পৃষ্ঠা উলটিয়ে পড়াগুলো রিভিশন দাও


আর ক’দিন পরই শিক্ষাজীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পাবলিক পরীক্ষা এইচএসসি শুরু হবে। পরীক্ষা নিয়ে ছাত্র-অভিভাবক অনেকেরই অনেক ভয় বা আতঙ্ক থাকে। তাদের জন্যই এ লেখা। শিক্ষার্থীরা এখন নিশ্চয়ই রিভিশন দেয়া শুরু করেছ। পরীক্ষার রুটিন দেখে কবে কোন বিষয়ের রিভিশন দেবে তা দ্রুত ঠিক করে নাও। দুই বছর ধরে পড়েছ, আশা করি রুটিন করে রিভিশন দিলে পরীক্ষার আগের রাতের জন্য পড়া জমে থাকবে না। পরীক্ষার আগের রাতে শুধু পৃষ্ঠা উলটিয়ে পড়াগুলো রিভিশন দেবে। যাতে কী কী পড়েছ সেগুলো নিজেকে স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়। পরীক্ষা চলাকালীন দিনগুলোতে খাবারের দিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে। বিরিয়ানি, ফাস্টফুডজাতীয় ভারি খাবার মোটেই পরীক্ষার সময় স্বাস্থ্যকর নয়। পরীক্ষার আগের রাতে যতটা সম্ভব তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ার পরামর্শ দেব। যাতে শান্ত মনে, সুস্থ দেহে পরীক্ষার হলে পৌঁছাতে পার, ঠান্ডা মাথায় পরীক্ষা দিতে পার। অভিভাবকরা লক্ষ্য রাখবেন, পরীক্ষার্থী যেন সুস্থ ও সুন্দরভাবে পরীক্ষার হলে যেতে পারে। চারদিকে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব। মশা নিরোধক ব্যবহারের পাশাপাশি মশার কামড় থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। কেউ অসুস্থ হলে দ্রুত কলেজকে জানিয়ে প্রয়োজনে সিক বেড-এর আবেদন করতে হবে। সবার সুস্থতা কামনা করছি। পরীক্ষার হলে যাওয়ার আগে কিছু বিষয় অবশ্যই খেয়াল রাখতে হয়। প্রবেশপত্র, প্রয়োজনীয় কলম-পেন্সিল, রাবার ও আনুষঙ্গিক যে বিষয়গুলো আছে সেগুলো আগের রাতে ঠিকঠাক করে রেখ। যাতে পরীক্ষার দিন সকালে কোনো ধরনের তাড়াহুড়া করা না লাগে। যারা ঢাকাসহ বিভিন্ন মেট্রোপলিটন শহরে থাক তাদেরকে একটি বিষয় খেয়াল রাখা বাঞ্ছনীয়, সেটা হলো শহরের ট্রাফিক জ্যাম। হাতে পর্যাপ্ত সময় নিয়ে বাসা থেকে বের হতে হবে, যেন পরীক্ষার কমপক্ষে ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষার কেন্দ্রে উপস্থিত হতে পার। আর যদি দেরি হয়েই যায় তাহলে দুশ্চিন্তা না করে সুস্থিরভাবে পরীক্ষা দেওয়া শুরু করবে। পরীক্ষার প্রথমদিন অবশ্যই একটু আগে যাবে, সিট কোন কক্ষে পড়েছে তা জানার জন্য। পর্যাপ্ত অধ্যয়ন থাকলে ‘আমি উত্তর দিতে পারব’, এ আত্মবিশ্বাস নিয়ে যদি কেউ হলে ঢোকে- তাহলে যে প্রশ্নই আসুক না কেন, যেভাবেই প্রশ্ন আসুক, সে উত্তর দিতে পারবে। শিক্ষার্থীরা যদি পরীক্ষাভীতি না রেখে পরীক্ষার হলে বসতে পারে, তাহলে তারা ভালো নম্বর পেতে পারে। পরীক্ষার হলে বসার পরে সময় ব্যবস্থাপনার দিকে খেয়াল রাখতে হবে। কতগুলো প্রশ্ন আছে, আর কতগুলো প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে, সেই হিসাবে সময় বণ্টন করে লিখতে হবে। বহুনির্বাচনি প্রশ্নের ক্ষেত্রে উত্তরপত্রে তোমার বিস্তারিত বিষয় কোড সঠিকভাবে পূরণ আবশ্যক। অল্প সময়ে একাধিক উত্তর দিতে হয় বিধায় যে উত্তরটি প্রথম সঠিক মনে হবে তাই উত্তর দেবে। সহজ উত্তরগুলো আগে দেওয়ার চেষ্টা করবে। সৃজনশীল একটা প্রশ্ন খুব ভালোভাবে লিখলাম, আর লিখে বেশি সময় নিয়ে ফেললাম। আর বাকি প্রশ্নগুলোর উত্তর ভালোভাবে দিতে না পারার চেয়ে সব প্রশ্ন সমান গুরুত্ব দিয়ে লিখলে বেশি নম্বর পাওয়া যাবে। প্রশ্নের চাহিদা অনুযায়ী সব প্রশ্নের উত্তর গুছিয়ে লিখে আসতে হবে। অনেকে মনে করে, বেশি লিখলে বেশি নাম্বার পাওয়া যাবে। ব্যাপারটি সঠিক নয়। গুরুত্বপূর্ণ হলো প্রশ্নটা বোঝা। প্রশ্ন বুঝে সে আলোকে গুছিয়ে উত্তর লিখলে ভালো নম্বর পাওয়া যাবে। মনে রাখতে হবে সময় সীমাবদ্ধ। অল্প সময়ের মধ্যেই পরীক্ষার খাতায় প্রশ্নের উত্তর গুছিয়ে লিখতে হবে। প্রশ্নের উত্তর গুছিয়ে লিখতে পারলে পরীক্ষক মূল্যায়ন করবেন যে পরীক্ষার্থী প্রশ্নটি বুঝেছে কিনা, যাচাই করেছে কিনা। প্রশ্নের উত্তর গুছিয়ে অল্প কথায় দিতে পারলে, সেটাই হবে সেরা। কোনো প্রশ্নের উত্তর অনেক পৃষ্ঠা গুছিয়ে না লিখে অপ্রাসঙ্গিকভাবে লিখলে পৃষ্ঠা ভরা হবে, নম্বর বেশি উঠবে না। আরেকটা বিষয় খুব গুরুত্বপূর্ণ, তা হলো হাতের লেখা সুন্দর ও বানান সঠিক হওয়া। পরীক্ষার খাতায় হাতের লেখা যদি স্পষ্ট বোঝা যায় তাহলে যিনি পরীক্ষক তার জন্য খাতার লেখা বুঝতে সুবিধা হবে। বানান যদি সঠিক না থাকে, পরীক্ষক এর কাছে বিষয়টা বিব্রতকর মনে হয়, স্বভাবতই নম্বর কমে যায়। পরিশেষে, পরীক্ষার্থীদের জন্য শুভকামনা রইল। সুন্দর হোক তোমাদের ভবিষ্যৎ, মহান আল্লাহতায়ালা তোমাদের সহায় হোন।