জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত হলো রোমান কলোসিয়ামের ঐতিহাসিক ‘কমোডাস প্যাসেজ’


জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত হলো রোমান কলোসিয়ামের ঐতিহাসিক ‘কমোডাস প্যাসেজ’
রোমান সাম্রাজ্যের কুখ্যাত সম্রাটদের গোপন গতিপথ, ঐতিহাসিক সুড়ঙ্গ \'কমোডাস প্যাসেজ\' ইতালির রোমে প্রথমবারের মতো জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। এই গোপন সুড়ঙ্গেই বসে রোমান সম্রাটরা কলোসিয়ামের মঞ্চে গ্ল্যাডিয়েটরদের বাঁচা-মরার লড়াই উপভোগ করতেন এবং সাধারণ জনতার সরাসরি সংস্পর্শ এড়িয়ে চলতেন। রোমান ইতিহাসের অন্যতম স্বেচ্ছাচারী সম্রাট কমোডাস-এর নামানুসারে এই গোপন পথের নামকরণ করা হয়েছে। কমোডাস ইতিহাসে তাঁর ক্ষমতা, বিলাসিতা আর নির্মমতার জন্য কুখ্যাত। এই সুড়ঙ্গ তথা \'কমোডাস প্যাসেজ\'-এ বসেই সম্রাটরা ঐতিহাসিক কলোসিয়ামের সব আয়োজন পর্যবেক্ষণ করতেন। এখন থেকে দর্শনার্থীরা প্রাচীন সম্রাটদের সেই \'নজর\' থেকেই ঐতিহাসিক স্থানটি উপভোগ করতে পারবেন। প্রত্নতাত্ত্বিক বারবারা নাজ্জারো জানান, ঐতিহাসিক মতবাদ অনুযায়ী, খ্রিস্টীয় প্রথম শতকের শেষ ভাগ থেকে দ্বিতীয় শতকের শুরুতে কলোসিয়ামের ভিত্তির নিচ দিয়ে নতুন করে কেটে এই গোপন করিডোরটি তৈরি করা হয়। মূল নকশার অংশ না হয়েও, কলোসিয়াম উদ্বোধনের পর এটি তৈরি করা হয়েছিল যাতে সম্রাটরা সাধারণ মানুষের সাথে যোগাযোগ না করে ভেতরে প্রবেশ করতে পারেন। তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, উনিশ শতকের শেষ দিকে এই পথটি আবিষ্কৃত হয়। প্রত্নতাত্ত্বিকদের ধারণা, কুখ্যাত সম্রাট কমোডাস একবার এখানেই হত্যাচেষ্টার শিকার হয়েছিলেন। \'দ্য গ্ল্যাডিয়েটর\' চলচ্চিত্রের পর সম্রাট কমোডাস আরও বিখ্যাত হয়ে ওঠেন। একসময় এই সুড়ঙ্গটির দেয়াল ঝকঝকে মার্বেল পাথরে মোড়ানো ছিল, পরে তা প্লাস্টারে মুড়িয়ে দেয়া হয়। প্রাচীনকালে গম্বুজের ছাদে ও দেয়ালে প্রাকৃতিক দৃশ্য এবং পৌরাণিক নানা কাহিনী চিত্রিত ছিল। প্রবেশপথে খোদাই করা ছিল গ্ল্যাডিয়েটর যুদ্ধ, ভালুক লড়াই ও কসরতকারীদের চিত্র। যদিও কালের বিবর্তনে বেশিরভাগ অলঙ্করণই আজ হারিয়ে গেছে, তবুও থ্রিডি ভিডিও প্রযুক্তির মাধ্যমে ভার্চুয়ালি সেই চিত্রগুলো জীবন্ত করে তোলা হচ্ছে দর্শনার্থীদের জন্য।