মহাসড়কে রোজাদারদের অপেক্ষায় থাকেন মেয়র
অনলাইন নিউজ ডেক্স
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনীর অংশে মহিপালে অপেক্ষায় থাকেন পৌর মেয়র নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী। কখন আসবে গাড়ি, তারপর থামবে। গাড়ির জানালা দিয়ে বাড়িয়ে দেওয়া হাতে এক প্যাকেট ইফতার তুলে দিতে পারলেই পরম স্বস্তি।
প্রতিদিন রোজাদার যাত্রীদের জন্য অপেক্ষায় ফেনী পৌর মেয়র পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী।
ইফতারের এমন ব্যতিক্রমী আয়োজন শুধু এ বছরই নয়, মেয়র নির্বাচিত হওয়ার আগে থেকেই তার এ প্রয়াস। ১০ বছর ধরে প্রতি রোজায় মহাসড়কের রোজাদারদের জন্য থাকছে তার এ ব্যক্তিগত আয়োজন।
চলতি বছর যোগ হয়েছে ইফতারের পর চা-নাস্তার আয়োজন। মেয়রের মহিপালস্থ কার্যালয়ের সামনে একটি ঘরে করা হয়েছে এ আয়োজন। যে কেউ ইচ্ছে করলেই এখানে এসে চা-নাস্তা করে যেতে পারবেন। বিনামূল্যে করা যাবে চা-নাস্তা।
মেয়রের ব্যক্তিগত উদ্যোগে প্রতিদিন এখানে ৮\'শ থেকে হাজার রোজাদারের জন্য তৈরি করা হয় ইফতার। একইসঙ্গে পৌর প্রাঙ্গণে রিকশাচালক ও দিনমজুরদের জন্যও থাকে এমন আয়োজন। একইসঙ্গে তার এলাকা ও বিভিন্ন মসজিদে বিতরণ করা হয় এসব ইফতার।
রোজায় প্রতিদিন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনী ছয়লেন উড়াল সেতুর এক পাশে রোজাদারদের জন্য অপেক্ষা করেন মেয়রের স্বেচ্ছাসেবক টিম। সড়কে চলাচলরত বিভিন্ন গাড়ির চালক ও যাত্রীদের গাড়ি থামিয়ে প্রত্যেকের হাতে তুলে দেওয়া হয় ইফতার।
প্রতিদিন এখানেই বিতরণ হয় তিন শতাধিক প্যাকেট ইফতার। বাকি ইফতারের প্যাকেটগুলো বিতরণ হয় বিভিন্ন মসজিদ, এতিমখানা ও এলাকার অসহায়-গরিবদের মধ্যে।
মেয়র জানান, প্রথম রোজা থেকে শুরু হয়ে ইফতারের এ আয়োজন প্রতিবছরের মতো শেষ রোজা পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মেয়র নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী বলেন, রোজাদারদের ইফতার করানো সওয়াবের কাজ। সেই চিন্তা থেকেই ব্যক্তিগত উদ্যোগে এ ক্ষুদ্র আয়োজন। আমি চাই আমার এ আয়োজন দেখে সারাদেশে এমন আরও আয়োজন হোক। গাড়িতে চলাচলরত রোজাদারদের জন্য এক প্যাকেট ইফতার অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
তিনি বলেন, আমার ব্যক্তিগত কার্যালয়ের পাশেই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক। প্রতিদিন এ পথে অসংখ্য যানবাহন ও পথচারী চলাচল করে থাকে। মহাসড়কে রোজাদার গাড়িচালক ও পথচারীরা ইফতার করতে অসুবিধায় পড়েন। তাদের কথা চিন্তা করে বিগত কয়েক বছর ধরে ব্যক্তিগত উদ্যোগে ইফতারের আয়োজন করে আসছি।
যে কেউ চাইলে আমার কার্যালয়ের সামনে বসে ইফতার করতে পারবে। যারা নিতে চায় তাদের দেওয়া হচ্ছে প্যাকেট।
মেয়র বলেন, সমাজের সব বিত্তবানরা যদি নিজ নিজ অবস্থান থেকে সামর্থ্য অনুযায়ী এগিয়ে আসেন তাহলে কোনো রোজাদার ইফতারের সময় অভুক্ত থাকবে না।
স্থানীয়রা জানান, মেয়র হওয়ার আগে থেকেই তিনি মহাসড়কে যাতায়াতকারী রোজাদারদের ইফতার করিয়ে থাকেন। এছাড়া পৌর এলাকার কর্মহীন মানুষদের সাধ্যমতো সহযোগিতা করে যাচ্ছেন তিনি। শহরের সবকটি মসজিদের সামনে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করার জন্য পানির ট্যাংকের ব্যবস্থাও করেছেন মেয়র।
ইফতার বিতরণের দায়িত্বে থাকা স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মাঈন উদ্দিন সুমন বলেন, মেয়র নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী ভাইয়ের অর্থায়নে প্রতিদিন রোজাদার গাড়িচালক ও পথচারীদের মধ্যে ইফতারি বিতরণ করা হয়। সড়কে যাতায়াতকারীরা মেয়রের এ ইফতার পেয়ে অনেক উপকৃত হচ্ছেন।
মহাসড়কের এক ট্রাকচালক বলেন, মহাসড়কের পাশে বেশিরভাগ মানুষ ব্যবসায় মগ্ন থাকে। এক গ্লাস পানিও বিনামূল্যে পাওয়া যায় না। সেখানে ভিন্ন চিত্র ফেনীর মহিপালের এ জায়গায়। সম্পূর্ণ বিনামূল্যে এখানে রোজাদারদের ইফতার করানো হয়। এমন উদ্যোগের জন্য তিনি মেয়রের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
যাত্রীবাহী পরিবহণের একাধিক যাত্রীরা বলেন, এমন উদ্যোগ প্রশংসনীয়। যাত্রা অবস্থায় থাকা মানুষগুলো ইফতার নিয়ে অনেক সমস্যায় পড়েন। ফেনীর মেয়রের এমন উদ্যোগের কারণে সেসব মানুষগুলো উপকৃত হবেন।
ডোনেট বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।