নওগাঁয় শিক্ষকের বিরুদ্ধে সনদ বাণিজ্য ও অনিয়মের অভিযোগ।


নওগাঁয় শিক্ষকের বিরুদ্ধে সনদ বাণিজ্য ও অনিয়মের অভিযোগ।
নওগাঁ সদর উপজেলার ভীমপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আসাদুল্লাহর বিরুদ্ধে সনদ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। লেখাপড়া না জানলেও টাকার বিনিময়ে এই শিক্ষকের কাছে মিলছে অষ্টম, নবম শ্রেণী পাসের প্রত্যয়ন। আর এই প্রত্যয়নগুলো ব্যবহার করে বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সুযোগ সুবিধা গ্রহণ করছেন লেখাপড়া না জানা অনেকেই। এ সংক্রান্ত একটি লিখিত অভিযোগ সম্প্রতি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) নিকট দাখিল করা হয়েছে।অভিযোগসূত্রে জানা গেছে, শিক্ষক আসাদুল্লাহ বিভিন্ন উপজেলার লোকজনকে ঐ প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া না করলেও অর্থের বিনিময়ে অষ্টম ও নবম শ্রেণির সনদপত্র প্রদান করেন। অভিযোগকারীদের মতে, শিক্ষার্থীদের শ্রেণি কার্যক্রমে অংশগ্রহণ বা উপস্থিতি যাচাই না করেই এই ধরনের সনদ প্রদান শিক্ষা ব্যবস্থার শৃঙ্খলা ও নৈতিকতার পরিপন্থী।এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে অভিযুক্ত শিক্ষক আসাদুল্লাহ অভিযোগের আংশিক সত্যতা স্বীকার করে বলেন, \"অনেক শিক্ষার্থী লেখাপড়ায় আগ্রহী নয়, তবে তারা গার্মেন্টস, ড্রাইভিং বা বিভিন্ন চাকরির প্রয়োজনে সনদ চায়। মানবিক বিবেচনায় আমি তাদের সহযোগিতা করি। আর এতে সামান্য কিছু হাদিয়া বা অর্থ গ্রহণ করা হয় এটা মানবিকতা থেকেই করা হয় ।\"তবে স্থানীয়দের দাবি, এটি নিছক ‘সহযোগিতা’ নয় বরং দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা একটি আর্থিক লেনদেন নির্ভর অনৈতিক চক্র, যা প্রকৃত শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানের সুনামকেও ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এ ধরনের কর্মকাণ্ড শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিদ্যমান নীতিমালার সম্পূর্ণ পরিপন্থী বলেও তারা উল্লেখ করেন।নওগাঁ সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ওয়াসিউর রহমান বলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নওগাঁর নিকট সদর উপজেলার ভীমপুর দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে সনদ বাণিজ্য ও অনিয়মের বিষয়ে লিখিত অভিযোগ হয়েছে শুনেছি। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়ন না করলে তাকে উক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রত্যয়ন দেওয়ার কোন বিধান নেই। অভিযোগ প্রমাণিত হলে প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক ও আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।সরেজমিন অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, অতীতেও শিক্ষক আসাদুল্লা শিক্ষার্থীর উপবৃত্তির অর্থ আত্মসাৎ এবং এক ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির চেষ্টার দায়ে শাস্তিস্বরূপ সাময়িক বরখাস্ত হয়েছিলেন।এলাকাবাসী ও অভিভাবক সমাজ দ্রুত তদন্ত সম্পন্ন করে দোষীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন, যাতে ভবিষ্যতে কেউ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ব্যক্তিস্বার্থে ব্যবহার করার সাহস না পায়।