পাঠ্যবই সংশোধন: দীর্ঘসূত্রতা কাম্য নয়


নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরুর তিন মাস হতে চললেও বিভিন্ন পাঠ্যবইয়ের ভুলত্রুটি ও বানান সংশোধনের কাজ এখনো সম্পন্ন হয়নি বলে জানা গেছে। বিষয়টি দুঃখজনক। এর ফলে অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে শিক্ষার্থীরা। উল্লেখ্য, গত বছর প্রথম, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন হয়েছে। চলতি বছর দ্বিতীয়, তৃতীয়, অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে চালু হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রম। নতুন শিক্ষাক্রমে পাঠ্যবইয়ে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। এসব বইয়ে কিছু ভুল ও অসংগতি থাকা ছাড়াও কিছু বিষয় নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। তাই দেখা দিয়েছে সংশোধন ও পরিমার্জনের প্রয়োজনীয়তা। এ উদ্দেশ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানুয়ারিতে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটিও করে দিয়েছে। তাদের যত দ্রুত সম্ভব এ কাজটি সম্পন্ন করা উচিত। অথচ কমিটি এখনো এ বিষয়ে কোনো চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিতে পারেনি। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান বলেছেন, কমিটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন হাতে পেলে ঈদের পরপর সংশোধনী পাঠিয়ে দেওয়া হবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। আমরা মনে করি, পাঠ্যবইয়ের ভুলত্রুটি, অসংগতি ও বিতর্কিত বিষয়গুলো দ্রুত সংশোধন ও পরিমার্জন করা না হলে এ নিয়ে পরবর্তী সময়ে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে পরীক্ষা গ্রহণ ও মূল্যায়নের ক্ষেত্রে তৈরি হতে পারে নতুন সমস্যা। তাই এ বিষয়ে দীর্ঘসূত্রতা বা গাফিলতির সুযোগ নেই। তবে এনসিটিবির নেওয়া উদ্যোগে শেষ পর্যন্ত কতটা সুফল মিলবে, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। বস্তুত প্রতিবছরই এনসিটিবির পাঠ্যবইয়ের মান নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। শিশু-কিশোরদের জন্য লেখা বই মানসম্মত ও ত্রুটিমুক্ত না হওয়ার বিষয়টি দুঃখজনক। নানা সমালোচনার পরও পাঠ্যবইয়ে ভুল ও অসংগতি দূর হচ্ছে না। পাঠ্যবই প্রণয়নের পুরো প্রক্রিয়ায় হযবরল অবস্থা সৃষ্টি হবে, বইয়ে ভুল তথ্য ছাপা হবে, সংশ্লিষ্টরা ভুল স্বীকার করে বিবৃতি দেবেন, দুঃখ প্রকাশ করবেন-এটাই যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে। মানসম্মত ও ত্রুটিমুক্ত বই সময়মতো শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া সম্ভব না হলে তারা পিছিয়ে পড়বে। কাজেই তাদের হাতে যথাসময়ে মানসম্মত ও নির্ভুল পাঠ্যপুস্তক তুলে দেওয়ার সক্ষমতা অর্জন করতে হবে এনসিটিবিকে।