প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনের অনুষ্ঠানে দুপক্ষের সংঘর্ষ, ১০ পুলিশসহ আহত শতাধিক
অনলাইন নিউজ ডেক্স
রংপুরের মিঠাপুকুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে শোভাযাত্রা শেষে আওয়ামী লীগের দুপক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৪টা থেকে ২ ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে মিঠাপুকুর থানার ওসি, ১০ পুলিশ সদস্য, সাংবাদিকসহ শতাধিক আহত হয়েছেন। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে।
এ ঘটনায় আহতদের মিঠাপুকুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে উপজেলা পরিষদ চত্বরে এইচএন আশিকুর রহমান এমপি গ্রুপ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। একইসঙ্গে পৃথক স্থানে ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে বাসস্ট্যান্ড ওভারপাসে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জাকির হোসেন সরকার গ্রুপ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
এমপি গ্রুপ উপজেলা পরিষদে শোভাযাত্রার জন্য প্রস্তুতি নেয় করে। মিঠাপুকুর কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠ হতে জাকির হোসেন সরকার গ্রুপ শোভাযাত্রা শুরু করে। শোভাযাত্রা নিয়ে জাকির হোসেন উপজেলা পরিষদ গেটে পৌঁছামাত্র প্রতিপক্ষ গ্রুপের সশস্ত্র একদল নেতাকর্মী ওই শোভাযাত্রার ওপর হামলা চালায়।
নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশ সদস্যরা কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই দুপক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে প্রায় অর্ধকিলোমিটার এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় ভয়ে বাসস্ট্যান্ড বাজারের ব্যবসায়ীরা দোকানপাট বন্ধ করে দেয়। লোকজন আত্মরক্ষায় ছুটাছুটি করতে থাকে। পুলিশ উভয়পক্ষের সংঘর্ষ থামাতে প্রথমে লাঠিচার্জ করে। পরে জেলা সদর থেকে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
সংঘর্ষের ফলে মিঠাপুকুর থানার ওসি মোস্তাফিজার রহমানসহ ১০ পুলিশ সদস্য আহত হন। এ সময় অপর পুলিশ সদস্যরা তাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেন।
সংঘর্ষে গুরুতর আহত হয়েছেন- উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান বাবু নিরঞ্জন, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শরিফা আক্তার জেসমিন, পুলিশ কনস্টেবল মোতালেব হোসেন, আক্কাস আলী, গনেস চন্দ্র, দুপক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে মমিনুল ইসলাম, নাজমুল ইসলাম, সৌমিক, নুরুজ্জামান, কামরুজ্জামান, শরিফুল ইসলাম, আমজাদ হোসেন, ওয়ারেস আলী, শফিকুল ইসলাম, হারেস আলী, কাওছার, আব্দুর রউফ, শাহনাজ পারভিন, সুরর্ণা, ফজিলা বেগম, রেজাউল করীম, আশিষ কুমার, সম্রাট, আশরাফুল ইসলাম, শহিদ হাসান ও রুহুল আমিনকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও মিঠাপুকুর উপজেলা হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আহত অন্যান্যরা হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। সাংবাদিকদের মধ্যে ৫ জন আহত হয়েছেন তারা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
উপজেলা চেয়ারম্যান জাকির হোসেন সরকার বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে শোভাযাত্রা করছিলাম। শোভাযাত্রাটি শেষের দিকে এমপি গ্রুপের নেতাকর্মীরা আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় আমার নেতাকর্মীদের হামলা চালিয়ে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে তারা। এতে প্রায় শতাধিক আহত হয়েছে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক (এমপি গ্রুপের) শাহ আনোয়ার সাদাত লেমন বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যানের লোকজন গণ্ডগোল সৃষ্টি করেছে। সংঘর্ষে আমাদের অনেকে আহত হয়েছে।
মিঠাপুকুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজার রহমান বলেন, আমাদের বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন ছিল। তারপরও দুপক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। পরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার রকিবুল হাসান বলেন, হঠাৎ অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। পরে প্রশাসন কঠোর হস্তে তাদেরকে দমন করেছে।
ডোনেট বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।