হিজবুল্লাহর সম্ভাব্য প্রধান কে এই নাইম কাসেম?


ইসরাইলি হামলায় হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরুল্লাহ নিহতের পর সংগঠনটির প্রধান হওয়ার কথা ছিল হাশেম সাফিউদ্দীনের। তবে গত কিছুদিন ধরেই হদিস মিলছে না তার। এই অবস্থায় মঙ্গলবার সামনে এসেছেন হিজবুল্লাহর ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল শেখ নাইম কাসেমের নাম। সব ঠিক থাকলে তিনিই হতে যাচ্ছেন হিজবুল্লাহর প্রধান নেতা। কিন্তু প্রশ্ন হলো- কে এই নাইম কাসেম? হিজবু্ল্লাহর এই নেতা গত ৩০ বছর ধরে ইরান সমর্থিত আন্দোলনে একজন সিনিয়র ব্যক্তিত্ব। যিনি সম্প্রতি বলেছেন, সশস্ত্র গোষ্ঠী লেবাননের জন্য যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছানোর প্রচেষ্টাকে সমর্থন জানান তিনি। সম্প্রতি একটি অজ্ঞাত স্থান থেকে বক্তৃতায় কাসেম বলেন, ‘হিজবুল্লাহ এবং ইসরাইলের মধ্যে দ্বন্দ্বে একটি যুদ্ধ ছিল; কে প্রথমে কাঁদে। আমি তাদের বলতে চায় হিজবুল্লাহ প্রথমে কাঁদবে না। ইসরাইলের ‘বেদনাদায়ক আঘাত’ সত্ত্বেও দলটির সক্ষমতা অক্ষত আছে।’ তার এমন ঘোষণা ও ৩০ মিনিটের বক্তৃতার পর কাসেমকে নিয়ে হচ্ছে আলোচনা। জানা যায়, ১৯৯১ সালে সশস্ত্র গোষ্ঠীর তৎকালীন সেক্রেটারি জেনারেল আব্বাস আল-মুসাভির দ্বারা উপপ্রধান নিযুক্ত করা হয়েছিল তাকে। এর ঠিক পরের বছর ইসরাইলি হেলিকপ্টার হামলায় নিহত হন মুসাভির। নাসরুল্লাহ যখন নেতা হয়েছিলেন তখন কাসেম তার ভূমিকায় ছিলেন এবং দীর্ঘদিন ধরে হিজবুল্লাহর অন্যতম প্রধান মুখপাত্র ছিলেন। গত বছরও বিদেশী মিডিয়ায় ইসরাইলের সঙ্গে আন্তঃসীমান্ত নিয়ে সাক্ষাত্কার দিয়েছেন তিনি। আর এবার সাম্প্রতিক উত্তেজনার পর মঙ্গলবার দ্বিতীয়বার টেলিভিশনে ভাষণ দিলেন তিনি। গত ২৭ সেপ্টেম্বর বৈরুতের দক্ষিণ শহরতলীতে ইসরাইলি বিমান হামলায় নাসরুল্লাহ নিহত হওয়ার পর হিজবুল্লাহর শীর্ষ নেতৃত্বের প্রথম সদস্য হিসেবে টেলিভিশনে মন্তব্য করেন কাসেম। গত ৩০ সেপ্টেম্বর বক্তৃতায় কাসেম বলেন, ‘হিজবুল্লাহ তার মহাসচিবের একজন উত্তরসূরি বেছে নেবে এবং ফিলিস্তিনিদের সাথে সংহতি জানিয়ে ইসরাইলের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাবে।’ সেই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা যা করছি তা হল নূন্যতম... আমরা জানি যে যুদ্ধ দীর্ঘ হতে পারে।’ নাইম কাসেম, লেবাননের দক্ষিণের বৈরুতে ১৯৫৩ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তার রাজনৈতিক সক্রিয়তা লেবাননের শিয়া আমাল আন্দোলনের মাধ্যমে শুরু হয়। তিনি ১৯৭৯ সালে ইরানের ইসলামী বিপ্লবের পরিপ্রেক্ষিতে দলটি ত্যাগ করেন, যা অনেক তরুণ লেবাননের শিয়া কর্মীদের রাজনৈতিক চিন্তাভাবনাকে রূপ দেয়। পরে ১৯৮২ সালে লেবাননে ইসরাইলি আগ্রাসনের প্রতিক্রিয়ায় ইরানের বিপ্লবী গার্ডদের সমর্থনে প্রতিষ্ঠিত হিজবুল্লাহ গঠনের দিকে পরিচালিত সভায় অংশ নিয়েছিলেন তিনি।