ট্রাম্পকে নিয়ে কথা বলতে অপারগ টম ক্রুজ
অনলাইন নিউজ ডেক্স

মাত্র ক’দিন পরই নতুন সিনেমা মুক্তি। এ নিয়ে চলছে জোর প্রচারণা। এরমধ্যেই দেশের প্রেসিডেন্টকে নিয়ে বিপাকে পড়েছেন হলিউড সুপারস্টার টম ক্রুজ। ‘মিশন ইম্পসিবল’ সিরিজের ৮ নাম্বার ফ্র্যাঞ্চাইজি নিয়ে ২৩ মে পর্দায় হাজির হচ্ছেন এ আইকনিক তারকা।সম্প্রতি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক বক্তব্যে বলেছেন, বিদেশী কোনো সিনেমা আমেরিকায় প্রদর্শণ করতে হলে শতভাগ ট্যাক্স দিতে হবে। এ নিয়ে হলিউডবাসীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কারণ, হলিউডের সিনেমাও বিশ্বব্যাপী প্রদর্শিত হয়। সেক্ষেত্রে এই ইন্ডাস্ট্রির সিনেমা ভিনদেশীরা কীভাবে নেবে, সেটা নিয়ে প্রশ্ন জেগেছে তাদের মনে। সম্প্রতি ঠিক একই প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছিলেন টম ক্রুজ। কিন্তু ট্রাম্পের শুল্কারোপ নিয়ে কথা উঠলে টম ক্রুজ সেটা এড়িয়ে যান।১০ মে দক্ষিণ কোরিয়ার সিউলে ‘মিশন ইম্পসিবল : দ্য ফাইনাল রেকনিং’ সিনেমার বিশ্বব্যাপী প্রচারণা উপলক্ষ্যে একটি সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন টম, যেখানে তাকে ‘বিদেশী ভ‚খন্ডে নির্মিত’ সিনেমার উপর ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের প্রস্তাব এবং বিশ্বজুড়ে গুপ্তচরবৃত্তি চালানোর গল্প নিয়ে সিনেমা নির্মাণের ক্ষেত্রে মার্কিণ নীতি কীভাবে প্রযোজ্য হতে পারে, এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল।অনুষ্ঠান চলাকালীন একজন কোরিয়ান সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, ‘এই সিনেমাটি আফ্রিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে চিত্রায়িত হয়েছে। অবশ্যই, আমরা সবাই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বিদেশী প্রযোজনা এবং সিনেমার উপর যে শুল্ক আরোপ করছেন সে সম্পর্কে অবগত। তাহলে এই বিশেষ সিনেমাটি কি সেই শুল্কের আওতায় পড়বে? কারণ এই সিনেমাওতো বিদেশী ভুখন্ডে শুটিং করেছেন। এটাও জানতে চাই সিনেমাটির কতটা অংশ বিদেশে চিত্রায়িত হয়েছে?’এমন প্রশ্নে টম ক্রুজ বলেন, ‘আমরা বরং সিনেমা সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিতে চাই। ধন্যবাদ।’বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার কারণে স্বভাবতই প্রশ্ন জাগে, তবে খোদ টমও কী ট্রাম্পের ভয়ে তটস্থ? কিংবা ট্রাম্পের নীতির সমালোচনা করতে চান না? নাকি তিনি ট্রাম্পকে পূর্ণাঙ্গ সমর্থন করেন? যদিও টমই হলিউডের একমাত্র তারকা নন, যাকে প্রথমবার এই প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়েছে।এর আগে হলিউডের আরও একাধিক তারকা এমন প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছিলেন। তবে এমন প্রশ্নের মুখোমুখি যে টমকে আরও হতে হবে সেটা প্রায় নিশ্চিত। কারণ, ১৫ মে থেকে কান চলচ্চিত্র উৎসব শুরু হচ্ছে। আর সেখানে প্রিমিয়ার হবে ‘মিশন ইম্পসিবল : দ্য ফাইনাল রিকনিং’ সিনেমা, যেখানে উপস্থিত থাকবেন টম ক্রুজ। একই জায়গার থাকবেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সাংবাদিকরা। স্বভাবতই কারও মুখ থেকে এ ধরনেনর প্রশ্ন ছুটে আসা অসম্ভব কিছু নয়। কারণ, কান উৎসব মানেই একটি বিশ্বব্যাপী বাজার, যা ট্রাম্পের নীতির সম্ভাব্য প্রভাব সম্পর্কে প্রশ্নের ঝড় তুলতে পারে।একই ঘটনার কারণে আমেরিকান প্রযোজনা সংস্থাগুলোর সঙ্গে ব্যবসা করতেও দ্বিধায় পড়তে পারেন অন্য দেশের প্রযোজকরা। যদিও মোশন পিকচার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য তথা স্টুডিও প্রধানরা ১১ মে ট্রাম্পের শুল্ক প্রস্তাব মোকাবেলা করার কৌশল নির্ধারণের জন্য একটি বৈঠক করেছেন, এবং কান উৎসবে বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য সম্ভাব্য সমাধানের প্রস্তুতিও নিয়েছেন বলে মার্কিন গণমাধ্যম জানিয়েছে।অবশ্য টম ক্রুজকে যে প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়েছিল, সেটা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। কারণ ট্রাম্প এখনও বিদেশী সিনেমার উপর কোনও শুল্ক আরোপ করেননি। যদি সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয় তাহলে তার প্রশাসন কীভাবে এই নীতিমালা কার্যকর করবে, কিংবা ‘মিশন ইম্পসিবল’র মতো সিনেমা মুক্তির উপর প্রভাব ফেলবে কিনা তা নিয়ে এখনও অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে। কারণ, এটি একটি মার্কিন কোম্পানি দ্বারা প্রযোজনা করেছেন, এবং একইসঙ্গে বিভিন্ন আস্তর্জাতিক স্থানে চিত্রায়িত হয়েছিল।উল্লেখ্য, এর আগে ট্রাম্প তার সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্য্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যালে একটি পোস্টে বিদেশী সিনেমাকে ‘জাতীয় নিরাপত্তার হুমকি’ বলে অভিহিত করেছেন এবং লিখেছেন, ‘আমরা আবার আমেরিকায় তৈরি সিনেমা চাই!’ তার এই ঘোষণাটি শিল্পে ব্যাপক বিভ্রান্তির সৃষ্টি করেছে। তবে সমালোচনার মুখে হোয়াইট হাউসের পরবর্তী বিবৃতি দ্বারা উত্তেজনার প্রশমন করার চেষ্টা করেছেন এই বলে যে, ‘বিদেশী সিনেমার উপর শুল্ক আরোপ’ সম্পর্কে এখনও কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
