স্টারলিংককে ‘এক্সট্রা খাতির’
অনলাইন নিউজ ডেক্স

দেশের জনগণকে দ্রুতগতির ইন্টারনেট সেবা দিতে চায় সরকার। মানসম্পন্ন ইন্টারনেট নিশ্চিতে স্যাটেলাইটভিত্তিক ইন্টারনেট সেবা স্টারলিংককে বাংলাদেশে ব্যবসা পরিচালনার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। স্টারলিংককে ব্যবসার সুযোগ তৈরি করে দিতে আইনগত কাঠামো তৈরির পাশাপাশি সব ধরনের লাইসেন্স খুব অল্প সময়ে দেওয়া হয়েছে। এমনকি গাইডলাইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনার অনুমোদন পেয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। বাংলাদেশে ব্যবসা পরিচালনার জন্য সবক্ষেত্রেই এমন ‘এক্সট্রা খাতির’ পাচ্ছে স্টারলিংক।গত ২০ মে স্যাটেলাইটভিত্তিক ইন্টারনেট সেবা ‘স্টারলিংক’ আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশে যাত্রা শুরু করেছে। তিন মাস পরীক্ষামূলক বাণিজ্যিক কার্যক্রম চালাবে ইলন মাস্কের স্যাটেলাইটের মাধ্যমে ইন্টারনেট সেবাদাতা কোম্পানিটি। প্রত্যাশিত সময়ের মধ্যে বাংলাদেশে স্টারলিংক আনুষ্ঠানিকভাবে সেবা শুরু করাকে নিজেদের সাফল্য হিসেবে দেখছে অন্তর্বর্তী সরকার। শুধু সাফল্য নয়, স্টারলিংক নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের কর্তাব্যক্তিদের মধ্যে আগ্রহ ও উচ্ছ্বাস দেখা গেছে।বাংলাদেশে বাণিজ্যিক সেবা শুরুর আগে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) থেকে স্টারলিংককে এনজিএসও (নন-জিওস্টেশনারি অরবিট) লাইসেন্স নিতে হয়েছে। আর এই অনুমোদনের ক্ষেত্রে ‘এনজিএসও’ গাইডলাইনের ব্যত্যয় ঘটানো হয়েছে। গাইডলাইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে স্টারলিংককে বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনার অনুমোদন দিয়েছে বিটিআরসি।এনজিএসও গাইডলাইন অনুযায়ী, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ইন্টারনেট সেবা পরিচালনার জন্য লাইসেন্সধারীর অবশ্যই ন্যূনতম একটি গেটওয়ে থাকতে হবে। কিন্তু বাংলাদেশে স্টারলিংকের কোনো গেটওয়ে নেই, এমনকি কোনো গ্রাউন্ড স্টেশনও স্থাপন করা হয়নি। তারপরও সেবা পরিচালনার অনুমোদন পেয়েছে প্রতিষ্ঠানটি, যেটাকে ‘এক্সট্রা খাতির’ বা বাড়তি খাতির হিসেবে দেখছেন প্রযুক্তি-সংশ্লিষ্টরা।‘গেটওয়ে’ হলো এমন একটি নেটওয়ার্ক ইন্টারফেস স্যাটেলাইট, যা কোর ইন্টারনেট অবকাঠামোর মধ্যে তথ্য আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এনজিএসও স্যাটেলাইটগুলো সাধারণত দেশের স্থানীয় গেটওয়ের মাধ্যমে ইন্টারনেট সিস্টেমের সঙ্গে সংযুক্ত থাকে। স্টারলিংকের ক্ষেত্রে এ গেটওয়ে মূলত তার গ্রাউন্ড অ্যান্টেনার মাধ্যমে গড়ে ওঠে, যা সরাসরি দেশের আন্তর্জাতিক ব্যান্ডউইথ সরবরাহকারীদের সঙ্গে যুক্ত থাকে। স্যাটেলাইট থেকে প্রাপ্ত ডাটা এই গেটওয়ের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী সংযুক্ত হয়।বিটিআরসির এনজিএসও গাইডলাইনে বলা হয়েছে, এনজিএসও লাইসেন্সধারীকে তার সেবা শুরুর আগে বাংলাদেশের ভূখণ্ডের মধ্যে কমপক্ষে একটি গেটওয়ে সিস্টেম স্থাপন করতে হবে। বাংলাদেশের ভৌগোলিক সীমানার মধ্যে থেকে স্থাপিত এবং ব্যবহৃত যে কোনো ব্যবহারকারী টার্মিনালকে এই স্থানীয় গেটওয়ে দিয়ে সেবা প্রদান করতে হবে।এ নির্দেশিকা অনুসারে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে যে কোনো পরিষেবা প্রদানের জন্য এই টার্মিনালের সব ট্রাফিক স্থানীয় গেটওয়ে দিয়ে পরিচালনা করতে হবে। আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট ডাটা ট্রাফিক পরিচালনার জন্য আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট গেটওয়ের (আন্তর্জাতিক) সঙ্গে এনজিএসও গেটওয়ে সংযুক্ত থাকতে হবে। গাইডলাইনে ‘গেটওয়ে’ থাকার বাধ্যবাধকতা থাকলেও স্টারলিংকের বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য এটা আমলে নেওয়া হয়নি।এ ছাড়া নিরাপত্তার স্বার্থে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের আওতাধীন ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারও (এনটিএমসি) শুধু বাংলাদেশে স্থাপিত গেটওয়ের মাধ্যমে স্টারলিংকের ইন্টারনেট সেবা নিশ্চিত করতে বলেছিল। বিটিআরসিকে দেওয়া এক চিঠিতে এনটিএমসি জানায়, স্টারলিংকের সেবা চালুর ক্ষেত্রে গ্রাহকরা যাতে শুধু বাংলাদেশে স্থাপিত গেটওয়ের মাধ্যমে ইন্টারনেট সেবা পায়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে।অর্থাৎ এনটিএমসির নির্দেশনা লঙ্ঘন এবং গেটওয়ে না থাকার পরও স্টারলিংককে বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে স্টারলিংককে বিশেষ সুবিধা দিতে এবং অন্তর্বর্তী সরকারের আগ্রহকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে বলে মনে করেন খাতসংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, শীর্ষ ধনীর ইলন মাস্কের কোম্পানিকে বাংলাদেশে ব্যবসার পরিবেশ তৈরিতে প্রতিটি কাজই সরকারের মধ্যে অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন করার একটা তাড়া দেখা গেছে।জানা গেছে, গত ১৯ মে বিটিআরসির কমিশন সভায় গেটওয়ে ছাড়া স্টারলিংকের পরীক্ষামূলক বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনার অনুমোদনের সিদ্ধান্ত হয়। গ্রাউন্ড স্টেশন ছাড়াই ‘কমার্শিয়াল টেস্ট’ পরিচালনার জন্য স্টারলিংকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ অনুমোদনের সিদ্ধান্ত নেয় বিটিআরসি। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ৯০ দিনের জন্য ‘কমার্শিয়াল টেস্ট’ পরিচালনার অনুমোদন পেয়েছে স্টারলিংক। এ ক্ষেত্রে ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা পরিপালন করা হয়েছে।কমিশন সভা সূত্রে জানা গেছে, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী স্টারলিংকের কার্যক্রম পরিচালনার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ‘কমার্শিয়াল টেস্ট’ পরিচালনা বিষয়টি গাইডলাইনে উল্লেখ না থাকায় কিছু শর্ত জুড়ে দিয়ে সর্বোচ্চ ৯০ দিনের পরীক্ষামূলক কার্যক্রম পরিচালনার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।এর আগে ১৩ মে’র মধ্যে গ্রাউন্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার স্থাপন ব্যতীত ৯০ দিনের ‘কমার্শিয়াল টেস্ট’ পরিচালনার জন্য প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়) ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বরাবর আবেদন করে স্টারলিংক। এ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বিটিআরসিকে নির্দেশনা দেন তিনি, ওই নির্দেশনা অনুযায়ী ভূতাপেক্ষ অনুমোদনের সিদ্ধান্ত নেয় বিটিআরসি।এ অনুমোদন পেয়েই পরীক্ষামূলক বাণিজ্যিক সেবা চালুর ঘোষণা দেয় স্টারলিংক। গত ২০ মে ঘোষণা দিয়ে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ডিভাইস বিক্রি শুরু করেছে কোম্পানিটি। এরই মধ্যে কয়েকটি ডিভাইস বিক্রির অর্ডারও পেয়েছে বলে জানা গেছে।স্টারলিংককে তিন মাসের জন্য কমার্শিয়াল টেস্ট পরিচালনার অনুমতিতে বিটিআরসির শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে, আইনগত হস্তক্ষেপের সুবিধা নিশ্চিত করতে এপিআই কানেকটিভিটির মাধ্যমে তথ্য সরবরাহ ব্যবস্থা থাকতে হবে। তবে বাস্তবে সরকার কিংবা বিটিআরসির পক্ষে এই এপিআই ব্যবহার করে ডাটা মনিটরিং বা হস্তক্ষেপ করার সক্ষমতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।প্রযুক্তি-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গেটওয়ে ছাড়াই বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনার অনুমোদন দেওয়া সরাসরি এনজিএসও গাইডলাইনের ব্যত্যয়। কারণ গেটওয়ের সঙ্গে যুক্ত না হলে তো লাইসেন্সের শর্তই পূরণ হয় না। যেহেতু বাংলাদেশে এখনো স্টারলিংকের নিজস্ব গেটওয়ে স্থাপন করা হয়নি। সেই হিসেবে ব্যবহারকারীদের সব ইন্টারনেট ট্রাফিক যাবে বাংলাদেশের বাইরের কোনো দেশের গেটওয়ের মাধ্যমে। এটা নিরাপত্তা ঝুঁকিও তৈরি করতে পারে।এ ছাড়া বিটিআরসি যে এপিআই কানেকটিভিটির কথা বলছে, এটাও প্রশ্নবিদ্ধ। কারণ স্টারলিংকের তো বাংলাদেশে কিছু নেই। স্টারলিংক যদি এই এপিআই সরবরাহ করে থাকে, তাহলে শুধু তাদের ওপর নির্ভর করে দেশের নিরাপত্তা-সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া কতটা যুক্তিযুক্ত, সেটা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। বাংলাদেশে স্টারলিংকের গেটওয়ে না থাকার কারণে ডাটা প্রথমে বিদেশে চলে যাবে এবং তা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভবপর নয়। এরপরও বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনার অনুমতি দিয়ে স্টারলিংককে বিশেষ সুবিধা দেওয়া হয়েছে।তবে বিটিআরসি বলছে, গেটওয়ে না থাকলে বড় ধরনের নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি হবে না। স্টারলিংক যেহেতু এখনো অবকাঠামো স্থাপন করতে পারেনি, তাই তাদের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। কমার্শিয়াল টেস্ট রানের জন্য ৯০ দিনের সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে গাইডলাইন অনুযায়ী গেটওয়েসহ তাদের প্রয়োজনীয় অবকাঠামো স্থাপন করতে হবে। এ সুযোগ দেওয়ায় গাইডলাইনের ব্যত্যয় ঘটেনি, বরং তাদের কিছুটা রিল্যাক্সেশন (শিথিলতা) দেওয়া হয়েছে।এ বিষয়ে বিটিআরসির অফিসিয়াল বক্তব্য পাওয়া যায়নি। সংস্থাটির চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কর্মকর্তার সঙ্গে গত কয়েক দিনে দফায় দফায় যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়, কার্যালয়ে গিয়ে সাক্ষাৎ না পেয়ে জনসংযোগ কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রশ্ন লিখে দিলেও কোনো উত্তর মেলেনি।আইআইজি অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি মোহাম্মদ আমিনুল হাকিম বলেন, ‘যেহেতু সরকার অনুমোদন দিয়েছে এটা নিয়ে আমাদের বলার কিছু নেই। তবে দেশীয় আইআইজি গেটওয়ের মধ্য দিয়ে গেলে ল এনফোর্সমেন্ট এজেন্সির শতভাগ রিকয়েরমেন্ট ফুলফিল হতো, তবে এ তিন মাসে স্টারলিংক যাতে বিটিআরসির সব ধরনের কমপ্লায়েন্স মেনেই ব্যবসা করে সেটা নিশ্চিত করতে হবে; যাতে দ্রুত দেশের অভ্যন্তরে গেটওয়ে স্থাপন ও আইনি নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা যায়। সময়ও যেন আর বৃদ্ধি না করা হয়। এভাবে সময় বৃদ্ধি করা হলে এটা রেগুলার প্র্যাকটিসের মধ্যে চলে আসবে, তখন ইন্ডাস্ট্রিজের অন্যরা সময় বাড়ানোর আবেদন করলে বিটিআরসি অনুমোদন দিতে বাধ্য হবে, কারণ এটা একটা উদাহরণ সেট হয়ে গেছে।’এনজিএসও নীতিমালা মানার নির্দেশনা ছিল প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয়ের: এনজিএসও নীতিমালা মেনেই স্টারলিংকের সেবা দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছিল প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়। গত ২৫ মার্চ প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয় থেকে জানানো হয়, পরীক্ষামূলক সম্প্রচারে স্টারলিংক নিজস্ব স্যাটেলাইট ব্রডব্যান্ড গেটওয়ে ব্যবহার করলেও বাংলাদেশে বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করার সময় প্রতিষ্ঠানটিকে স্থানীয় ব্রডব্যান্ড গেটওয়ে বা আইআইজি ব্যবহার করতে হবে। আরও বলা হয়, এনজিএসও নীতিমালা মেনেই প্রতিষ্ঠানটিকে এ সেবা দিতে হবে। প্রধান উপদেষ্টার অনুমোদন নিয়ে ২৯ এপ্রিল স্টারলিংকের কাছে এনজিএসও লাইসেন্স হস্তান্তরের সময়ও বলা হয়, বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য দেশের অভ্যন্তরে গ্রাউন্ড স্টেশন এবং গেটওয়ের প্রয়োজন হবে।লাইসেন্স দিতে ‘তাড়াহুড়া’ এবং ‘অতি প্রচার’: বাংলাদেশে কার্যক্রম শুরুর জন্য মার্কিন এনজিএসও সেবাদাতা স্টারলিংককে সব ধরনের লাইসেন্স দিতে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর মধ্যে ছিল তাড়াহুড়া। আবেদনের খুব অল্প সময়ের মধ্যে দেওয়া হয়েছে লাইসেন্স। গত ২৯ মার্চ প্রথম বাংলাদেশে ব্যবসা পরিচালনার জন্য লাইসেন্স দেয় বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)।এরপর ৭ এপ্রিল এনজিএসও গাইডলাইনসের অধীনে লাইসেন্সের আবেদন করলে তা ইস্যুর জন্য ২১ এপ্রিল বিটিআরসির ২৯৪তম কমিশন সভায় নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়। এরপরই প্রতিষ্ঠানটিকে লাইসেন্স দেওয়ার সুপারিশ করা হয়, যা ছিল বিটিআরসির ইতিহাসে দ্রুততম সময়ে দেওয়া সুপারিশ। এর আগে বিটিআরসি থেকে এত দ্রুত কোনো লাইসেন্স দেওয়ার বিষয়ে সুপারিশ করা হয়নি।প্রধান উপদেষ্টার অনুমোদন নিয়ে ২৯ এপ্রিল স্টারলিংকের কাছে এনজিএসও লাইসেন্স হস্তান্তর করা হয়। লাইসেন্স পাওয়ার এক মাসের মধ্যেই ২০ মে ভোরে নিজেদের এক্স হ্যান্ডেলে বাংলাদেশের জন্য ইন্টারনেটের দুটি প্যাকেজ ঘোষণা করে স্টারলিংক। এর কিছুক্ষণ পর প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বিষয়টি জানিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দেন।এর আগে ৯ এপ্রিল বাংলাদেশে পরীক্ষামূলক সম্প্রচার শুরু করে স্টারলিংক। পরীক্ষামূলক সম্প্রচারের বিষয়টি গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে গুরুত্বসহকারে প্রচার করা হয়। সরকারের পক্ষ থেকেও আগ্রহ উচ্ছ্বাস দেখা যায়। এ ছাড়া প্রতিটি লাইসেন্স প্রাপ্তিতে সরকারের পক্ষ থেকে আয়োজন করে প্রচার করা হয় এবং কাঙ্ক্ষিত সময়ের মধ্যে চালু হওয়ায় নিজেদের সাফল্য হিসেবেও উচ্ছ্বাস প্রকাশ করা হয়।স্টারলিংকের বাণিজ্যিক যাত্রা শুরুর পর প্রধান উপদেষ্টার প্রেস অফিসের ডাকা সংবাদ সম্মেলনে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, স্টারলিংক বাংলাদেশে যাত্রা শুরু করেছে, এটা সাফল্যের নিদর্শন। ৯০ দিনের মধ্যে বাংলাদেশে একটা এনজিএসও গাইডলাইন তৈরি, লাইসেন্স প্রদান এবং কমার্শিয়াল যাত্রা শুরু হয়েছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে এ ধরনের টেলিকমিউনিকেশন লাইসেন্সের রোল আউটের ঘটনা প্রথম ও অনন্য।বাংলাদেশে স্টারলিংকের যাত্রা: অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস গত ১৩ ফেব্রুয়ারি ওয়ার্ল্ড গভর্নমেন্টস সামিটে অংশ নিতে দুবাই সফরে গিয়ে স্টারলিংক প্রতিষ্ঠাতা ইলন মাস্কের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন। বাংলাদেশে স্পেসএক্সের স্টারলিংক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবা চালুর বিষয়ে তাদের মধ্যে আলোচনা হয়। তখন প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯ ফেব্রুয়ারি মাস্ককে চিঠি দিয়ে বাংলাদেশে আসার আমন্ত্রণ জানান অধ্যাপক ইউনূস।
