রাস্তার বেহাল দশা ভোগান্তিতে হাজারো মানুষ
মোঃ সাইফুল ইসলাম, ব্যুরো প্রধান, মাগুরা
শালিখার বৈ-খোলা রাস্তাটির বেহাল অবস্থা, জনদুর্ভোগ চরমে
মাগুরার শালিখা উপজেলার শতখালী ইউনিয়নের বৈ-খোলা গ্রামের যাতায়াতের একমাত্র কাঁচা মাটির রাস্তাটি জনদুর্ভোগে পরিণত হয়েছে।
বর্ষা মৌসুমে রাস্তার বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। সামান্য বৃষ্টি হলেই হাঁটু সমান কাদা পানির সৃষ্টি হয়। যান চলাচল তো দূরের থাক হেঁটে চলায় দুষ্কর হয়ে পড়ে। এতে বিপাকে পড়ে এই এলাকার কয়েক হাজারো মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে কাঁচা রাস্তাটি পাকা না হওয়ায় ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন এলাকাবাসী।
সরে জমিনে গিয়ে দেখা যায়, রামকান্তপুর থেকে বৈ-খোলা গ্রামের ভিতর দিয়ে প্রায় তিন কিলোমিটার রাস্তা ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বিকল্প কোনো সড়কের ব্যবস্থা না থাকায় হাটু সমান কাদা মাড়িয়েই চলাচল করতে হয় স্কুল কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী, বয়ো বৃদ্ধ সহ অন্য সবাইকে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, শুকনো মৌসুমে ধুলাবালি গায়ে মেখে চলাচল করলেও বর্ষা মৌসুমে এ রাস্তায় কোন অ্যাম্বুলেন্স, মাইক্রোবাস, ভ্যান চলাচল করতে পারে না। মোটরসাইকেল, সাইকেল তো দূরে থাক পায়ে হেঁটে চলাচল করাও কষ্টসাধ্য ব্যাপার।
বৃষ্টির দিনে গ্রামের কেউ অসুস্থ হলে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য কোন যানবাহন, অ্যাম্বুলেন্স এ রাস্তার নাম শুনলে আসতে চায় না। অনেক সময় কেউ মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়লে কাঁধে করে কর্দমাক্ত রাস্তা পার করতে হয়।
শত শত স্থায়ী পরিবারের বসবাস বৈ-খোলা গ্রামটিতে। রয়েছে দুইটি জামে মসজিদ, একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। স্বাধীনতার ৫৪ বছর পার হলেও গ্রামের মাটির রাস্তায় ইটের সলিং কিংবা কার্পেটিং হয়নি। বৃষ্টির সময় থাকে হাঁটু কাদা, রেহাই পায়না এই এলাকা সহ অন্য গ্রামের মানুষ।
বৈখোলা গ্রামের আলাউদ্দিন বলেন, পাকিস্তান আমল থেকে আজ পর্যন্ত আমাদের গ্রামে কোন উন্নয়নের ছোঁয়া লাগে নাই। গ্রামের অনেকের অটোভ্যান, মটর সাইকেল, ইজিবাইক, নসিমন, করিমন গাড়ী আছে। যারা এ বাহন নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে। এসকল যান রেখে আসতে হয় অন্য গ্রামে। নাহলে রাস্তার পার্শ্বে পলিথিন কাগজ দিয়ে ঢেঁকে রাখতে হয়।
একই গ্রামের ইনসান আলী বলেন, বছরের ৬ থেকে ৭ মাস রাস্তায় কাঁদা পানি জমে থাকে। যার ফলে আমাদের ছেলে-মেয়েদের প্রাইমারির গণ্ডি পেরোলেও স্কুল এবং কলেজে পড়ালেখা আর হয় না। এজন্য আমাদের গ্রামে অশিক্ষিতর হার ও বাল্য বিবাহ অনেক বেশি।
বই খোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এর প্রধান শিক্ষক মিতা রানী বিশ্বাস বলেন, গ্রামে চলাচলের একমাত্র রাস্তা কাঁদা মাটি থাকার কারণে স্কুলের শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসতে চায় না। আমরা শিক্ষার্থীদের বাড়ি বাড়ি যেয়েও স্কুল মুখি করতে পারছিনা। তিনি আরো বলেন আমরা শিক্ষকরাই রাস্তায় কাঁদার জন্য স্কুলে আসতেই হিমশিম খেয়ে যায়।
শতখালী ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক সুমন মিয়া বলেন, বৈ-খোলা নামে একটি গ্রাম আছে তার জানা নাই। গ্রামবাসীদের ইউনিয়ন পরিষদে একটি আবেদন করার পরামর্শ দেন এবং বরাদ্দ সাপেক্ষে তিনি ব্যবস্থা নিবেন।
জানতে চাইলে শালিখা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোঃ বনি আমিন বলেন, নতুন প্রকল্পের তালিকায় বৈখোলা গ্রামের রাস্তাটির নাম দেওয়া আছে। আশা করি এই অর্থবছরে রাস্তাটি হয়ে যাবে।
এলাকাবাসী অবহেলিত কাঁচা রাস্তাটিতে ইটের সোলিং অথবা কার্পেটিং করে চলাচলের উপযোগীর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সহ সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
