তিনদিন তাপমাত্রা কমার আভাস, কুয়াশায় ঢাকবে নদী অববাহিকা


তিনদিন তাপমাত্রা কমার আভাস, কুয়াশায় ঢাকবে নদী অববাহিকা
আগামী তিন দিন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে। একই সময়ে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। বিশেষ করে উত্তরাঞ্চল ও নদী অববাহিকা এলাকায় কুয়াশার প্রভাব বেশি থাকতে পারে। গতকাল মঙ্গলবার দেওয়া পূর্বাভাসে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। একই সঙ্গে মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে, যার বর্ধিতাংশ উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। আজ বুধবার সকাল পর্যন্ত পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। এই সময়ে সারাদেশে রাত ও দিনে তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে। বুধবার সকাল থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, দেশের নদী অববাহিকা ও উত্তরাঞ্চলের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। অন্যান্য অঞ্চলে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা দেখা যেতে পারে। এ সময় রাতে তাপমাত্রা সামান্য কমলেও দিনে অপরিবর্তিত থাকতে পারে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় এবং শুক্র ও শনিবার পর্যন্ত একই ধরনের আবহাওয়া অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এসব দিন মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত নদী অববাহিকায় মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা এবং অন্যত্র হালকা থেকে মাঝারি কুয়াশা পড়তে পারে। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, রংপুর, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগের সব নৌপথে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়ার প্রবল আশঙ্কা রয়েছে। এসব বিভাগের নদনদীতে চলাচলকারী সব নৌযানকে গতি নিয়ন্ত্রণ করে অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে চলাচলের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এদিকে উত্তরের হিমেল হাওয়ায় কুড়িগ্রামে জেঁকে বসেছে শীত। টানা দ্বিতীয় দিনের মতো গতকাল মঙ্গলবার জেলায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত সূর্যের দেখা মেলেনি। দুপুরে সূর্যের দেখা মিললেও বিকেল গড়াতেই তা মিলিয়ে যায়। কনকনে ঠান্ডা বাতাসের কারণে সূর্যের আলো তেমন উষ্ণতা ছড়াতে পারেনি। ভোর থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত ছিল ঘন কুয়াশা। বিকেল ৪টার পর আবার কুয়াশা ঘন হতে শুরু করে। কুয়াশার কারণে সড়কে যানবাহনগুলো হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে। ঘন কুয়াশার প্রভাবে জেলার মোগলবাসা, যাত্রাপুর ও চিলমারী নৌঘাট থেকে নৌযানগুলো প্রায় চার ঘণ্টা দেরিতে ছেড়ে যায়। যাত্রাপুর নৌঘাটের নৌকাচালক মো. ছামসুদ্দিন বলেন, ‘সকাল থাকি অনেক কুয়াশা। নদীর মাঝখানে কিছুই বোঝা যায় না। তাই দেরি করে নৌকা ছাড়তে হয়।’ চিলমারী নৌবন্দর থেকে রাজীবপুরগামী যাত্রী জাহানুর রহমান বলেন, অফিসের কাজে চর রাজীবপুর যাব। সকাল ৮টায় এসেছি, এখনও নৌকা ছাড়েনি।’ স্থানীয় কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র জানান, বাতাসের জলীয় বাষ্পের আর্দ্রতা ৯৭ শতাংশ। এই শীতের পরিস্থিতি আরও কিছুদিন থাকতে পারে। চুয়াডাঙ্গায়ও তীব্র শীত অব্যাহত রয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার জেলায় সর্বনিম্ন ১২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক আলতাফ হোসেন। রাতে ও সকালে কুয়াশার সঙ্গে ঠান্ডা বাতাস বইছে। এতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন দিনমজুর, কৃষিশ্রমিক ও রিকশা-ভ্যানচালকরা। শীতে বাড়ছে শীতজনিত রোগবালাই। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ এবং জানুয়ারির শুরুতে একটি মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। জানুয়ারি মাসজুড়ে দুই থেকে তিনটি মাঝারি এবং এক থেকে দুটি তীব্র শৈত্যপ্রবাহ হতে পারে। তীব্র শৈত্যপ্রবাহের সময় কোথাও কোথাও তাপমাত্রা ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি নেমে আসতে পারে। এ সময়ে মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। কিছু এলাকায় দুপুর পর্যন্ত কুয়াশা স্থায়ী থাকায় সূর্যের আলো দেরিতে দেখা যাওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে।