বিটিভির ১২ কর্মকর্তার পদোন্নতি প্রস্তাব বাতিল


বিটিভির ১২ কর্মকর্তার পদোন্নতি প্রস্তাব বাতিল
জাতীয় সম্প্রচার মাধ্যম বাংলাদেশ টেলিভিশনের (বিটিভি) ১২ কর্মকর্তার পদোন্নতি প্রস্তাব বাতিল করেছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়। সোমবার (১৭ মার্চ) মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং পদোন্নতি কমিটির আহ্বায়ক মাহবুবা ফারজানার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিতব্য সভায় তাদের পদোন্নতির বিষয়টি চূড়ান্ত করার কথা ছিল। একইদিন ‘তালিকায় নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা ও দুর্নীতিবাজরা; ফ্যাসিস্টের দোসররা পদোন্নতি পাচ্ছেন’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর সরকারের উপর মহলের নির্দেশে পদোন্নতি কমিটির সভা ও পদোন্নতিসংক্রান্ত প্রস্তাব বাতিল করা হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। তবে সোমবার তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. মামুন অর রশিদ প্রকাশিত প্রতিবেদনের প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, বিটিভি কর্মকর্তাদের পদোন্নতি প্রদানের জন্য বিভাগীয় পদোন্নতি কমিটির (ডিপিসি) ১৭ মার্চের সভা অনুষ্ঠিত হবে না, যা দাপ্তরিকভাবে ১৬ মার্চ নির্ধারিত হয়। জানা গেছে, সম্প্রতি বিটিভির ১২ কর্মকর্তার পদোন্নতির উদ্যোগ নেয় তথ্য মন্ত্রণালয়। এসব কর্মকর্তার নামের তালিকা একটি গোয়েন্দা সংস্থার কাছে যাচাই-বাছাইয়ের জন্য পাঠানো হয়। গোয়েন্দা তদন্তে বেরিয়ে আসে ওই তালিকায় সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও দুর্নীতিবাজ হিসাবে চিহ্নিত পতিত সরকারের দোসরদের নাম রয়েছে। এছাড়া তালিকায় থাকা অন্তত পাঁচজনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অনুসন্ধান করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তাদের কারও কারও বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তে দুর্নীতির প্রমাণও পাওয়া গেছে। এতকিছুর পরও রহস্যজনক কারণে তাদের পদোন্নতির প্রক্রিয়া প্রায় চূড়ান্ত করেছিল মন্ত্রণালয়। প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ : মন্ত্রণালয়ের পাঠানো প্রতিবাদপত্রে বলা হয়েছে, যখন বিভাগীয় পদোন্নতি কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হবে, তখন কমিটির সদস্যরা পদোন্নতির জন্য বিবেচিত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে থাকা অভিযোগসহ সার্বিক বিষয় পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই করবে। কোনো কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে তিনি পদোন্নতির জন্য বিবেচিত হবেন না। প্রতিবাদে আরও বলা হয়েছে, প্রকাশিত খবরে উল্লেখ করা হয়েছেÑ‘বিতর্কিত এসব কর্মকর্তার পদোন্নতি চূড়ান্ত করতে পাঁয়তারা করছে বিটিভি ও মন্ত্রণালয়ের অসৎ কর্মকর্তাদের একটি চক্র’ যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও অসত্য। প্রতিবেদকের বক্তব্য : প্রকাশিত প্রতিবেদনে প্রতিবেদকের নিজস্ব কোনো বক্তব্য নেই। প্রাপ্ত দালিলিক তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে। প্রতিবেদন তৈরির সময় বিভাগীয় পদোন্নতি কমিটির আহ্বায়ক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবা ফারজানার বক্তব্য নিতে তার সরকারি মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল করা হলে তিনি রিসিভ করেননি। একই নম্বরের হোয়াটসঅ্যাপে বক্তব্য চেয়ে খুদে বার্তা পাঠালেও তিনি জবাব দেননি। ১৬ মার্চ পদোন্নতি কমিটির সভা বাতিলের দাপ্তরিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে কমিটির আহ্বায়ক হিসাবে তিনি সেটা তার বক্তব্যে এ প্রতিবেদকের কাছে তুলে ধরতে পারতেন। তাছাড়া পদোন্নতি কমিটির সদস্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব মো. নূরুল হক ১৬ মার্চ মোবাইল ফোনে এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে ১৭ মার্চ সভার কথা স্বীকার করেন। তিনি বলেনÑ‘পদোন্নতির তালিকায় নাম থাকা কারও বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান থাকলে তা কমিটির সভায় উপস্থাপিত হলে আমার যা করণীয় তাই করব।’ এছাড়া সভা ডাকার পর একদিন আগে কী কারণে হঠাৎ তা বাতিল করা হয়েছে সে সম্পর্কে প্রতিবাদে কিছু বলা হয়নি।