রংপুরে সনাতনী সম্প্রদায়ের উপর হামলার প্রতিবাদ করেছে ‘একাত্তরের প্রহরী ফাউন্ডেশন,যুক্তরাষ্ট্র’
অনলাইন নিউজ ডেক্স
রংপুরের গংগাচড়া উপজেলার বেতগাড়ী ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে ধর্ম অবমাননার অপবাদ তুলে জঘন্য হামলার প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছে ‘একাত্তরের প্রহরী ফাউন্ডেশন,যুক্তরাষ্ট্র’।
তাৎক্ষণিক এক বিবৃতিতে বলা হয়, বর্তমান দখলদার সরকারের শাসনামলে বাংলাদেশ সবচেয়ে অন্ধকার সময় পার করছে। এই সরকার গণমানুষের জান-মালের নিরাপত্তা দিতে পুরোই ব্যর্থ হয়েছে।
তারা বিভিন্ন ঢাল ব্যবহার করে দেশে খুন ধর্ষণ লুট মবতান্ত্রিক হামলা চালিয়েই যাচ্ছে। এই সরকারের হাতে মানবতা আজ কতটা বিপন্ন তার প্রমাণ সাম্প্রতিক রংপুরের নিন্দনীয় ঘটনা। ফাউন্ডেশনের বিবৃতিতে বলা হয়, ধর্ম অবমাননার মিথ্যা অপবাদ ও অজুহাত তোলে এই সরকার গ্রামে গ্রামে সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্প ছড়িয়ে দিতে নেপথ্যে কাজ করছে। এই সরকারের উপদেষ্টা ও তাদের রাজনৈতিক অংশীজন নেতারা বিভিন্ন ভাবে হিউম্যান রাইটস ক্ষুন্নই শুধু করছেন না- তারা মনবতাকে হত্যা করছেন প্রতিদিন। বিভিন্ন ফোরামে উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়ে মানুষের মাঝে হিংসা-বিদ্বেষ ছড়াচ্ছেন।
ব্যক্তি বিশেষ, কেউ কোনো আইন অমান্য কিংবা অপরাধ করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া যেতেই পারে। কিন্তু সংঘবদ্ধ ভাবে একটি গ্রাম- একটি এলাকা পুড়িয়ে দেয়া, বাড়িঘর ভেঙে দেয়া, মানুষকে খুন করা,লুটপাট করা প্রমাণ করে যে এসব রাষ্ট্রীয় মদতেই হচ্ছে। ফাউন্ডেশনের সভাপতি বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা ও লেখক ড: নুরুন নবী ও সাধারণ সম্পাদক স্বীকৃতি বড়ুয়া সাক্ষরিত এই বিবৃতিতে বলা হয়, মাইলস্টোন হত্যাকাণ্ড গোটা জাতিকে হতবাক করেছে। অনেক প্রশ্নের জন্ম দেয়া মাইলস্টোন ট্রাজেডির ক্ষতে গোটা জাতি যখন বিধ্বস্ত, তখনই সরকারি পরিকল্পনায় রংপুরে গ্রামে গ্রামে আক্রমণ করা হয়েছে। মানুষ গ্রাম ছেড়ে পালাচ্ছেন। সরকার একের পর এক হীন ইস্যু তৈরি করছে। একই সময়ে এই সরকারের বিভিন্ন উপদেষ্টা,তাদের পিতা,ভ্রাতা,পরিবারের অন্যান্য সদস্যের দ্বারা সংঘটিত চাঁদাবাজি,খুন,লুটপাট,অর্থ পাচারের খবর সংবাদ মাধ্যমে প্রচারিত হচ্ছে প্রতিদিন! এতেই প্রমাণিত হয় , এই সংঘবদ্ধ দখলদার মৌলবাদী-জঙ্গীবাদী গোষ্টি পরিকল্পিতভাবেই জুলাই সন্ত্রাসের মাধ্যমে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেছিল।
অবাক করা কথা হচ্ছে, ‘বৈষম্য বিরোধী ছাত্রআন্দোলনের’ নামে মীমাংসিত কোটা প্রথাকে পুঁজি করে যারা জুলাইয়ে সরকারি ভবন,মেট্রোরেল পোড়ানোর মতো জঘন্য অপরাধ করেছিল- এরাই এখন বড় চাঁদাবাজে পরিণত হয়েছে। তারাই সরকারি ছত্রছায়ায় মানুষকে হুমকি দিয়ে বেড়াচ্ছে। অবস্থা এতটাই নাজুক যে, বাধ্য হয়ে তারা শুধুমাত্র কেন্দ্রীয় কমিটি ছাড়া পুরো দেশে ‘বৈষম্য বিরোধী’দের কমিটি স্থগিত ঘোষণা করেছে। এতেই বুঝা যায়, তাদের সহযোগীরা কতটা মরিয়া হয়ে দেশে মবতন্ত্র চালাচ্ছে। দেশের রাষ্ট্রীয় কোষাগার তো বটেই, বালু পাথর, বদ-বাদাড়, মৎস্য প্রকল্প, বনাঞ্চল ও এদের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে না। শিল্প সাহিত্য বেতার টেলিভিশনে তারা তাদের নিজেদের গুণগান ও সাফাই অব্যাহত রেখে মানুষকে ভূয়া তথ্য দিয়েই যাচ্ছে। তাদের ভাড়টেরা তাদের গুণকীর্তনে ব্যস্ত !
সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা একটি জাতিকে ধ্বংস করে দেয়।এটা অত্যন্ত গর্হিত কাজ। খুবই লজ্জার কথা হচ্ছে, রংপুরে সেনাবাহিনী সনাতনীদের জানমাল রক্ষায় শক্ত হাতে, দমনে এগিয়ে আসেনি ! বিবৃতিতে বলা হয়, খুব শীগগির এই দখলদার সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। একটি নিরপেক্ষ, সর্বদল স্বীকৃত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে হবে। দেশের সবচেয়ে প্রাচীন ও বৃহৎ রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে অংশ নেয়ার সুযোগ দিতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকল রাজবন্দিদের মুক্তি দিতে হবে। এই ঘাতক সরকারের বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার উদার আহ্বান জানায় ফাউন্ডেশন। এই রাহুগ্রাস থেকে মুক্তি না পেলে বাংলাদেশের সকল অর্জন ভূলুণ্ঠিত হবে বলেও বলা হয় বিবৃতিতে। একই সাথে, বিদেশের প্রতিটি মানবাধিকার সংস্থাকে এই হত্যাযজ্ঞ,লুটপাট।দখলের বিবরণ ও জঘন্যতম আচরণের কথা লিখে জানাতেও অনুরোধ করে ফাউন্ডেশন। প্রতিটি দেশপ্রেমিক অভিবাসীকে, ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ গড়ে তোলার ও আহ্বান জানানো হয়। পরিশেষে বলা হয়, বাংলাদেশ- একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত রাষ্ট্র। প্রজন্মকে সেই আলো ধারণ করেই দাঁড়াতে হবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায়ই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।
