আশ্রয় দেওয়া নারীকে ধর্ষণ করতে গিয়ে খুন হন উপাধ্যক্ষ সাইফুর!
অনলাইন নিউজ ডেক্স

রাজধানীর উত্তরখান এলাকায় হাবীবুল্লাহ বাহার কলেজের সাবেক উপাধ্যক্ষ মোহাম্মদ সাইফুর রহমান ভুঁইয়া খুনের ঘটনায় বেরিয়ে আসছে চাঞ্চলকর কিছু তথ্য। এ ঘটনায় রুপা ও নাজেম নামে এক দম্পতিকে গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মিলেছে এসব তথ্য।পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেফতার রুপাকে নিজ বাসায় আশ্রয় দেওয়ার পর তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন উপাধ্যক্ষ সাইফুর রহমান। যা দেখে ফেলে তাকে কুপিয়ে হত্যা করেন স্বামী নাজেম।বুধবার দুপুরে মিন্টো রোডের ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএমপির উত্তরা বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. মহিদুল ইসলাম।পুলিশ সূত্রে জানা যায়, টাকাপয়সাসহ ব্যাগ হারিয়ে কমলাপুর রেলস্টেশনে অসহায় অবস্থায় পড়েছিলেন তারা। দুজনেরই বয়স ২৫–এর কম। তাদের অসহায়ত্ব দেখে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন মোহাম্মদ সাইফুর রহমান ভূঁইয়া। তার বাসায় চাকরি দেওয়ার কথা বলে দুজনকে উত্তরখানের ভাড়া বাসায় নিয়ে যান। চাকরির কথা বলে নিলেও সাইফুর রহমানের উদ্দেশ্য ছিল ওই নারীর সঙ্গে ‘আপত্তিকর আচরণ’ করা। সুযোগ পেলেই স্বামীকে বাইরে পাঠিয়ে তরুণীর শরীরের স্পর্শকাতর জায়গায় হাত দিতেন সাইফুর রহমান।সর্বশেষ গত রোববার রাতে সাইফুর রহমান তরুণীকে ধর্ষণের চেষ্টা করলে তার স্বামী নাজিম প্রতিবাদ করেন। এতে দুজনের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে বঁটি দিয়ে সাইফুর রহমানকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে পালিয়ে যান দুজন।পুলিশ জানায়, আটক দুই ব্যক্তি হলেন মো. নাজিম হোসেন (২১) ও তার স্ত্রী রুপা বেগম ওরফে জান্নাতি (২৩)। গতকাল মঙ্গলবার ফরিদপুর রেলস্টেশন এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে দুটি মুঠোফোন, একটি চাবির রিং ও একটি ব্যাংকের ভিসা কার্ড উদ্ধার করা হয়। এর আগে নিহত সাইফুর রহমানের ফ্ল্যাট থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি ধারালো বঁটি, একটি ধারালো চাকু, রক্তমাখা জামাকাপড় ও বিছানার চাদর উদ্ধার করা হয়।ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ডিসি মহিদুল ইসলাম বলেন, ১০ মার্চ দিবাগত রাত দুইটা থেকে ভোররাত চারটার মধ্যে হাবীবুল্লাহ বাহার বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সাবেক উপাধ্যক্ষ মোহাম্মদ সাইফুর রহমান ভূঁইয়া উত্তরখান থানার পুরানপাড়া বাতান এলাকার একটি ছয়তলা ভবনের চতুর্থ তলার ফ্ল্যাটে খুন হন। এ খুনের ঘটনায় তার ছোট ভাই মোহাম্মদ লুৎফর রহমান ভূঁইয়া বাদী হয়ে উত্তরখান থানায় গতকাল মামলা করেন।পুলিশ কর্মকর্তা মহিদুল জানান, পবিত্র রমজান মাস শুরুর আগের দিন কমলাপুর রেলস্টেশনে সাইফুর রহমানের সঙ্গে মো. নাজিম হোসেন ও রুপা বেগম ওরফে জান্নাতির পরিচয় হয়। পরিচয়ের সুবাদে দুজনকে তার ফ্ল্যাটে নিয়ে আসেন সাইফুর রহমান। একপর্যায়ে তিনি রুপাকে তার ফ্ল্যাটে আটকে শারীরিক, মানসিক ও যৌন নির্যাতন শুরু করেন। হত্যাকাণ্ডের রাতে একই শয্যায় ছিলেন সাইফুর রহমান, রুপা ও তার স্বামী নাজিম।ডিসি মহিদুল আরও বলেন, সেই রাতে নাজিম ঘুমিয়ে পড়লে রুপাকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন সাইফুর রহমান। একপর্যায়ে নাজিম ঘুম থেকে জেগে গেলে রান্নাঘর থেকে বঁটি এনে তাকে উপর্যুপরি আঘাত করেন। আঘাতের ফলে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তিনি মারা যান।
