রানা প্লাজার ধ্বংসস্তূপ থেকে রেশমা উদ্ধারের ১১ বছর পূর্ণ


সাভারের রানা প্লাজার ধ্বংসস্তূপ থেকে আলোচিত পোশাক শ্রমিক রেশমা উদ্ধারের ১১ বছর পূর্ণ হয়েছে শুক্রবার। ভবন ধসের ১৭তম দিনে জীবিত, অক্ষত অবস্থায় রেশমা আক্তারকে উদ্ধার করেছিলেন ধ্বংসস্তূপে কর্মরত উদ্ধার কর্মীরা। দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমে রেশমা উদ্ধারের ঘটনাটি তখন আলোচিত হয়। রেশমা ২০১৩ সালের ১ এপ্রিল সাভারের রানা প্লাজার তিনতলার একটি পোশাক কারখানায় অপারেটর হিসেবে কাজ শুরু করেছিলেন। বেতন ছিল পাঁচ হাজার টাকা। ২৪ এপ্রিল রানা প্লাজা ধসে পড়ে। সেনা ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদের শ্বাসরুদ্ধকর অভিযান শেষে ১০ মে বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে রেশমা উদ্ধার হয়েছিলেন। তাকে জীবিত উদ্ধার করার ঘটনাকে ‘আনন্দময় অর্জন’ বলে তখন উল্লেখ করেছিলেন উদ্ধার কর্মীরা। উদ্ধারের সময় রেশমার পরনের নতুন পোশাক, তার অক্ষত থাকাসহ নানান বিষয় নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। তখন উদ্ধারকারীদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল- রেশমার কাপড় ছিঁড়ে গিয়েছিল। যেখানে তিনি আটকা পড়েছিলেন, সেখানে একটি কাপড়ের দোকান ছিল। উদ্ধারের আগে ওই দোকান থেকে কাপড় সংগ্রহ করে তার গায়ে জড়িয়ে দেওয়া হয়। রেশমা সাংবাদিকদের জানান, তার হাত-পায়ের বিভিন্ন জায়গায় কেটে গিয়েছিল। তিনি সেখানে কত দিন আটকে ছিলেন, তাও তখন বুঝতে পারেননি। ঘুম ঘুম ভাব বা বেশিরভাগ সময় তিনি অচেতন ছিলেন। তিনি যেখানে আটকা পড়েছিলেন, সেখানে পানি ছিল। কিছু শুকনো খাবারও ছিল। তা খেয়েছেন কয়েক দিন। একসময় হাতড়ে একটি পাইপ পেয়েছিলেন। ছোট একটি ছিদ্র দিয়ে পাইপটি ঢুকিয়ে বাইরে থাকা উদ্ধার কর্মীদের তিনি জানান দিয়েছিলেন যে তিনি বেঁচে আছেন। রেশমাকে উদ্ধারের পর সাভারের সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এ ঘটনার পর উদ্ধারকর্মীদের অভিনন্দন জানিয়েছিলেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া। পরে রেশমাকে রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে পাবলিক এরিয়া অ্যাম্বাসেডর হিসেবে চাকরি দেওয়া হয়। তিনি এখনো সেখানেই কর্মরত রয়েছেন। রেশমা তার স্বামী আতাউর রহমানের সঙ্গে থাকছেন ভাটারার একটি ভাড়া বাসায়। তাদের আট বছর বয়সি মেয়ে রেদোয়ানা ইসলাম এলাকায় দাদির সঙ্গে থাকে। সে পড়ছে একটি মাদ্রাসায়। রেশমার গ্রামের বাড়ি দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলায়। রেশমা যখন একদম ছোট, তখন তার বাবা আনসার আলী মারা যান। মা জোবেদা খাতুন পরে আবার বিয়ে করেন। রেশমার দুই ভাই ও দুই বোন আছে। তিনি সবার ছোট।