শীতকালে সিওপিডি রোগীদের ঝুঁকি, প্রতিরোধ ও ব্যবস্থাপনা


শীতকালে সিওপিডি রোগীদের ঝুঁকি, প্রতিরোধ ও ব্যবস্থাপনা
সিওপিডি (ক্রনিক অবস্ট্রাক্টিভ পালমোনারি ডিজিজ) হলো দীর্ঘমেয়াদি শ্বাসকষ্টজনিত রোগ, যা ফুসফুসের ক্ষতি এবং শ্বাসনালির প্রদাহের অন্যতম কারণ। বাংলাদেশে নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দেশের বহু এলাকায় শৈত্যপ্রবাহ, শুষ্ক বাতাস ও ধুলাবালির পরিমাণ বেশি থাকে। তাই এ সময় দেশের সিওপিডি রোগীদের জন্য সংবেদনশীল। শীতকালীন সিওপিডির উপসর্গ শীতকালে বাংলাদেশে সিওপিডি রোগীদের উপসর্গ উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ে। কারণ এ সময় দেশে স্থানীয়ভাবে ইটভাটা, যানবাহনের ধোঁয়া, ধুলাময় রাস্তা, কুয়াশা এবং শ্বাসযন্ত্রের ভাইরাস সংক্রমণ সব মিলিয়ে সিওপিডি রোগীদের সমস্যা হঠাৎ বেড়ে যায়। শীতকালে দেশজুড়ে বাতাসে পিএম ২.৫ ও পিএম ১০ কণার মাত্রা বছরের অন্যান্য সময়ের তুলনায় ৩ থেকে ৪ গুণ বাড়ে। দেশে শীতকালে সিওপিডি রোগীরা সাধারণত সকালে বেশি কাশি, শ্বাসকষ্ট, অতিরিক্ত বা ঘন কফ, কফের রং পরিবর্তন, বুক ভারী লাগা, শোঁ শোঁ শব্দ, সামান্য হাঁটলেই হাঁপ ধরার মতো সমস্যার মুখোমুখি হন। শীতকালে সিওপিডি রোগীদের হাসপাতালে ভর্তির হার প্রায় দ্বিগুণ হয়। করণীয় সিওপিডি রোগীদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো ধুলা ও দূষণ থেকে সুরক্ষা নেওয়া, বাইরে বের হলে এন-৯৫ মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। ভোর ও গভীর রাতে বাইরে যাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। ধুলাময় রাস্তা ও নির্মাণাধীন এলাকাগুলো এড়িয়ে চলা, একই সঙ্গে শরীর গরম রাখতে মাফলার, টুপি ও মোজা ব্যবহার করা এবং ঠান্ডা বাতাস সরাসরি নাক-মুখে লাগতে না দেওয়া। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী বার্ষিক ফ্লু ভ্যাকসিন ও নিউমোকক্কাল ভ্যাকসিন গ্রহণ করা এবং ইনহেলার সঠিকভাবে ব্যবহার করতে স্পেসার ব্যবহার করা। কখন চিকিৎসা নিতে হবে সিওপিডি রোগীর ক্ষেত্রে অবশ্যই হাসপাতালে যেতে হবে, যদি কাশি হঠাৎ বেড়ে যায়; কফের রং হলুদ/সবুজ/বাদামি হয়; শ্বাস নিতে স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি কষ্ট হয়; বুকে শোঁ শোঁ বা হুইজিং শব্দ বাড়ে; ওষুধ বা ইনহেলার আগের চেয়ে বেশি গ্রহণ করা; জ্বর ১ থেকে ২ দিনের বেশি স্থায়ী হলে; রাতে ঘুমাতে সমস্যা হলে; অস্বাভাবিক ক্লান্তি বা মাথা ঘোরা অনুভব হলে। ডা. আফরীন জাহান সহকারী অধ্যাপক, পাবলিক হেলথ বিভাগ আনোয়ার খান মডার্ন বিশ্ববিদ্যালয়