মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে ছাত্রদলের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ৪০


মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে ছাত্রদলের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ৪০
পাবনার বেড়ায় ছাত্রদলের মিছিলকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে চলা সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ব্যর্থ হলে শেষ পর্যন্ত সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়। এ ঘটনায় অন্তত ৪০ জন আহত হয়েছেন। গুরুতর আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বুধবার, ১লা জানুয়ারি দুপুরের পর বেড়া বাজারের কাদের ডাক্তারের মোড়ে এ সংঘর্ষ শুরু হয়। পুলিশ ও স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায়, ছাত্রদলের ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বেড়ার বিভিন্ন এলাকা থেকে মিছিল বের হয়। দুপুরে কাদের ডাক্তারের মোড়ে দুটি মিছিল পরস্পরকে অতিক্রম করার সময় ধাক্কাধাক্কি হলে সংঘর্ষ বেধে যায়। একপর্যায়ে ঘটনাটি দুই গ্রামের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। এসময় মসজিদের মাইকে ঘোষণার মাধ্যমে হাতিগাড়া ও বনগ্রাম এলাকার বাসিন্দারা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। সংঘর্ষে উভয়পক্ষ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা-পাল্টা হামলা চালায়। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলেও সংঘর্ষকারীরা তাদের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পরে সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। প্রাথমিকভাবে জানা যায়, সংঘর্ষে অংশ নেওয়া দুই মিছিলের একটি নেতৃত্বে ছিলেন বেড়া পৌর ছাত্রদলের আহ্বায়ক মুরাদ হোসেন এবং অন্যটি পরিচালিত হয় ১নং ওয়ার্ড ছাত্রদলের আহ্বায়ক প্রান্ত সওদাগর ও ২নং ওয়ার্ড ছাত্রদলের আহ্বায়ক আবু বক্কারের নেতৃত্বে। এই সংঘর্ষে উভয়পক্ষের প্রায় ৪০ জন আহত হয়েছেন। গুরুতর আহত দুইজন— বনগ্রাম এলাকার রাহাত সওদাগর ও আবু হানিফকে বগুড়া শহিদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অন্য আহতদের মধ্যে শাকিল (২২), তুষার সওদাগর (২৫), রাসেল (২৫), শাহজাহান (৩৮), আয়মান (২৬), মনিরুল (২২), কাওসার (২৭), ইমরান (২৯), সোলাইমান শেখ (৪৫) ও ইয়াছিন (২০) সহ প্রায় ৩০ জন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। আহতদের বেশিরভাগই হাতিগাড়া ও বনগ্রাম এলাকার বাসিন্দা। তাদের অনেকের মুখমন্ডলে, মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বেড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোরশেদুল ইসলামের নেতৃত্বে সেনাবাহিনীর ২ প্লাটুন সদস্য এবং বেড়া, সাঁথিয়া ও আমিনপুর থানার পুলিশ যৌথভাবে ঘটনাস্থলে পৌঁছে সংঘর্ষ থামায়। বেড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অলিউর রহমান জানান, তিন থানার পুলিশ এবং সেনাবাহিনীর দুই প্লাটুন সদস্যদের তৎপরতায় উভয়পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। বর্তমানে ওই এলাকার পরিস্থিতি স্থিতিশীল রয়েছে। অন্যদিকে, সংঘর্ষের বিষয়টিকে দলীয় ঘটনা হিসেবে অস্বীকার করেছে ছাত্রদল। বেড়া পৌর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মানিক হোসেন বলেন, এই সংঘর্ষ দুই গ্রামের যুবকদের মধ্যে শুরু হয়। পরে গ্রামবাসী জড়িয়ে পড়ে। ছাত্রদলের সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই। মিছিল চলাকালে সামান্য ধাক্কা থেকে এমন বড় সংঘর্ষ হবে, তা আমরা কল্পনাও করিনি। মসজিদের মাইকে ঘোষণা না দিলে ঘটনা এতদূর গড়াত না। এই ঘোষণা সংঘর্ষ উস্কে দিয়েছে। উস্কানিদাতাদের খুঁজে বের করার দাবি জানান তিনি।