ঢাবি থেকে ছাত্রলীগকে হটাতে শিবিরের ভূমিকা…


ঢাবি থেকে ছাত্রলীগকে হটাতে শিবিরের ভূমিকা…
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ঢাবি টোটাল ৫ কিলোমিটার প্রায়।আমরা ১৫ জুলাইয়ে জবি থেকে মিছিল নিয়ে পুলিশের কয়েকটি ব্যারিকেড ভেঙে ঢাবিতে এসে সকলের সাথে মিলিত হয়। সেদিন পুরো ৫ কিলোমিটার রাস্তা আমাদের সাথে হেঁটে ঢাবিতে আসেন বর্তমান জবি শিবিরের সভাপতি (তৎকালীন সেক্রেটারি) Asadul Islam ভাই।জবি থেকে ঢাবিতে মিছিল যাওয়ার পরপরই খবর আসে একাত্তর হলে ছাত্রলীগ কয়েকজনকে আটকে রেখেছে, এরপর রাজু ভাস্কর্য থেকে সবাই ভিসি চত্বর হয়ে একাত্তর হলের দিকে যায়।এরপরই মূলত ছাত্রলীগ হামলা শুরু করে। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ছাত্রলীগ সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর নৃশংস হামলা চালায়। সেইদিন যার সাক্ষী হয়েছিল পুরো দুনিয়ার মানুষ।সেদিন ঢাবি,জবি ঢাকা কলেজসহ আরো অনেক প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাই আহত হয়।সেলুট না দেয়ায় বিচারপতি মানিক রাস্তায় আদালত বসিয়ে পুলিশ কর্মকর্তাদের শাস্তি দেন... বিশেষ করে জবির Kamruzzaman Kayes ,আল-আমিন, Md. Nur Novi ,ইভানসহ আরো কয়েকজন। কামরুজ্জামান কায়েসকে নিয়ে আমি প্রথমে ঢামেকের ইমারজেন্সিতে যায়।এতো মানুষ আহত হয়েছিল যে ডাক্তাররা জরুরি বিভাগে কাউকে ৪/৫ মিনিটের বেশি রাখতেই পারছিলেন না।প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার সাথে সাথেই জরুরী বিভাগ থেকে পাঠিয়ে দিচ্ছিলেন।আমি কায়েসকে নিয়ে জরুরী বিভাগে থাকাকালীন সময়ে ছাত্রলীগ কয়েকবার মেডিকেলের ভিতরে প্রবেশ করে হামলা চালায়। কয়েক দফায় তারা মেডিকেলের ভিতরে হামলা চালায়। জবির আরো কয়েকজন আহতদের নিয়ে আমরা চাচ্ছিলাম মিটফোর্ড হাসপাতালে চলে আসতে কিন্তু ছাত্রলীগের কারণে বের হতে পারছিলাম না।কিছুক্ষণ পরে জবি শিবিরের সদ্য বিদায়ী সভাপতি ইকবাল হোসাইন শিকদার ভাই এবং বর্তমান সভাপতি আসাদুল ইসলাম ভাইসহ আরো কয়েকজন ঢাকা মেডিকেলে আসেন।তারপর ভাইদের সহায়তায় কায়েস,আলামিনসহ আরো কয়েকজনকে নিয়ে মিটফোর্ড হাসপাতালে চলে আসি।তারপর মাগরিবের কিছুক্ষণ আগে মিটফোর্ডে আসে জবি শিবিরের বর্তমান সেক্রেটারি (তৎকালীন অফিস সম্পাদক) MD Riazul Islam ভাই,তৎকালীন আন্তর্জাতিক সম্পাদক Najmul Haque ভাই, তৎকালীন শিক্ষা সম্পাদক Shaheen Ahmed ভাই আর Habib Mohammad Faruk ভাই।আমার ফোন আগেই অফ হয়ে গিয়েছিল।তখন রিয়াজুল ইসলাম ভাই জানান সবাইকে ঢাকা মেডিকেল গিয়ে মাগরিব পড়তে হবে।তারপর আমরা সবাই ঢামেকে এসে মাগরিবের নামাজ পড়ি।সেন্ট্রালের নির্দেশনা ছিলো মাগরিবের পরপরই আমরা শহীদুল্লাহ হলের পাশ দিয়ে লীগ পেটানো কর্মসূচি শুরু করবো।সেইদিন সন্ধ্যায় ছাত্রশিবির জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা,ঢাকা মহানগর দক্ষিণ এবং ঢাকা মহানগর পূর্ব সম্মিলিতভাবে একশনে যায়।কেন্দ্রের নির্দেশনা এমন ছিলো যে, আমরা কয়েকটি সারিবদ্ধভাবে আগাবো।প্রথম সারির কেউ শহীদ হলে দ্বিতীয় সারি থেকে সামনের সারিতে যাবে। আমরা সেদিন সন্ধ্যায় শহীদ হওয়ার হিম্মত নিয়েই মাঠে নেমেছিলাম।সেখান থেকে আমরা প্রায় রাত ১০ টার দিকে পরিস্থিতি যখন স্বাভাবিক হয় তখন মুভ করি।সেই সময় আমাদের সাথে ছিলেন বর্তমান সরকারের দুইজন উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম এবং Mahfuj Alam ছিলেন জানাকের আহবায়ক Nasiruddin Patwary । জবি শিবিরের সদ্য বিদায়ী সভাপতি Md Iqbal Hossain ভাই এবং মহানগর পূর্ব শাখা শিবিরের সভাপতি Mozaffar Hossin ভাইদের নেতৃত্বে আমরা আওয়ামী লীগের পতনের যাত্রা শুরু করেছিলাম ছাত্রলীগকে ক্যাম্পাস থেকে বিতাড়িত করার যাত্রা শুরুর মধ্য দিয়ে।১৫ এবং ১৬ তারিখে ঢাবি থেকে ছাত্রলীগকে বিদায় করার ক্রেডিট অনেকাংশেই ইসলামী ছাত্রশিবিরের। ছাত্রলীগের পরাজয়ের মধ্য দিয়েই খুনি হাসিনার দুঃশাসনের পতনের যাত্রা শুরু হয়। ১৫ এবং ১৬ তারিখে সমন্বয়কদের নিরাপত্তা দিয়েছে ছাত্রশিবির যেটার ধারাবাহিকতা ৫ই আগষ্ট অবধি চলমান ছিলো।ছাত্রশিবির সিদ্ধান্ত নেওয়ার টেবিল থেকে শুরু করে মাঠ পর্যায়ে ছিলো অকুতোভয় সংগ্রামী। আমরা নতুন এক সূর্য পেয়েছি এক রক্তক্ষয়ী মহারণের মধ্য দিয়ে।