প্রসূতির মৃত্যু: থানায় ১২ ঘণ্টা লাশ রেখে ৪ লাখে রফা
অনলাইন নিউজ ডেক্স

মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকের অবহেলায় সিজারিয়ান অপারেশনে এক প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। তবে লাশ ১২ ঘণ্টা থানার সামনে রেখে ভুক্তভোগী পরিবারকে প্রভাবশালীদের মাধ্যমে চাপ দিয়ে চার লাখ টাকায় বিষয়টি দফারফা করতে বাধ্য করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মারা যাওয়া নিপা আক্তার ভবেরচরের মো. শামীমের স্ত্রী।স্বজনরা জানায়, শুক্রবার সন্ধ্যায় ভবেরচর বাসস্ট্যান্ডে মিয়াজী টিএইচ মেমোরিয়াল হাসপাতালে চিকিৎসক রাজিয়া বেগমের তত্ত্বাবধানে নিপার সিজারিয়ান অপারেশন শুরু হয়। অপারেশন শুরুর ১০-১৫ মিনিট পর তাদের জানানো হয় মেয়ে সন্তান হয়েছে, বাচ্চার অবস্থা ভালো।কিন্তু দীর্ঘ দুই ঘণ্টা পরও নিপাকে অপারেশন থিয়েটার থেকে বের না করায় তাদের সন্দেহ হয়। পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার পরে তাদের জানানো হয় বাচ্চার মায়ের অবস্থা খারাপ তাকে ঢাকা নিয়ে যেতে হবে। এ সময় নিপার নিথর দেহ তাদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়। তারা তড়িঘড়ি করে তাকে নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকার প্রো-একটিভ মেডিকেল কলেজে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। সেখান তাদের জানানো হয় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে অনেক আগেই নিপার মৃত্যু হয়েছে।প্রসূতির মৃত্যুর খবরে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ও রোগীর স্বজনরা শনিবার রাত ৯টায় হাসপাতালটিতে অবস্থান নিয়ে স্টাফদের অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি শান্ত করে এবং লাশ গজারিয়া থানায় নিয়ে যায়।চিকিৎসক রাজিয়া বেগম বলেন, ‘রোগীর আগে থেকেই বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা ছিল, আমি অপারেশন করার পরে বিষয়টি ধরতে পেরেছি। আমি তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা পাঠিয়ে দিতে বলেছিলাম। এখানে আমার কোনো অবহেলা ছিল না।’মুন্সীগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আসলাম খান বলেন, ‘ভুক্তভোগীর স্বজনরা থানায় অভিযোগ করেনি। তারা লাশ নিয়ে চলে গেছে। তারা অভিযোগ না করলে আমাদের বিশেষ কিছু করার নেই। তারপরও আমি বিষয়টি দেখছি।’২০২০ সালের ১৯ জুলাই এ হাসপাতালে চিকিৎসকের বদলে নার্স দিয়ে অপারেশন করার কারণে পুরান বাউশিয়া গ্রামের ইউসুফ আলীর স্ত্রী খাদিজা আক্তারের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় সে সময় বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী হাসপাতালটিতে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়।
