তিন নিত্যপণ্যের দাম নির্ধারণ, সরকারি আদেশ অকার্যকর কেন?
মোঃ রাছেল রানা, প্রধান সম্পাদক
বাজারের লাগাম টানতে বৃহস্পতিবার আলু, পেঁয়াজ ও ডিমের মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে জোরালো পদক্ষেপ নেওয়ার কথাও জানিয়েছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী।
নিত্যপণ্যের উচ্চমূল্যের কারণে মানুষ বহুদিন ধরেই হাঁসফাঁস করছে। এ পরিস্থিতিতে মানুষ আশা করেছিল, সরকারের নতুন এ পদক্ষেপ কার্যকর করার পদক্ষেপ নেওয়া হবে। কিন্তু সারা দেশে আলু, পেঁয়াজ ও ডিমের নির্ধারিত মূল্য কার্যকর হয়নি। সরকারের বেঁধে দেওয়া দাম খোদ সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশও কার্যকর করেনি।
পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ ও অসাধুদের অতি মুনাফা রোধে সরকারিভাবে একাধিকবার একাধিক পণ্যের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু সেই দাম কার্যকর করা যায়নি। বাড়তি দরেই পণ্য কিনতে হয়েছে ক্রেতাদের। এবারও একই চিত্র দেখা যাচ্ছে। বাজার বিশেষজ্ঞদের মতে, অতীতে অসাধু ব্যবসায়ীদের বহু ছাড় দেওয়া হয়েছে। আর ছাড় দেওয়া অনুচিত। আলু, ডিম, পেঁয়াজ নিয়ে কারা অসাধু পন্থায় অতি মুনাফা করছে সে তথ্য সরকারের অজানা নয়। কাজেই সরকারের উচিত অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজি রোধে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া।
সম্প্রতি কৃষিমন্ত্রী বলেছিলেন, দেশে আলুর যথেষ্ট ভালো ফলন হয়েছে। এরপরও কেন আলুর দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে, তা খতিয়ে দেখা দরকার। শুক্রবার বাণিজ্যমন্ত্রী বলেছেন, আমরা সবাই মিলে বাজার নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি। তিনি বলেছেন-পেঁয়াজ, আলু, ডিমের বেঁধে দেওয়া দাম জোরালোভাবে মনিটরিং হচ্ছে। সিন্ডিকেটের সদস্যরা যোগসাজশের মাধ্যমে কিভাবে পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয় তা বহুল আলোচিত। সিন্ডিকেটের কারসাজি বন্ধ করার দায়িত্ব সরকারের। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আমরা সরকারের জোরালো ভূমিকা দেখতে চাই। বস্তুত বাজার ব্যবস্থাপনার দুর্বলতার কারণেই মধ্যস্বত্বভোগী ও অসাধু ব্যবসায়ীরা বেপরোয়া হয়ে ওঠে। এ দুর্বলতা কাটাতে সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
সরকারের পক্ষ থেকে পণ্যের দাম বেঁধে দেওয়া হলেও কেন তা কার্যকর হয় না, সে রহস্য উদ্ঘাটনে জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। অতীতে লক্ষ করা গেছে, অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযানের মাঝেই ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের অপতৎপরতা আরও বেড়েছে। কেন এমনটি ঘটে? বাজার তদারকি সংস্থার অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীর সঙ্গে অসাধু ব্যবসায়ীদের আঁতাতের বিষয়টি বারবার আলোচনায় আসে। কাজেই সরষের ভেতরের ভূত তাড়ানোর জন্যও কর্তৃপক্ষকে জোরালো পদক্ষেপ নিতে হবে।
ডোনেট বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।