং মার্চের শুরুতে মানবিক সহায়তার ওপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞার কারণে আমরা তাদের কাছে খাবার পৌঁছাতে পারছি না।’ম্যাককেইন আরও বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জরুরিভাবে পদক্ষেপ নেওয়া অত্যাবশ্যক, যাতে গাজায় আবার সাহায্য প্রবাহিত হয়। যদি দুর্ভিক্ষ নিশ্চিত হওয়ার পর আমরা অপেক্ষা করি, তবে অনেক মানুষের জন্য তা ইতিমধ্যেই অনেক দেরি হয়ে যাবে।’গাজার জন্য আইপিসি প্রতিবেদনে অনুমান করা হয়েছে যে, নতুন সামরিক অভিযান, চলমান সম্পূর্ণ অবরোধ এবং বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় সরবরাহের তীব্র অভাব আগামী মাসগুলোতে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা, তীব্র অপুষ্টি এবং মৃত্যুর হারকে দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে ঠেলে দিতে পারে।আইপিসি প্রতিবেদনে ১৭টি জাতিসংঘ সংস্থা ও এনজিওর মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয়েছে যে, গাজার বেশির ভাগ শিশু চরম খাদ্য বঞ্চনার শিকার। স্বাস্থ্য পরিষেবায় সীমিত প্রবেশাধিকার এবং বিশুদ্ধ পানি ও স্যানিটেশনের তীব্র ঘাটতির সঙ্গে উত্তর গাজা, গাজা এবং রাফা গভর্নরেটে তীব্র অপুষ্টির দ্রুত বৃদ্ধির আশঙ্কা করা হচ্ছে।ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেল বলেছেন, ‘দুর্ভিক্ষের ঝুঁকি হঠাৎ করে আসে না। এটি এমন জায়গায় দেখা যায় যেখানে খাদ্যে প্রবেশাধিকার অবরুদ্ধ থাকে, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে এবং শিশুরা বেঁচে থাকার ন্যূনতম সামগ্রী থেকেও বঞ্চিত হয়। গাজাজুড়ে শিশুদের জন্য ক্ষুধা ও তীব্র অপুষ্টি একটি নিত্যদিনের বাস্তবতা।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বারবার এই পরিস্থিতির বিষয়ে সতর্ক করেছি এবং আবারও সমস্ত পক্ষকে একটি বিপর্যয় রোধ করার আহ্বান জানাচ্ছি।’গাজায় সীমান্ত ক্রসিংগুলো দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ রয়েছে, যা সেখানকার জনসংখ্যাকে এযাবৎকালের দীর্ঘতম অচলাবস্থার মুখোমুখি করেছে। এর ফলে বাজারে খাদ্যের দাম আকাশচুম্বী হয়েছে, যা বেশির ভাগ পরিবারের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে।