মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সাম্যের বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়


মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় স্বাধীনতাবিরোধী ও সাম্প্রদায়িক জঙ্গিবাদী অপশক্তিকে রুখে দিয়ে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সাম্যের মানবিক বাংলাদেশ গড়ার দৃঢ় প্রত্যয়ে রোববার মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপিত হয়েছে। স্বাধীনতার ৫২তম বার্ষিকীতে ঢাকাসহ সারাদেশে সকল কর্মসূচিতে স্বাধীনতা ও মুক্তির জন্য জীবন উৎসর্গকারী জাতির সূর্যসন্তান বীর শহীদদের প্রতি সুগভীর শ্রদ্ধা জানিয়েছে গোটা জাতি। লাখো কোটি কণ্ঠে উচ্চারিত হয়েছে দুর্নীতি-সন্ত্রাস ও ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের উন্নত, সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়ে তোলার সুদীপ্ত শপথ। দিনটি ছিল সরকারি ছুটি। প্রত্যুষে রাজধানীর তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দর এলাকাসহ সারাদেশে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সব সরকারি-বেসরকারি ভবনশীর্ষে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ছাড়াও ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন শহরের প্রধান সড়ক ও সড়কদ্বীপকে জাতীয় ও রঙিন পতাকায় সজ্জিত করা হয়। স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের মূল আয়োজন সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনকে ঘিরে লাখো মানুষের জনস্রোতে মিলন মেলায় পরিণত হয়েছিল। লাল-সবুজ পোশাকে জাতীয় পতাকা হাতে সমবেত হয়েছিলেন সব বয়সের এবং নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। অগণিত শহীদের স্মৃতের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পুষ্পস্তবক ও শ্রদ্ধাঞ্জলি দিতে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন তাঁরা। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের স্মরণে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। ভোর ৫টা ৫৭ মিনিটে সূর্যোদয়ের ক্ষণে জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শহীদ বেদীতে প্রথমে শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি। পরপরই শ্রদ্ধা নিবেদন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর সেখানে এক মিনিট নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন তাঁরা। সশস্ত্র বাহিনীর সুসজ্জিত একটি দল রাষ্ট্রীয় অভিবাদন জানায় এবং বিউগলে বেজে ওঠে করুণ সুর। আর শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণ ত্যাগ করার আগে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী পরিদর্শন বইয়ে স্বাক্ষর করেন। ধানমণ্ডির ৩২ নম্বর বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানান। ছবি- ফোকাস বাংলা। পরে আওয়ামী লীগ সভাপতি হিসেবে দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে নিয়ে আরেকবার শ্রদ্ধা জানান শেখ হাসিনা। তাঁর সঙ্গে ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, শাজাহান খান, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, মাহবুব উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, এস এম কামাল হোসেন, মির্জা আজম, অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক প্রকৌশলী আবদুস সবুর, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক জাহানারা বেগম, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য অ্যাডভোকেট সানজিদা খানম প্রমুখ। স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের মূল আয়োজন সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনকে ঘিরে লাখো মানুষের জনস্রোতে মিলন মেলায় পরিণত হয়েছিল। এরপর শহীদ বেদীতে শ্রদ্ধা জানান সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এবং প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের পক্ষ থেকে মাহবুব উল আলম হানিফের নেতৃত্বে শ্রদ্ধা জানানো হয়। এরপর ফুল দেন ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু এবং সংসদের হুইপরা। পরে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের নেতৃত্বে বিভিন্ন কূটনৈতিক মিশন এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূতরা শহীদ বেদীতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালও শ্রদ্ধা জানান স্মৃতিসৌধে। শহীদ বেদীতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও বীরশ্রেষ্ঠ পরিবারের সন্তানরা। গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয় স্মৃতিসৌধ। এ সময় জনতার ঢল নামে সেখানে। তাঁদের কণ্ঠে উঠে আসে একাত্তরের অগ্নিঝরা দিনগুলোর স্লোগান। বিভিন্ন সংগঠনের পাশাপাশি দলে দলে ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান সরকারি, বেসরকারি, আধা-সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সাধারণ মানুষ। ফুলে ফুলে ছেয়ে যায় স্মৃতিসৌধের বেদী। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, স্বাধীনতার শত্রুরা সাম্প্রদায়িকতা-জঙ্গিবাদ- এমন নানা পোশাকে স্বাধীনতাকে চ্যালেঞ্জ করে। তাই এই অপশক্তিকে পরাস্ত্র হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ সোনার বাংলা হওয়ার পথে রয়েছে। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার এখন অন্যতম অঙ্গীকার। সকালে দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে শ্রদ্ধা জানান বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, স্বাধীনতার ৫১ বছর পরও গণতন্ত্রের জন্য প্রাণ দিতে হচ্ছে, লড়াই-সংগ্রাম করতে হচ্ছে। মানুষের ভোট ও কথা বলার অধিকার হারিয়ে গেছে। তাই আমরা দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য সংগ্রাম করছি। এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, নজরুল ইসলাম খান, ড. আবদুল মঈন খান, কেন্দ্রীয় নেতা আমান উল্লাহ আমান, হাবিব-উন-নবী খান সোহেল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সকালে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতারের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় নেতারা। এ সময় হাসানুল হক ইনু বলেন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের যে চেতনা, সে চেতনার পথে বাংলাদেশ টিকে আছে, টিকে থাকবে। আমরা সাংবিধানিক পথে এবং রাজনৈতিকভাবে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাব। বাংলাদেশ জাসদের সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়া শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, স্বাধীনতার অর্ধশতক পর দেশের জনগণ সবসময় ভালো থাকার জন্য সংগ্রাম করবে। গণতন্ত্র ও ন্যায়নীতির অপূর্ণতা পূরণ করতে সংগ্রাম করবে। মহান স্বাধীনতা দিবসে এটাই আমাদের প্রত্যাশা। বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হাসান প্রিন্স বলেন, স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরে দেশে অর্থনৈতিক অবস্থার মতো গণতন্ত্রহীনতা, সাম্প্রদায়িকতা ও লুটপাটতন্ত্র জেঁকে বসেছে। তাই আমাদের নতুন করে শপথ নিতে হবে এসবের বিরুদ্ধে সংগ্রাম গড়ে তোলার। গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে দেশের শাসনব্যবস্থা বদলাতে হবে, এটিকে গণতান্ত্রিক করতে হবে। আরও শ্রদ্ধা জানিয়েছে জাতীয় পার্টি, ওয়ার্কার্স পার্টি, বাম গণতান্ত্রিক জোট, বাসদ, গণফোরাম, বিকল্পধারা বাংলাদেশ, গণতন্ত্র মঞ্চ, ন্যাপ ভাসানী, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণঅধিকার পরিষদ, বীরশ্রেষ্ঠ পরিবারবর্গ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ পুলিশ, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তর ও দক্ষিণ, মহিলা আওয়ামী লীগ, জাতীয় শ্রমিক লীগ, কৃষক লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, যুব মহিলা লীগ, ছাত্রলীগ, তাঁতী লীগ, মৎস্যজীবী লীগ, বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ, মহিলা শ্রমিক লীগ, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, মহিলা পরিষদ, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ, খেলাঘর, জাতীয় আদিবাসী পরিষদ, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, আওয়ামী মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগ, মুক্তিযোদ্ধা জনতা লীগ, বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগ, বঙ্গবন্ধু আইন পরিষদ, আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তানসহ বিভিন্ন দল ও সংগঠন। জাতির পিতার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন: দিনটি উপলক্ষে রাজধানীর ধানমণ্ডির ৩২ নম্বর বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও পেশাজীবী দল ও সংগঠন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানিয়েছে। এদিন ভোর থেকেই বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মী ও নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ বঙ্গবন্ধু ভবনের পূর্ব ও পশ্চিম প্রান্তের সড়কে জমায়েত হতে থাকেন। বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে উপস্থিত হাজারো জনতার ‘জয় বাংলা’ ‘জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগানে পুরো এলাকা মুখরিত হয়ে ওঠে। ‘স্বাধীনতার অপর নাম শেখ মুজিবুর রহমান’, ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায় রাজাকারের ঠাঁই নাই’ স্লোগানে পুরো এলাকা প্রকম্পিত হয়ে ওঠে। এ সময় বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে ও আশপাশের সড়কগুলোতে উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়। সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে তাঁর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময় সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন তিনি। সেনাবাহিনীর একটি সুসজ্জিত চৌকস দল অভিবাদন জানায়। পরে আওয়ামী লীগ সভাপতি হিসেবে শেখ হাসিনা দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে নিয়ে দলের পক্ষে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে আরেকবার পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন। পরে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে প্রবেশ করেন। সেখানে কিছু সময় কাটান তিনি। প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু ভবন ত্যাগ করার পর বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের নেতারা এবং সর্বস্তরের নেতারা জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানান। আরও আয়োজন: স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে দেশের শান্তি ও অগ্রগতি কামনা করে বাদ জোহর বায়তুল মোকাররম মসজিদসহ সব মসজিদে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরসহ অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়। চট্টগ্রাম, খুলনা, মোংলা ও পায়রা বন্দর এবং ঢাকার সদরঘাট, নারায়ণগঞ্জের পাগলা, বরিশাল ও চাঁদপুর বিআইডব্লিউটিএ ঘাটে বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও কোস্ট গার্ডের জাহাজগুলো সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত জনসাধারণের পরিদর্শনের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়। দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেতারসহ বেসরকারি স্যাটেলাইট টেলিভিশনগুলো বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার এবং সংবাদপত্রগুলো বিশেষ সংখ্যা ও নিবন্ধ প্রকাশ করে। সকালে গণভবনে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে প্রকাশিত স্মারক ডাকটিকেট, উদ্বোধনী খাম ও সীল মোহর অবমুক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় প্রকাশিত ‘মুজিবস বাংলাদেশ’ শীর্ষক স্মারকগ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন তিনি। দুপুরে রাজধানীর মোহাম্মদপুর গজনবী রোডে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা পুনর্বাসন কেন্দ্রে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের জন্য ফুল, ফল ও মিষ্টি পাঠান প্রধানমন্ত্রী। আওয়ামী লীগের দুই দিনব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে রোববার সূর্যোদয় ক্ষণে বঙ্গবন্ধু ভবন, কেন্দ্রীয় ও দেশব্যাপী দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। সকালে জাতীয় স্মৃতিসৌধ ও বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ ছাড়াও দলের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন এবং মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে যোগ দেন। সোমবার সকাল ১১টায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সভায় জাতীয় নেতারা বক্তব্য রাখবেন। বিএনপি ভোরে সারাদেশে দলের সব কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, সকালে জাতীয় স্মৃতিসৌধ ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে। সোমবার দুপুর ২টায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মুক্তিযোদ্ধা দলের আয়োজনে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।