বিক্ষোভের আগুনে পকেট গরম


বিক্ষোভের আগুনে পকেট গরম
অভিবাসন বিরোধী তল্লাশির জেরে উত্তাল হয়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেস। শহরজুড়ে প্রতিধ্বনিত হচ্ছে একই স্লোগান- ‘আইসিই বাতিল করুন’। শুক্রবার শুরু হওয়া বিক্ষোভ রূপ নিয়েছে সহিংস সংঘর্ষে। তবে লস অ্যাঞ্জেলেসের রাস্তাঘাট এখন শুধু বিক্ষোভের মঞ্চই নয়, হয়ে উঠেছে রমরমা স্ট্রিট ফুড বাণিজ্য ক্ষেত্রও। হাজার হাজার বিক্ষোভকারীর ভিড়ে খাবারের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় পকেট গরম হচ্ছে এই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের।সামাজিক আন্দোলনের ধূম্রজালে খাদ্য বিক্রেতারা শুধু জীবিকাই চালাচ্ছেন না, বরং তারা এক ধরনের মানবিক সহায়তার প্রতীক হিসাবেও নিজেদের প্রমাণ করছেন। এপি।লস অ্যাঞ্জেলেসে অভিবাসীদের ধরপাকড় অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে শহরজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া এই বিক্ষোভে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়। ক্রমেই বাড়তে থাকে সহিংসতা। রোববার বিকালে ডাউনটাউন লস অ্যাঞ্জেলেসে মেট্রোপলিটন ডিটেনশন সেন্টারের সামনে বিক্ষোভকারীরা সেনাদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায়। তখন কাঁদানে গ্যাস ছোড়া হয় এবং বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে রাবার বুলেটও ব্যবহার করা হয়।এই পরিস্থিতির মধ্যেও নিজেদের ব্যবসা চালিয়ে গেছেন স্ট্রিট ফুড ব্যবসায়ীরা। যদিও টিয়ার গ্যাস ছোড়ার ঘটনা ঘটেছে কিন্তু বিক্রেতারা থেমে যাননি। পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ধাওয়া-পালটাধাওয়ার মধ্যে তখনও এক হট ডগ বিক্রেতা নিরলসভাবে তার স্টল চালিয়ে যাচ্ছিলেন। বিক্ষোভকারীদের পাশে অটুট ছিলেন তারা। সিনথিয়া সোরিয়াও, এডগার হার্নান্দেজ এবং সেজারিন হার্নান্দেজও এ দিন সকালে তাদের ‘আগুয়াস ফ্রেস্কাস’ (ঠান্ডা ফলের পানীয়) ও কিছু দুধ নিয়ে স্টল সাজিয়েছিলেন।কিন্তু তারা ভাবেননি, কয়েক ঘণ্টা পর তারা সেই দুধ ব্যবহার করে টিয়ার গ্যাসের জ্বালাপোড়া কমাতে বিক্ষোভকারীদের সাহায্য করবেন। এই ছোট ব্যবসায়ীরা তাদের ঠান্ডা পানীয় আর দুধ ব্যবহার করে প্রতিবাদকারীদের টিয়ার গ্যাসের কষ্ট কমাতে সাহায্য করেছেন। বিক্ষোভকারীদের পাশে থেকে প্রতিনিয়তই হট ডগ, ঠান্ডা পানীয় ও অন্যান্য খাবার সরবরাহ করছেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা।লস অ্যাঞ্জেলেসের ডাউনটাউন এলাকায় একাধিক স্থান দেখা গেছে, রাস্তার খাবার বিক্রেতারা ছোট ছোট দোকান বসিয়ে বিক্ষোভকারীদের পাশে থেকে মানবিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছেন। তাদের অনেকেই অভিবাসী। তবে নগদ টাকা না নিয়ে ডিজিটাল পেমেন্টের মাধ্যমে বিক্রয় করছিলেন তারা। যাতে ঝুঁকি এড়িয়ে নিরাপত্তা ও দ্রুত লেনদেন করা যায়। যেখানেই বিক্ষোভ হচ্ছে, সেখানেই দেখা মিলছে রাস্তায় স্টল বসানো এই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের। শুধু খাবার নয়, অনেকে আবার বিক্রি করছেন লাতিন আমেরিকান দেশগুলোর জাতীয় পতাকাও। প্রতিবাদের প্রতীক হয়ে উঠেছে সেসবও।