‘পিটিআই জাতীয় ঐক্যের বাইরে, ভারতপন্থি লবির সঙ্গে যুক্ত’


‘পিটিআই জাতীয় ঐক্যের বাইরে, ভারতপন্থি লবির সঙ্গে যুক্ত’
পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) সঙ্গে ভারতপন্থি লবির সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে বলে দাবি করেছেন দেশটির পাঞ্জাব প্রাদেশিক সরকারের তথ্যমন্ত্রী আজমা বুখারি। তিনি পিটিআইকে ‘তেহরিক-ই-বয়কট’ বলে কটাক্ষ করেছেন।আজমা বুখারির অভিযোগ, জাতীয় নিরাপত্তার চেয়ে রাজনীতিকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে পিটিআই। তার দাবি, পিটিআই বিদেশি গোষ্ঠীগুলোর হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে এবং দলটির কিছু নেতা ভারতপন্থি লবির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখছেন।বুধবার (১৯ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনাল।মঙ্গলবার লাহোর প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে আজমা বুখারি বলেন, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে লবিং চলছে এবং কিছু ব্যক্তি এতে সহযোগী হিসেবে কাজ করছে। তিনি অভিযোগ করেন, যখন পিটিআই প্রধান ক্ষমতায় ছিলেন, তখনও তিনি জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত বৈঠকগুলো এড়িয়ে চলতেন। তার দাবি, পিটিআইয়ের ‘সন্ত্রাসী উইং’ জাতীয় নিরাপত্তার জন্য গুরুতর হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।আফগান শরণার্থী ও নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে বক্তব্যআফগান শরণার্থীদের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পাকিস্তানের পক্ষে আর্থিক ও নিরাপত্তাজনিত কারণে তাদের বোঝা বহন করা সম্ভব নয়, তাই তাদের নিজ দেশে ফিরে যাওয়া উচিত।তিনি আরও বলেন, কিছু ব্যক্তি পাকিস্তানকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত এবং দেশের শত্রুদের এজেন্ডা বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে। তিনি জাতীয় কর্মপরিকল্পনার (ন্যাশনাল অ্যাকশন প্ল্যান) আওতায় সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান।তিনি সতর্ক করেন যে, পাকিস্তানে সন্ত্রাসবাদ ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে, যা মোকাবিলায় কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, লাহোর প্রেস ক্লাবকে তিনি তার ‘দ্বিতীয় বাড়ি’ মনে করেন এবং সাংবাদিকদের বেতন-ভাতা ও অন্যান্য সমস্যা সমাধান তার অগ্রাধিকারের মধ্যে রয়েছে।তিনি ঘোষণা দেন, রমজান সহায়তা প্যাকেজের আওতায় তিন মিলিয়ন দরিদ্র মানুষের পাশাপাশি সাংবাদিকদেরও আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে।জাতীয় নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক সমন্বয়ের আহ্বানআজমা বুখারি বলেন, পাকিস্তানে ক্রমবর্ধমান সন্ত্রাসী হুমকির প্রেক্ষাপটে সব রাজনৈতিক দল নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে। তবে কিছু গোষ্ঠী জাতীয় নিরাপত্তার চেয়ে নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে, যা দুঃখজনক।তিনি জানান, যখন সংসদে জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির বৈঠক চলছিল, তখন একটি নির্দিষ্ট দল রাজনৈতিক বয়কটকে রুটিন হিসেবে চালিয়ে যাচ্ছে। অতীতেও পিটিআই জাতীয় ঐক্যের বাইরে ছিল এবং এখনো একই অবস্থান বজায় রেখেছে।তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের প্রশংসা করে বলেন, তিনি সবসময় ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে প্রস্তুত এবং দেশের স্বার্থকে সবার ওপরে রাখেন। তিনি ৯ মে’র সহিংস ঘটনার নিন্দা জানান এবং জাফর এক্সপ্রেস হামলা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ানো প্রচারণার কঠোর সমালোচনা করেন।আজমা বুখারি জোর দিয়ে বলেন, পাকিস্তানের সীমান্ত রক্ষা করা সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। তিনি দাবি করেন, দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত কিছু উপাদান ছাড়া পুরো জাতি জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্নে ঐক্যবদ্ধ। যারা পাকিস্তানকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে চায়, তারাই জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে, আর প্রকৃত দেশপ্রেমিক নেতারা ও সাধারণ নাগরিকরা দেশের জন্য যে কোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত।