মঙ্গলবার জোহানেসবার্গে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী, ব্রিকসে যোগদান নিয়ে যা বললেন মোমেন


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দিতে মঙ্গলবার দক্ষিণ আফ্রিকা যাচ্ছেন। জোহানেসবার্গে ব্রিকস সম্মেলনে অংশগ্রহণ বিষয়ে রোববার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন এ তথ্য জানান। ব্রিকসে যোগদানে বাংলাদেশের সর্বশেষ অবস্থা কী- জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন বলেন, জেনেভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রদূত দেখা করে বলেছিলেন- তারা ব্রিকসের সদস্য সংখ্যা বাড়াতে চান। বাংলাদেশকেও সদস্য করার চিন্তাভাবনা করছেন। তবে চূড়ান্ত হয়নি। ড. মোমেন বলেন, এ মুহূর্তে ব্রিকসে নতুন সদস্য নেবে কিনা- তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। কারণ তারা কী প্রেক্ষাপটে সদস্য নেবেন, কী কী হবে... সেজন্য তারা একটা মোডালিটি (কর্মপদ্ধতি) তৈরি করবেন। এ ব্যাপারে আমরা তাড়াহুড়ো করব না। তিনি বলেন, এরইমধ্যে ব্রিকস ব্যাংকে আমরা যোগদান করেছি। ব্রিকস হ্যাভ অ্যা লার্জ অ্যামাউন্ট- তাদের প্রায় পাঁচ ট্রিলিয়ন ডলার রিজার্ভ আছে। এখন যারা আমাদের উন্নয়ন অংশীদার, তাদের অনেকেই ইদানিং খুব একটা সাহায্যে আসছে না। তিনি বলেন, ব্রিকসে অংশগ্রহণ করতে পারলে উন্নয়ন প্রকল্পে সহযোগিতা পাব। আফ্রিকায় আমাদের (ভালো) সুযোগ রয়েছে- বিশেষ করে ব্যবসা-বাণিজ্যে। আফ্রিকার সঙ্গে আমরা সম্পর্ক বাড়াতে চাই। ব্রিকসে যোগ দিলে জিও পলিটিক্যাল রিস্ক বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, উন্নত দেশগুলোর জন্য ব্রিকস সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। উন্নয়নশীল দেশগুলোতে যতটা বিনিয়োগ করার প্রয়োজন ততটা করছে না উন্নত দেশগুলো। ইমার্জিং দেশগুলো সাহায্য নিয়ে আসবে ব্রিকস। তাতে উন্নত দেশগুলো বরং খুশি হবে। কারণ তাদের দায়বদ্ধতা কমবে। তবে কিছু মিডিয়া বিষয়গুলোকে ভিন্নভাবে তুলে ধরছে। ব্রিকস সম্মেলনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ও চীনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈঠক করবেন- এমন খবরের বিষয়ে জানতে চাইলে ড. মোমেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী যখন জোহানেসবার্গে থাকবেন তখন অনেক রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানের সঙ্গে তার সাক্ষাতের আয়োজন করব। এখনো সব চূড়ান্ত হয়নি। রাষ্ট্রপ্রধানদের সাক্ষাতগুলো শেষ মুহূর্তে হয়। তবে অবশ্যই অনেক রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানের সঙ্গে সাক্ষাৎ হবে। দ্বিপাক্ষিক আলোচনা হবে। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে চিকিৎসার বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন বলেন, আমি জানি না কোনো দেশ বন্দিকে (আসামি) বিদেশে পাঠায় কিনা। প্রশ্নকর্তাকে তিনি উলটো প্রশ্ন করেন- চিকিৎসার জন্য কোনো দেশ আসামিকে বিদেশে পাঠায় বলে জানেন কিনা? যদি কোনো দেশ পাঠায়- আমাকে বলবেন। তাকে (খালেদা জিয়া) সর্বোচ্চ চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনকূটনীতি শাখার মহাপরিচালক সেহেলি সাবরিন উপস্থিত ছিলেন। ব্রিকস সম্মেলনে বাংলাদেশ কোন বিষয়ে গুরুত্ব দেবে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, ব্রিকসের সার্বিক কর্মকাণ্ডই বাংলাদেশের ভবিষ্যতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। সদস্য হওয়ার আগেই তারা বাংলাদেশের জন্য ১ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছেন। তাদের প্রতিটি এজেন্ডাই বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ব্রিকস সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এবারের সফরে প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গীর সংখ্যা সীমিত। সরকারিভাবে ১৪ জন তার সঙ্গে যাবেন। এমনিতে বাইরের কিছু প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি যাবেন, ব্যবসায়ী যাবেন। কারণ আমাদের বিনিয়োগ, বাণিজ্য বাড়ানোর একটা উদ্দেশ্য রয়েছে। সেজন্য কিছু ব্যবসায়ী যাবেন।