কক্সবাজারে কাজে গিয়ে নিখোঁজ হলেন একই গ্রামের ৬ শ্রমিক


কক্সবাজারে কাজে গিয়ে নিখোঁজ হলেন একই গ্রামের ৬ শ্রমিক
কক্সবাজারে রাজমিস্ত্রীর কাজে গিয়ে সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার একই গ্রামের ৬ রাজমিস্ত্রী শ্রমিক পাঁচদিন ধরে নিখোঁজ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।নিখোঁজরা হলেন- জকিগঞ্জ উপজেলার খলাছড়া ইউনিয়নের পশ্চিম লোহারমহল গ্রামের মৃত লুকুছ মিয়ার ছেলে রশিদ আহমদ (২০), ফারুক আহমদের ছেলে মারুফ আহমদ (১৮), আজির উদ্দিনের ছেলে শাহিন আহমদ (২১), মৃত দুরাই মিয়ার ছেলে এমাদ উদ্দিন (২২), সফর উদ্দিনের ছেলে খালেদ হাসান (১৯) ও মৃত সরবদির ছেলে আব্দুল জলিল (৫৫)।পুলিশ বলছে- মোবাইলের লোকেশন ট্র্যাকিং করে ৬ জনের মধ্যে দুজনের অবস্থান কক্সবাজারের টেকনাফ দেখাচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে।নিখোঁজদের পরিবার সূত্রে জানা যায়, ১৫ এপ্রিল বিকালে সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার খলাছড়া ইউনিয়নের পশ্চিম লোহারমহল গ্রামের ৫ তরুণসহ মোট ৬ জন কাজের জন্য কক্সবাজারের উদ্দেশে রওয়ানা দেন। ১৬ এপ্রিল কক্সবাজার পৌঁছার পর পরিবারের লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। কিন্তু এরপর থেকে তাদের মোবাইল বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।নিখোঁজ এমাদ উদ্দিনের চাচাতো ভাই ও খালেদ হাসানের চাচা আব্দুল বাছিত দুলালের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, এমাদ উদ্দিন ও খালেদ তাদের সঙ্গীয় সবাই ১৫ এপ্রিল বাড়ি থেকে বের হয়ে পরদিন কক্সবাজার পৌঁছেন। ওইদিন সন্ধ্যা ৬ টার দিকে এমাদ উদ্দিন কল দিয়ে বাড়িতে জানিয়েছেন তারা সবাই কর্মস্থলে পৌঁছেছেন। এরপর আর যোগাযোগ করেননি। বাড়ি থেকে কল করা হলে মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। এরপর এমাদ ও খালেদের সঙ্গে থাকা অন্যদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তাদের মোবাইল নাম্বারও বন্ধ পাওয়া যায়।তিনি বলেন, প্রথমে বিষয়টিকে স্বাভাবিক মনে হয়েছে। কিন্তু পাঁচদিনেও কারো মোবাইলে কল না যাওয়ার কারণে বিষয়টি অস্বাভাবিক মনে হচ্ছে।তিনি আরো বলেন, এ ঘটনায় জকিগঞ্জ থানায় জিডি করতে চাইলে পুলিশ পরামর্শ দিয়েছে কক্সবাজারে জিডি করার জন্য। সেখানের থানায় জকিগঞ্জ থানা থেকে যোগাযোগ করা হয়েছে। আমাদের লোকজন কক্সবাজারের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন।নিখোঁজ রশিদের ভাই আব্দুল বাছিত বলেন, রশিদ কয়েক বছর থেকে চট্টগ্রামে এক ঠিকাদারের অধীনে কাজ কাজ করতো। ঠিকাদারেরও বিভিন্ন সময়ে বাড়িতে আসা যাওয়া ছিল। চট্টগ্রামের ঠিকাদারের মাধ্যমে কক্সবাজার এইবার প্রথম গিয়েছে। কক্সবাজার যাওয়ার পর থেকে রশিদসহ সঙ্গে থাকা সবার মোবাইল ফোন বন্ধ দেখাচ্ছে।ওই ঠিকাদারের নাম ঠিকানা জানা নাই উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের ধারণা তাদেরকে ওইখানে যে লোক নিয়েছেন তিনি কিছু একটা করেছেন। কেউ জিম্মি না করলে কারো না কারো পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন, টাকা পয়সা দিতেন বলে দাবি করেন তিনি।নিখোঁজ খালেদ হাসানের বাবা ও ইউপি সদস্য সফর উদ্দিন বলেন, তারা কাজের জন্য চট্টগ্রাম গিয়ে ৫ থেকে ৬ মাস সেখানে থাকে। ঈদে বা ওয়াজের সময় বাড়িতে আসেন। তাছাড়া সারা বছরই চট্টগ্রামে রাজমিস্ত্রীর কাজ করে। মঙ্গলবার আমার ছেলে বাড়ি থেকে যাওয়ার পরে আর কোনো যোগাযোগ নেই।জকিগঞ্জ থানার ওসি জহিরুল ইসলাম মুন্না বলেন, জকিগঞ্জ থেকে কাজের উদ্দেশে কক্সবাজার গিয়ে ৬ রাজমিস্ত্রী শ্রমিক নিখোঁজ হওয়ার খবর পেয়েছি। নিখোঁজদের পরিবার থেকে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। আমরা তাদেরকে সহায়তা করে যাচ্ছি।তিনি বলেন, নিখোঁজদের মধ্যে দুজনের মোবাইল ফোন ট্র্যাকিং করে তাদের সর্বশেষ অবস্থান কক্সবাজারের টেকনাফে দেখাচ্ছে। কক্সবাজারের সংশ্লিষ্ট থানায় জিডি করার জন্য নিখোঁজ হওয়া লোকজনের অভিভাবকদেরকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আমরাও বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখছি।