শেখ হাসিনার পলায়ন ও ড. ইউনুসের ক্ষমতায়ন নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমের গালগল্প


শেখ হাসিনার পলায়ন ও ড. ইউনুসের ক্ষমতায়ন নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমের গালগল্প
বিক্ষোভের মুখে পড়ে বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান। এরপর বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনুস।এই ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমস-এর বরাতে ভারতীয় মিডিয়াগুলোর রিপোর্টে বলা হচ্ছে, শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পরই রাজনৈতিক শূন্যতা তৈরি হয় এবং সেই সুযোগেই আন্দোলনকারীদের দাবিতে ড. ইউনুসকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান করা হয়।সম্প্রতি সুইজারল্যান্ডের দাভোসে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের সম্মেলনে অংশগ্রহণকালে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমস-এর একটি পডকাস্টে এই অভিজ্ঞতার কথা জানান ড. ইউনুস। তিনি বলেন, সে সময় তিনি প্যারিসের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। হঠাৎ ঢাকায় আন্দোলনরত ছাত্রনেতাদের কাছ থেকে তাঁর কাছে ফোন আসে। তাঁকে জানানো হয়, ‘‘আপনাকে সরকারের প্রধান হতে হবে।’’প্রথমে বিষয়টি স্বাভাবিকভাবে না নিলেও ছাত্রনেতাদের অনুরোধে শেষ পর্যন্ত রাজি হন ড. ইউনুস।তিনি বলেন, ‘‘আমি তখন অস্ত্রোপচারের জন্য হাসপাতালে ছিলাম। বাংলাদেশে তখনকার পরিস্থিতি সম্পর্কে আমি সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে অবগত ছিলাম। কিন্তু হঠাৎ ছাত্রনেতারা আমাকে ফোন করে জানায়, শেখ হাসিনা চলে গেছেন, এখন আমাদের নতুন সরকার গঠন করতে হবে এবং আমাকে নেতৃত্ব দিতে হবে।’’তিনি আরও জানান, প্রথমে তিনি এ দায়িত্ব নিতে চাননি এবং ছাত্রদের বলেছিলেন, ‘‘বাংলাদেশে অনেক দক্ষ নেতা রয়েছেন, তাঁদের মধ্যে কাউকে খুঁজে নাও।’’ কিন্তু ছাত্রনেতারা জানান, তাঁদের হাতে পর্যাপ্ত সময় নেই এবং তাঁর নেতৃত্ব প্রয়োজন।তিনি আরও বলেন, ‘‘আমি তাদের একদিন সময় নিতে বলেছিলাম বিকল্প নেতা খোঁজার জন্য। কিন্তু ২৪ ঘণ্টা পর তারা আবার যোগাযোগ করে জানায়, তাঁরা আর কাউকে খুঁজে পাননি।’’অবশেষে, ছাত্রনেতাদের আন্দোলন ও পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনা করে তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানের দায়িত্ব গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেন। তাঁর ভাষায়, ‘‘তোমরা রাজপথে জীবন দিয়েছ, রক্ত ঝরিয়েছে, এখন আমারও কিছু করা উচিত। সরকারের সংস্কার প্রয়োজন, আমি রাজি।’’ড. ইউনুসের এই সিদ্ধান্তের কিছুক্ষণ পরই আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে খবর ছড়িয়ে পড়ে যে তিনি বাংলাদেশের নতুন প্রধানমন্ত্রী।তিনি বলেন, ‘‘হাসপাতালের একজন নার্স এসে আমাকে ফুলের তোড়া দিলেন এবং বললেন, ‘আপনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী!’ আমি বিস্মিত হয়ে জানতে চাইলাম, তিনি এটি কোথা থেকে জানলেন। তখন তিনি বললেন, ‘এটি এখন সব টেলিভিশন ও সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত হচ্ছে।’’সূত্র: নিউজ ১৮ বাংলা