বাংলাদেশের ‘পায়ে’ ধরে যে মিনতি করলেন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র হাদি
অনলাইন নিউজ ডেক্স

গণহত্যার বিচার ও ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে আগামী ২৫ এপ্রিল রাজধানীর শাহবাগে শহিদি সমাবেশে করবে ইনকিলাব মঞ্চ। তার আগে এই দুই দফা দাবিতে মাসব্যাপী গণস্বাক্ষর সংগ্রহ ও লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি পালন করছে সংগঠনটি। চলমান কর্মসূচি নিয়ে ফেসবুকে নিজের ওয়ালে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদি।স্ট্যাটাসটি ইতোমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে।শুক্রবার রাতে ‘বাংলাদেশের পায়ে ধরে মিনতি করি’ শীর্ষক শিরোনামে দেওয়া ওই স্ট্যাটাসটি পাঠকের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো।‘গত সাত দিন ধরে আমরা দিনের বেলা রৌদ্র ও রাস্তায়। রাতে গাড়িতে গাড়িতে। দিনে লিফলেট আর মাইক নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা হাঁটি। গণহত্যার বিচারের দাবিতে মানুষের দুয়ারে দুয়ারে যাই। শহিদ পরিবারের আহাজারি শুনে কান্দি। চোখ মুছে রাতে আবার অন্য বিভাগে রওনা করি। গত সাত দিনে আমরা লাঞ্চ করেছি ডিনারের সঙ্গে। সকালে নাস্তা করে রাস্তায় বের হয়ে গেছি। দুপুরে খাওয়ার সুযোগ আমাদের হয় নাই। জনসংযোগ শেষ করে দুপুর আর রাতের খাবার একসঙ্গে খেয়েছি। বিছানায় শোয়ার তেমন সুযোগ হয় নাই। রাতে গাড়িতে বিশ্রাম নিয়েছি। নামাজ শেষে মসজিদগুলোর বারান্দায় কিছুক্ষণ শুয়ে থেকেছি। গলা থেকে এখন কোনো শব্দ বের হয় না আর।চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহ, বরিশাল ও খুলনার জনসংযোগ শেষ করে শনিবারের মার্চ ফর গাজা’য় যোগ দিতে শুক্রবার খুলনা থেকে ঢাকায় রওনা করেছি। শনিবারের মার্চের পর ১৪ তারিখ বিকালে আমাদের বৈশাখী র্যালি। র্যালি শেষ করেই রওনা করতে হবে রংপুর ও রাজশাহীর জনসংযোগে। এরপর ঢাকায় ফিরে ২৫ এপ্রিলের শহিদি সমাবেশের আগের সপ্তাহটা সারা ঢাকা চষে বেড়াতে হবে আমাদের।প্রতিটা বিভাগে জনসংযোগ শুরু করার আগে সেখানকার একাধিক শহিদের কবর জিয়ারত করেছি আমরা। তাদের চোখের দিকে তাকানোর সাহস হয় না। প্রতিটা অঞ্চলে ভাইয়েরা আমাদেরকে যেভাবে বুকে জড়ায়ে নিয়েছেন, তা ব্যাখ্যা করবার শব্দ আমাদের কাছে নাই।এই দীর্ঘ সফরে থাকা আমার ইনকিলাবের ভাইগুলোর মুখের দিকে তাকানো যায় না ক্লান্তিতে। ওদের এই ত্যাগ ও কষ্টের কথা ভাবতেই বারবার চোখ ভিজে যায়। ওদের দিকে তাকালে আমারে জালেম মনে হয়।গণহত্যার বিচার ও ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে শুক্রবার খুলনায় ইনকিলাব মঞ্চের গণসংযোগ । ছবি-ফেসুবক
আমাদের এসব কষ্টই কিছুই মনে হবে না, যদি জুলাই, শাপলা ও পিলখানার বিচার ও গণহত্যাকারী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে সারাদেশটাকে জুলাই জজবায় জাগিয়ে তোলা যায়।আপনাদের হাতে পায়ে ধরে মিনতি করি, যেই ভুল আমরা পলাশীতে করেছিলাম দুইশো বছর আগে, সেই ভুল আবার আপনারা চব্বিশের সঙ্গে হইতে দিয়েন না।সহস্র শহিদ পরিবার ও জুলাইয়ের গাজীদেরকে কচুকাটা করতে আপনারা তাদেরকে দিল্লি ও লীগের হাতে তুইলা দিয়েন না। বিশ্বাসের এই জমিনরে আরেকটা গাজা হইতে দিয়েন না। আল্লাহর দোহাই। জুলাই না বাঁচলে বাংলাদেশ বাঁচবে না। আসুন, জান ও জুলাই বাঁচাতে ঐক্যবদ্ধ হই।গণহত্যার বিচার ও লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে দেখা হবে ২৫ এপ্রিল, শাহবাগের শহিদি সমাবেশে, ইনশাআল্লাহ। বাংলাদেশ জিন্দাবাদ। ইনকিলাব জিন্দাবাদ’।
