ঠাকুরগাঁওয়ে ষ্ট্রবেরি চাষে আশাব‍্যাঞ্জক সাড়া ফেলেছেন চাষী সুজাত।।


ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে বানিজ্যিক ভাবে স্ট্রবেরি চাষ করে ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন সুজাত আলী নামের এক কৃষক। তার ক্ষেতের সারি সারি বেডের ওপর এখন শোভা পাচ্ছে চোখ জুড়ানো লাল টসটসে স্ট্রবেরি। এরই মধ্যে স্ট্রবেরি তোলা শুরু হয়েছে এবং তা চলে যাচ্ছে রাজধানী ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। এতে এক দিকে যেমন লাভবান হচ্ছেন তিনি অন্যদিকে অনেকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও হয়েছে সেখানে। কৃষি বিভাগ বলছেন, ফসলটি সম্প্রসারনে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করার পাশাপাশি নানা ধরনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। পীরগঞ্জ উপজেলার ৯নং সেনগাঁও ইউনিয়নের বেলদহি গ্রামের কৃষক সুজাত আলী। চলতি বছরের নভেম্বরের দিকে জয়পুরহাট থেকে ১৮ হাজার টাকার স্ট্রবেরির চারা ক্রয় করে নিয়ে আসেন। পরবর্তীতে নিজের ২ একর ৫৫ শতক জমিতে রোপন করেন সেই চারা। বর্তমানে তার খেতে স্ট্রবেরির গাছ রয়েছে প্রায় ৩৫ হাজার। সব গাছেই প্রচুর ফল এসেছে। ফল পাকতে শুরু করেছে। পাকা ফল তুলে বিক্রি করাও শুরু করেছেন তিনি। প্রতিদিনই পাকা স্ট্রবেরি খেত থেকে তুলছেন তিনি। খেতেই পাকা স্ট্রবেরি ৮’শ থেকে ১২শ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। স্থানীয় ভাবে বিক্রির পাশাপাশি রাজধানী ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাঠানো হচ্ছে। এ ফসল আবাদ করতে এখন পর্যন্ত তার খরচ হয়েছে ১২ লাখ টাকার মতো। এরই মধ্যে ৭ লাখ টাকার ফল বিক্রি করেছেন তিনি। ক্ষেত থেকে আরো কমপক্ষে এক মাস লাগাতার ভাবে পাকা স্ট্রবেরি তুলতে পারবেন বলে জানান ঐ কৃষক। এতে সব মিলিয়ে ৪৫ থেকে ৫০ লাখ টাকার স্ট্রবেরি বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা তার। সুজাত আলী জানান, তার ক্ষেত থেকে স্ট্রবেরি তুলা, বাছাই ও প্যাকেট করা সহ পরিচর্যার কাজে ১২ জন নারী-পুরুষ কাজ করছেন। এখানে কিছুটা হলেরও তাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে। এদিকে ব্যতিক্রমি এ ফসল আবাদ করে এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলে ঐ কৃষক। বিভিন্ন এলাকা থেকে খেত দেখতে আসছেন অনেকে। দিনাজপুর থেকে আসা মকলেসুর নামে এক ব্যক্তি জানান, স্ট্রবেরি খেত দেখে তিনি অভিভুত। আগামী তিনি স্ট্রবেরি চাষ করবেন বলে জানান। বথপালিগাও গ্রামের ফাইদুল জানান, স্ট্রবেরি আবাদ করে এত লাভ হয় তা আগে জানা ছিল না। আগামী বছর তিনিও পরীক্ষামুলক ভাবে কিছু জমিতে স্ট্রবেরি চাষ করবেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান, অত্যন্ত লাভজনক ও সম্ভাবনাময় এ ফসল আবাদে কৃষদের উদ্বুদ্ধ করার পাশাপাশি পরামর্শ দিচ্ছেন তারা। এ বছর উপজেলার আড়াই একর জমিতে স্ট্রবেরি চাষ হয়েছে। আগামীতে আরো বেশি পরিমান জমিতে যেন স্ট্রবেরি চাষ হয় এজন্য কাজ করছেন তারা।