দিল্লির দাসত্ব গ্রহণের জন্য বাংলাদেশ স্বাধীন হয়নি: জয়নুল আবদিন


‘রাওয়ালপিন্ডি থেকে মুক্ত হয়ে দিল্লির দাসত্ব গ্রহণের জন্য বাংলাদেশ স্বাধীন হয়নি’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও জাতীয় সংসদের সাবেক বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক। শুক্রবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গণতন্ত্র ফোরামের উদ্যোগে ‘সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিক হত্যা ও ভারতীয় আগ্রাসনের’ প্রতিবাদে এক অবস্থান কর্মসূচিতে তিনি এ মন্তব্য করেন। ভারতকে উদ্দেশ করে ফারুক বলেন, ‘আধিপত্যবাদ, আগ্রাসন, গণতন্ত্র হত্যার জন্য বাংলাদেশের মানুষ সামাজিকভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছে আপনাদের বিরুদ্ধাচরণ করার জন্য। কারণ, বাংলাদেশের মানুষ একাত্তরে খালি পায়ে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছিল, রাওয়ালপিন্ডি থেকে মুক্ত হয়েছিল দিল্লির দাসত্ব গ্রহণ করার জন্য নয়।’ তিনি বলেন, ‘আমি একটি পত্রিকায় দেখেছি, ভারতের ৫২৭টি পণ্যের মধ্যে বিষক্রিয়া পাওয়া গেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন সেগুলো নিষিদ্ধ করে দিয়েছে। আরেকটি পত্রিকায় দেখলাম, তাদের দুইটি ওষুধে ক্যান্সারের মিশ্র উপাদান পাওয়া গেছে। সিঙ্গাপুর, হংকং সেগুলো বন্ধ করে দিয়েছে। আজকেও সীমান্তে একজনকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। যদি বন্ধু হও, যদি আমাদের প্রিয় ব্যক্তি হও, যদি আমাদের প্রতিবেশী হও, তাহলে সীমান্তে অহরহ গুলি কেন? তাই আজকে বাংলার জনগণ, বাংলাদেশের মানুষ গণতন্ত্রের জন্য লড়াই শুরু করেছে।’ বিএনপি চেয়ারপারসনের এ উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘আমরা ভারতের জনগণের বিরুদ্ধে নই, আমরা ভারতের বন্ধু হতে চাই। কিন্তু যে বন্ধু আমাদের শোষণ করবে, যে বন্ধু আমাদের টিপাই নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা দেয় না, সে কি বন্ধু হতে পারে? কোনোদিনও বন্ধু হতে পারে না। তাই আমরা ভারতীয় পণ্য বর্জন করে বলতে চাই, সীমান্ত হত্যা বন্ধ করো, আগ্রাসন নীতি পরিহার করো, বাংলাদেশের রাজনীতিতে নগ্ন হস্তক্ষেপ বন্ধ করো। কারণ, আপনার দেশে গণতন্ত্র থাকবে, আর আমার দেশে গণতন্ত্র যাতে না থাকে সেই ব্যবস্থা করবেন, বাংলার মানুষ তা কোনো দিন গ্রহণ করবে না।’ এ সময় তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমরা আগ্রাসন মানি না, আমরা সীমান্ত হত্যা মানি না, আমরা ভারতীয় পণ্য বর্জন করব। এই সামাজিক আন্দোলন ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে হবে।’ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে উদ্দেশ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘লজ্জা হয় না আপনাদের? ক্ষমতাসীন দল হিসেবে বলেন, সব ক্ষেত্রে নাকি বিএনপির ষড়যন্ত্র আছে। আমরা নাকি ষড়যন্ত্র করে ক্ষমতায় যেতে চাই। ষড়যন্ত্র করে ক্ষমতায় আপনারা (আওয়ামী লীগ) গেছেন। ওয়ান ইলেভেন সৃষ্টি করেছেন আপনারা। মঈন-ফখরুদ্দিনের সঙ্গে রাতের অন্ধকারে আঁতাত করেছেন আপনারা। আমরা (বিএনপি) ষড়যন্ত্র বিশ্বাস করি না। আমার নেত্রী ষড়যন্ত্র বিশ্বাস করে না। আমার নেতা তারেক রহমান ক্ষমতায় যেতে চায়, এক মাথা এক ভোটে, জনগণকে নিয়ে- ষড়যন্ত্র করে নয়।’ গণতন্ত্র ফোরামের সভাপতি ভিপি ইব্রাহিমের সভাপতিত্বে অবস্থান কর্মসূচিতে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবাদুস সালাম, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মো. রহমতুল্লাহ প্রমুখ। আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সাধারণ সস্পাদক ব্যারিস্টার ওবায়দুর রহমান টিপু, ওলামা দলের নবনির্বাচিত সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মাওলানা কাজী আবুল হোসেন, তাঁতী দলের যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী মনিরুজ্জামান, মৎস্যজীবী দলের সদস্য ঈসমাইল হোসেন সিরাজী, কৃষক দলের সহ-সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান লিটন, শিল্প কুটি বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নাঈম, যুব জাগপার সভাপতি আমির হোসেন আমু প্রমুখ।