নারী নির্যাতনে অভিযুক্তকে থানা থেকে ছাড়াতে এসিল্যান্ডের তদবির!
অনলাইন নিউজ ডেক্স
চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে নারী নির্যাতনে অভিযুক্ত এক ব্যক্তিকে থানা থেকে ছাড়াতে তদবিরের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মিথিলা দাসের বিরুদ্ধে।
বুধবার রাতে থানাতে ছাড়াতে যান এসিল্যান্ডের গাড়িচালক হিমেল। তিনি ব্যর্থ হলে বৃহস্পতিবার সকালে এসিল্যান্ড নিজেই ওসির মোবাইলে কল দিয়ে অভিযুক্তকে ছাড়ার অনুরোধ করেন।
অভিযুক্ত রানা আহম্মেদ (৩০) উপজেলার শিবপুর শিয়ালা গ্রামের এনামুল হকের ছেলে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, শিবগঞ্জ উপজেলায় তার ফুফাতো বোনের বাড়ি। তার সঙ্গে রানার প্রায় ১০ বছরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এরপর তার ফুফাতো বোনের অন্যত্র বিয়ে হয়ে যায়। রানাও বিদেশ চলে যায়। বিদেশে থেকে ওই তরুণীর সঙ্গে আবার যোগাযোগ শুরু করেন।
ফের দুজনের মধ্যে মোবাইল ফোনে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রতিনিয়ত তাদের মধ্যে ভিডিও কলে কথাবার্তা হয়। চলতি বছরের ১ ফেব্রুয়ারি দেশে আসেন রানা। ওই নারীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক হয় তার।
তাদের শারীরিক সম্পর্কের বিষয়টি মেয়ের বাবা-মা জানতে পারলে পরদিন সকালে মেয়েকে নিয়ে রানার বাড়িতে হাজির হন। এ সময় ভুক্তভোগী তরুণীকে মারধর করেন রানা। পরে ওই নারী নাচোল থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। এরই প্রেক্ষিতে বুধবার দুপুরে অভিযুক্ত রানা আহম্মেদকে আটক করে পুলিশ।
এদিকে আটকের পর রানা আহম্মেদকে ছাড়াতে রাতেই নাচোল থানার এসআই আব্দুর রাজ্জাকের কাছে এসিল্যান্ডের গাড়িচালক হিমেল যান। সেখানে গিয়ে রানা আহম্মেদ তার আত্মীয় পরিচয় দেন। এসিল্যান্ডের বরাত দিয়ে ওই পুলিশ কর্মকর্তার কাছে গিয়ে রানাকে ছেড়ে দিতে বলেন।
এ বিষয়টি এসআই রাজ্জাক স্বীকার করেছেন প্রতিবেদকের কাছে।
তবে এবিষয়ে হিমেলের ব্যবহৃত মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী নারী জানান, বুধবার দুপুরে নাচোল থানায় আমার অভিযোগের বিষয়ে সামাজিকভাবে সালিস বসা হয়। কিন্তু ছেলে পক্ষ তা না মানায় নাচোল থানা পুলিশ রানাকে আটক করে।
এ বিষয়ে নাচোল থানার ওসি মিন্টু রহমান জানান, রানাকে আটকের পর বুধবার রাতে এসিল্যান্ডের চালক তদবির করতে এসেছিলেন। পরে বৃহস্পতিবার সকালে এসিল্যান্ড নিজেই রানার বিষয়ে একটু দেখার জন্য বলেছিলেন মোবাইলে। কিন্তু রানাকে ছাড়া হয়নি। বৃহস্পতিবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে নাচোল সহকারী কমিশনার (ভূমি) মিথিলা দাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ কথা বলতে রাজি হননি। পরে তিনি নাচোল থানার ওসির সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন এ প্রতিবেদককে।
ডোনেট বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।