বিএনপির হাফ ডজন প্রত্যাশী একক প্রার্থী জামায়াতের


বিএনপির হাফ ডজন প্রত্যাশী একক প্রার্থী জামায়াতের
কিশোরগঞ্জ-১ (কিশোরগঞ্জ-হোসেনপুর) আসনে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হাওয়া বইতে শুরু করেছে। দীর্ঘদিন ভোটাধিকারবঞ্চিত সাধারণ মানুষের মধ্যেও যেন এমন আকাঙ্ক্ষা বিরাজ করছে। এ আসনটি জেলার অপর পাঁচটির চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এ আসনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের প্রভাব পড়ে অপরগুলোয়। বিএনপির প্রায় হাফ ডজন মনোনয়নপ্রত্যাশী এবং জামায়াতে ইসলামীর একক প্রার্থী নানাভাবে ভোটারদের কাছাকাছি যাচ্ছেন। বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও মতবিনিময় সভায় যোগ দিয়ে নিজেদের অবস্থান জানান দিচ্ছেন তারা।জানা যায়, এ আসনে মোট ভোটার ৫ লাখ ১৫ হাজার ৫১১ জন। তাদের মধ্যে ২ লাখ ৬১ হাজার ৪১৩ জন পুরুষ, ২ লাখ ৫৪ হাজার ৯৬ জন নারী এবং ২ জন তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন। জেলার গুরুত্বপূর্ণ এ আসনে ১৯৭০ ও ১৯৭৩ সালের জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মুক্তিযুদ্ধকালীন প্রবাসী মুজিবনগর সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, ১৯৭৯ সালের নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী ডা. মো. ফজলুল করিম, ১৯৮৬ সালে আওয়ামী লীগ প্রার্থী অ্যাডভোকেট মো. ফজলুর রহমান, ১৯৮৮ সালে জাতীয় পার্টির মো. আলমগীর হোসাইন এবং ১৯৯১ সালে বিএনপির মাওলানা আতাউর রহমান খান বিজয়ী হন। এরপর ১৯৯৬, ২০০১, ২০০৮ ও ২০১৪ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এবং ২০১৮ ও ২০২৪ সালে একই দলের প্রার্থী ডা. জাকিয়া নূর লিপি সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হন।আসনটিতে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সহসভাপতি মো. রেজাউল করিম খান চুন্নু, জেলা বিএনপির সদস্য ব্যারিস্টার মো. আতিকুর রহমান, সাবেক আহ্বায়ক আ. ঈ. ম. ওয়ালী উল্লাহ রাব্বানী, সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম, প্রথম যুগ্মসাধারণ সম্পাদক খালেদ সাইফুল্লাহ সোহেল ও সাংগঠনিক সম্পাদক হাজি ইসরাইল মিয়া। তাদের মধ্যে আ. ঈ. ম ওয়ালী উল্লাহ রাব্বানী দীর্ঘদিন ধরে কিশোরগঞ্জের প্রকাশ্য রাজনীতিতে অনুপস্থিত থাকলেও তাকে এ আসনের প্রার্থী চেয়ে তার সমর্থকরা ৬ এপ্রিল কিশোরগঞ্জ শহরে বড় ধরনের শোডাউন করেছেন। একই কায়দায় মাঠে সরব রয়েছেন অপর প্রার্থী ব্যারিস্টার আতিকুর রহমানসহ অন্যরাও।অপরদিকে এ আসনে ইতোমধ্যে প্রকাশ্যে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন জামায়াতে ইসলামী ঘোষিত একক প্রার্থী অধ্যক্ষ মোসাদ্দেক আলী ভূঁইয়া। গণঅধিকার পরিষদের সম্ভাব্য প্রার্থী দলটির কেন্দ্রীয় উচ্চতর পরিষদ সদস্য গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফও এলাকায় সরব রয়েছেন। এছাড়া সিপিবির জেলা কমিটির সাবেক সম্পাদক অ্যাডভোকেট এনামুল হক, ইসলামি দলগুলোর মধ্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেষ্টা মাওলানা ওবায়দুর রহমান নদভী এবং সংগঠনটির জাতীয় উলামা মাশায়েখ পরিষদের সাবেক যুগ্মসাধারণ সম্পাদক মো. আজিজুর রহমান জার্মানি সম্ভাব্য প্রার্থী হিসাবে আলোচনায় রয়েছেন। জাসদ (রব)-সহ অন্য বাম ঘরানার দলগুলোর তৎপরতা এখনো দৃশ্যমান হয়নি।দলীয় মনোনয়নের বিষয়ে কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম ও প্রথম যুগ্মসাধারণ সম্পাদক খালেদ সাইফুল্লাহ সোহেল জানান, পতিত স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের আমলে যারা মাঠে থেকে দলীয় কর্মসূচি পালন করেছেন এবং জেল-জুলুম ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন-এমন ক্লিন ইমেজের প্রার্থীদের মধ্য থেকেই দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হবে। দল যাকে মনোনয়ন দেবে, তার পক্ষেই সবাই কাজ করবে।জামায়াতের প্রার্থী অধ্যক্ষ মোসাদ্দেক আলী ভূঁইয়া বলেন, আমরা এবার অত্যন্ত সুসংগঠিত হয়ে মাঠে নামছি। আশা করি, জনগণ আমাদের ভোট দিয়ে বিজয়ী করবে।