চট্টগ্রামে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের সামনে ২ গ্রুপের মারামারি, আহত ১০


চট্টগ্রামে বিএনপির একটি প্রস্তুতি সভায় দুই গ্রুপে মারামারি ও হাতাহাতির ঘটনায় অন্তত ১০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। বুধবার বিকালে নগরীর কোতোয়ালি থানার নুর আহমদ সড়কে অবস্থিত নাসিমন ভবনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে। দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক এনামুল হক এনাম ও সদস্য সচিব মোস্তাক আহমদের অনুসারীদের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, মোহাম্মদ শাহজাহান, বরকত উল্লাহ বুলু, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য গাজী মো. শাহজাহান জুয়েল, মীর মো. হেলাল উদ্দিন, হুম্মাম কাদের চৌধুরীসহ বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা উপস্থিত ছিলেন। তাদের সামনেই সংঘটিত এ হামলায় দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক মোস্তাক আহমদ গুরুতর আহত হন। তাকে নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি কাপড়-চোপড় ছিঁড়ে দিয়ে তাকে অর্ধনগ্ন করে দেওয়া হয়। উত্তর জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক তরিকুল ইসলাম তরিকুলও আহত হন। আহত অন্যদের নাম তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায়নি। অভ্যন্তরীণ বিরোধের জের ধরে পটিয়া উপজেলা ও পৌরসভা বিএনপির কয়েকজন শীর্ষ নেতার নেতৃত্বে এ হামলার সূত্রপাত হয় বলে প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানিয়েছেন। সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের একদফা দাবিতে আগামী ৩ অক্টোবর অনুষ্ঠিতব্য রোড মার্চ সফল করতে বিএনপি চট্টগ্রাম বিভাগের উদ্যোগে এ প্রস্তুতি সভার আয়োজন করা হয়। রোডমার্চ কুমিল্লা থেকে ফেনী, মিরসরাই হয়ে চট্টগ্রাম পর্যন্ত আসবে। প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানিয়েছে, প্রস্তুতি সভায় যোগ দিতে কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মোস্তাক আহমদ বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে দলীয় কার্যালয়ের সামনে রাস্তায় গাড়ি থেকে নেমে কার্যালয়ে উঠছিলেন। এ সময় পটিয়া উপজেলা ও পৌর বিএনপি নেতা খোরশেদ আলম, গাজী তাহের, শফিকুল ইসলাম, তৌহিদুল আলমসহ শীর্ষ কয়েকজন নেতার নেতৃত্বে এনামুল হক এনামের নামে স্লোগান দেওয়া হয়। একপর্যায়ে মোস্তাক আহমদকে ধরে রাস্তা থেকে মারতে মারতে তারা দলীয় কার্যালয়ের মাঠে নিয়ে যান। কার্যালয়ে অবস্থান করা বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশে হামলাকারী নেতাকর্মীরা নিবৃত্ত হলে মোস্তাককে উদ্ধার করে উপরে নিয়ে যান নেতাকর্মীরা। এ সময় দুইপক্ষ অন্তত দুই দফায় হাতাহাতি ও মারামারিতে জড়ায়। এতে মোস্তাকসহ ১০ জন আহত হন। তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় নগরীর একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সূত্র অভিযোগ করেছে, বিএনপি নেতা এনাম ও মোস্তাকের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে অভ্যন্তরীণ বিরোধ চলে আসছে। দক্ষিণ চট্টগ্রামে বর্তমানে এনামের শক্ত অবস্থান রয়েছে। যুগ্ম আহবায়ক নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি আরও শক্তিশালী হয়েছেন। মূলত জেলার নিয়ন্ত্রণ নিতেই এনাম অনুসারীরা এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত নগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক গাজী মো. সিরাজ উল্লাহ দুইপক্ষের মারামারির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেছেন, মোস্তাক আহমদসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। মোস্তাককে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানান তিনি। প্রস্তুতি সভায় আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী রোডমার্চ সফল করতে ওয়ার্কিং কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন।