কুড়িগ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, পানিবন্দি শতাধিক পরিবার


উজান থেকে নেমে আসা ঢলে কুড়িগ্রামের নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। বিপদসীমা অতিক্রম না করলেও এসব নদ-নদী অববাহিকার নিম্নাঞ্চলে পানি ঢুকতে শুরু করেছে। ইতোমধ্যে দুধকুমার নদের পানি বেড়ে নাগেশ্বরী ও ভূরুঙ্গামারীর নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। সেইসঙ্গে শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানায়, সোমবার (১৯ জুন) সন্ধ্যা ৬টার তথ্য অনুযায়ী দুধকুমার নদের পানি বেড়ে পাটেশ্বরী পয়েন্টে বিপদসীমার ৪৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। ব্রহ্মপুত্র, ধরলা ও তিস্তার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলেও এখনও বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে পূর্বাভাস অনুযায়ী, আরও কয়েকদিন পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থেকে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে। পাউবোর বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, আগামী এক সপ্তাহ ব্রহ্মপুত্র নদের পানি সমতলে বৃদ্ধি পাবে। ফলে ২২-২৩ জুন নদের অববাহিকার উলিপুর উপজেলার সাহেবের আলগা ও বেগমগঞ্জ ইউনিয়ন এবং চিলমারীর নয়ারহাট ইউনিয়নসহ চরাঞ্চল সাময়িক প্লাবিত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। এদিকে, দুধকুমর নদের পানি বেড়ে ভূরুঙ্গামারী উপজেলার আন্ধারীঝাড় ইউনিয়ন এবং নাগেশ্বরী উপজেলার রায়গঞ্জ ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে শুরু করেছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে দুই ইউনিয়নের শতাধিক পরিবার। চরাঞ্চলের কিছু কিছু বাড়িঘরে পানি ঢুকতে শুরু করেছে বলেও খবর পাওয়া গেছে। রায়গঞ্জ ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ফান্দেরচর গ্রামের বাসিন্দা ও শিক্ষক শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘গত রবিবার থেকে ফান্দেরচর গ্রামে পানি ঢুকতে শুরু করেছে। গ্রামের অন্তত ৭০টি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। মানুষের চলাচলের রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। মানুষ নৌকা আর কলাগাছের ভেলায় প্রয়োজনীয় কাজ সারছেন।’ একই ইউনিয়নের দামালগ্রাম ও ভূরুঙ্গামারী উপজেলার আন্ধারীঝাড় ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের পুঁটিপাড়ার বেশ কিছু পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়ার খবর পাওয়া গেছে। রায়গঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরিফুজ্জামান বলেন, ‘আমার ইউনিয়নের চরাঞ্চলের শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এসব পরিবারের বিষয়ে মঙ্গলবার উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করা হবে।’ এদিকে, ধরলা, তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্রসহ জেলার নদ-নদীগুলোতে অব্যাহত পানি বৃদ্ধির ফলে সদরের যাত্রাপুর ও পাঁচগাছী ইউনিয়ন, উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়ন এবং রাজারহাট উপজেলার নিম্নাঞ্চলে পানি ঢুকতে শুরু করেছে। এসব এলাকার বিভিন্ন সবজিক্ষেত পানিতে ডুবে গেছে। সম্ভাব্য বন্য পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুতি সভা করেছে জেলা প্রশাসন। রবিবার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রত্যেক উপজেলা প্রশাসনকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি উদ্ধার অভিযান পরিচালনার প্রস্তুতিসহ আশ্রয়কেন্দ্র ও প্রয়োজনীয় ত্রাণ সহায়তা প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে। সোমবার রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙা ইউনিয়নে তিস্তার পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক। এ সময় কয়েকটি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে ত্রাণ সহায়তা দিয়েছেন তিনি। জেলা প্রশাসক বলেন, ‘এখনও বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি। সম্ভাব্য পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি রেখেছি। চারটি উদ্ধার নৌকা ছাড়াও ত্রাণ সহায়তা প্রস্তুত রাখা হয়েছে।’ দুধকুমার নদের চরাঞ্চলে পানিবন্দি পরিবারের খবরে সেখানে সহায়তার আশ্বাস দেন জেলা প্রশাসক। পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ-আল-মামুন বলেন, ‘পূর্বাভাস অনুযায়ী আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে জেলায় বড় ধরনের বন্যার শঙ্কা নেই। তবে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হবে