পবায় কালভার্ট নির্মাণে নিম্নমানের রড নিয়ে অসন্তোষ
অনলাইন নিউজ ডেক্স

রাজশাহীর পবা উপজেলায় অতি নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে একটি বক্স কালভার্ট নির্মাণ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে এ কালভার্ট নির্মাণ হচ্ছে। এতে ৩ সুতা বা ১০ মিলি পুরুত্বের রড ব্যবহার করা হচ্ছে।এ কালভার্ট কতদিন টিকবে বা এর স্থায়িত্ব এবং গুণগতমান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয়রা। তারা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের (এলজিইডি) সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীদের মৌখিকভাবে অবহিত করলেও কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন না।রাজশাহী মহানগরীর উপকণ্ঠ লিলি সিনেমা হলের মোড়-দারুশা সড়কের ডাঙ্গেরহাট এলাকায় এ কালভার্ট নির্মাণ করা হচ্ছে। রাজশাহী শহরের সঙ্গে এ সড়ক পবা এবং তানোর উপজেলার বড় একটি অংশের সংযোগ স্থাপন করবে। এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিনই ভারি যানবাহন চলাচল করে। ভারি যানবাহনের চাপে চিকন রডের এ কালভার্ট বেশি দিন স্থায়ী হবে না বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।স্থানীয়রা জানান, পাঁচ মাস ধরে এর কাজ চলছে। এতে ১০ মিলি রড ব্যবহার করতে দেখে তারা আপত্তি জানান। অথচ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন পাত্তা দেননি। এলজিইডিতে অভিযোগ করা হলে কর্মকর্তারা আসেন। তবে এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় এসব রড দিয়েই এখনও নির্মাণ কাজ চলছে।তারা জানান, কালভার্টের ঢালাইয়ের জন্য বাইরে থেকে রেডিমিক্স আনা হয়েছে। এর মান কেমন, তা তারা দেখতে পাননি। তাদের ধারণা, রেডিমিক্সেও পরিমাণের চেয়ে কম সিমেন্ট দেওয়া হয়েছে।মঙ্গলবার সকালে সরেজমিন নির্মাণ শ্রমিক নবীর আলীর সঙ্গে কথা হয়। তিনি জানান, ১০ মিলির পাশাপাশি ১২ ও ১৬ মিলি রডও ব্যবহার করা হচ্ছে।শ্রমিকদের সর্দার রফিকুল ইসলাম জানান, এলাকার লোকজন একটু পরপর এসে অভিযোগ করছেন। মনে হচ্ছে এখানে কাজ করতে এসে ‘পাপ’ করে ফেলেছি। আমরা লেবার, আমরা কী করতে পারি?এ কালভার্টের পাশেই একজন মুদি দোকান মালিক শফিকুল ইসলামের সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, ৩ সুতের রড দিয়ে ব্রিজ করছে। এ রকম ব্যস্ত রাস্তার ওপর এই চিকন রডের ব্রিজ তো টিকবে না। এজন্য এলাকার লোকজন খুব আপত্তি তুলেছেন।আকরাম হোসেন নামে আরেকজন বলেন, লোকজনের আপত্তির পরও তো কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।এ বিষয়ে জানতে চাইলে পবা উপজেলা প্রকৌশলী মকবুল হোসেন বলেন, কেন তিনি সাইটে যাননি, সেটা খোঁজ নেব। নিম্নমানের কাজের অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, অভিযোগ আমিও পেয়েছিলাম।এলজিইডির রাজশাহীর নির্বাহী প্রকৌশলী জহুরুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ পেয়ে আমিও কাজ দেখেছি। ডিজাইনে ৩ সুতার রডের ব্যবহার রাখা হয়েছে। ঢাকা থেকে এই কাজের ড্রয়িং করেছে এলজিইডির ডিজাইন শাখা। তাই এ বিষয়ে আমার কিছু করার নেই।এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী (সেতু ডিজাইন) ভাস্কর কান্তি চৌধুরী বলেন, সেতু কিংবা কালভার্টে রেলিংয়ে লম্বালম্বিভাবে ১০ মিলির রড ব্যবহার করা যায়। কিন্তু মূল কাঠামোতে আড়াআড়িভাবে ১৬ মিলির কম রড ব্যবহার করা হয় না। বাস্তবে কী হচ্ছে না দেখে বলতে পারব না।স্থানীয়দের দাবি, ১৬ মিলি রডের পাশেও ১০ মিলি রড ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে আড়াআড়িভাবে। তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক রেজাউল ইসলাম রনি দাবি করেন, শিডিউল অনুযায়ী কাজ হচ্ছে। এলাকার লোকজন না বুঝেই অভিযোগ করছেন।
