মিয়ানমারে আতঙ্কে তরুণরা


মিয়ানমারে আতঙ্কে তরুণরা
মিয়ানমারে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর উত্থান ঠেকাতে দিন দিন আরও বেপরোয়া হয়ে উঠছে ক্ষমতাসীন জান্তা। বেসামরিক নাগরিকদের জোর করে সেনাবাহিনীতে যুক্ত করছে তারা। যাকেই পাচ্ছে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাচ্ছে। কখনো বাস স্টপ থেকে, কখনো আবার হানা দিচ্ছে বাড়িতে।এছাড়া বিভিন্ন পাবলিক স্থান থেকেও তরুণদের অপহরণ করছে জান্তা। যার জেরে আতঙ্কে দিন পার করছে তরুণরা। সেনাবাহিনীতে যোগদান এড়াতে দেশ ছাড়ছেন তারা। আলজাজিরা।বিদ্রোহীদের কাছে একের পর এক এলাকা হাতছাড়া হওয়ার পর চরম সেনা সংকটে পড়েছে মিয়ানমার জান্তা বাহিনী। এমন অবস্থায় চলতি বছরের জানুয়ারিতে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে মোকাবিলা করতে ব্যাপক নিয়োগের পরিকল্পনা ঘোষণা করে তারা।সেনাবাহিনীতে যোগদান বাধ্যতামূলক ঘোষণা করে জান্তা। ফলে দেশ ছেড়ে পালাচ্ছে হাজারো তরুণ। ২৯ বছর বয়সী অং-ও তাদেরই দলে। জান্তার ভয়ে স্থানীয় চোরাচালানকারীদের সাজানো একটি কাঠের নৌকায় করে পাড়ি জমান থাইল্যান্ডে।অং সম্প্রতি থাই-মিয়ানমার সীমান্তের কাছে একটি নিরাপদ আশ্রয় থেকে আল জাজিরাকে বলেছেন, ‘জান্তা পুরো দেশকে ধ্বংস করছে, তারা আমাদের জনগণকে, আমাদের বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা করছে। আমি খুনিদের অংশ হতে চাই না। এ কারণেই আমি সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে চাই না এবং আমি তাদের নিয়োগ আইনও মানি না।’গত বছরের মার্চ মাসে সেনা নিয়োগ এড়াতে মিয়ানমার থেকে পালিয়েছেন ২৪ বছর বয়সী কো কোও। তিনি থাইল্যান্ডের উত্তরাঞ্চল থেকে আল জাজিরাকে বলেছেন, ‘যুদ্ধক্ষেত্রে তাদের ঢালের মতো ব্যবহার করা হয়, কখনো কখনো বোমায় পা রাখাতে বলা হয়। তাদেরকে দাসের মতো ব্যবহার করা হয়। তাই কেউ সেনাবাহিনীতে যেতে চায় না।’কো কো বলেছেন, তার বাবা-মা সরকারের ইমিগ্রেশন ব্যুরোতে উচ্চপদস্থ এক পারিবারিক বন্ধুকে প্রায় ৩০০ ডলার দিয়েছিলেন যাতে তাকে ইয়াঙ্গুন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন কাউন্টারে আটকানো না হয় এবং সামরিক অভিযান এড়াতে পারে।তবে কো কো দেশ ছাড়তে সফল হলেও তার এক বন্ধু আটকা পড়ে যায়। কিন্তু তিনি সেনাবাহিনীতে কাজ করার পরিবর্তে আত্মহত্যা করেন বলে জানিয়েছেন কো কো।বিশ্লেষকরা আল জাজিরাকে বলেছেন, মার্চ মাসে নতুন নিয়োগ করা একটি দল যুক্ত হয়েছে। ১১তম এ দলটির যোগদানের ফলে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী তাদের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারে। জান্তার লক্ষ্য এক বছরে ৬০ হাজার নতুন সেনা নিয়োগ।তবে ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের মিয়ানমার বিষয়ক একজন সিনিয়র উপদেষ্টা রিচার্ড হর্সি বলেছেন, তরুণদের সেনাবাহিনীতে যোগদান করানো ক্রমশ কঠিন হয়ে উঠছে।গত বছর ঘোষণা করার প্রথম কয়েক মাসে কেউ কেউ স্বেচ্ছায় জান্তার দলে যোগ দিয়েছেন। তবে এখন পরিস্থিতি বদলে গেছে। অনেকে দলত্যাগ করছেন অথবা সুযোগ পেলেই পালিয়ে যাচ্ছেন।