ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বিএনপির প্রথম পর্যায়ের বৈঠক শেষ


ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বিএনপির প্রথম পর্যায়ের বৈঠক শেষ
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বেশির ভাগ সুপারিশে সমর্থন জানিয়েছে বিএনপি। তবে কিছু সুপারিশে আপত্তিও রয়েছে দলটির। সেক্ষেত্রে আপত্তি থাকা বিষয় নিয়ে কমিশনের কাছে দলের মতামত তুলে ধরা হয়েছে। একমত হওয়া সুপারিশগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ, নিম্নকক্ষের ৪০০ আসনের মধ্যে ১০০টি আসন নারীদের জন্য সংরক্ষিত, বিরোধীদল থেকে ডেপুটি স্পিকার, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীক নয়, রাষ্ট্রপতির অভিশংসন প্রক্রিয়া, ন্যায়পাল নিয়োগ এবং প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষা। অন্যদিকে প্রধান প্রচারপতি নিয়োগ আইন, মন্ত্রিপরিষদে প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা কমানো, গণভোট, ৭০ অনুচ্ছেদ, সংবিধানের মূলনীতি পরিবর্তন, নারী আসনে সরাসরি ভোট, রাষ্ট্রের নাম পরিবর্তন এবং একই ব্যক্তি একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী, সংসদনেতা ও দলীয় প্রধানের পদে না থাকার বিষয়সহ কিছু সুপারিশে ভিন্নমত পোষণ করেছে। মঙ্গলবার দিনভর জাতীয় সংসদের এলডি হলে ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রথম পর্যায়ের তৃতীয় ধাপের (শেষ পর্ব) আলোচনায় এ কথা জানিয়েছে বিএনপি।দলটি বলছে, বিচার বিভাগ সংস্কার সংক্রান্ত রিপোর্টে সংবিধানের যে অংশটা বিচার বিভাগে যে ভাগ আছে, সেই অংশ নিয়ে আলাপ হয়েছে। এর বাইরেও বিস্তারিত প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছিল। যেখানে সংবিধানের অংশ বাদেও আরও বিভিন্ন আইনকানুনের প্রশ্নে তাদের (ঐকমত্য কমিশন) প্রস্তাব আছে। সেখানে মোট ২৮টি চ্যাপ্টারে সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছে কমিশন। এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হিসাবে ৮৯টি প্রস্তাব চিহ্নিত করেছে বিএনপি। এতে তারা বিস্তারিত মতামত দিয়েছে। এর মধ্যে ৬২টি বিষয়ে একমত হতে পেরেছে সরাসরি বা নীতিগতভাবে। ৯টি বিষয়ে মন্তব্যসহ আংশিক একমত হয়েছে। ১৮টি বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করেছে।জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, বিএনপির সঙ্গে সংবিধান ও নির্বাচনব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। মে মাসের মাঝামাঝিতে হবে দ্বিতীয় পর্যায়ের সংলাপ।বৈঠক শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, জ্যেষ্ঠতম বিচারপতিকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগের সুপারিশ করেছে বিচারব্যবস্থা সংস্কার কমিশন। এতে দ্বিমত জানিয়েছি। বিতর্কিত নিয়োগ এড়াতে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠতম দুই থেকে তিনজন বিচারপতির মধ্য থেকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগের প্রস্তাব করেছি। এছাড়া স্থানীয় সরকার নির্বাচনে প্রার্থীরা দলীয় প্রতীক ব্যবহার করতে পারবেন না-জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এমন প্রস্তাবের পক্ষে মত দিয়েছে বিএনপি। তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন প্রক্রিয়া একটা বড় প্রশ্ন। পূর্বের মতো অর্থাৎ তত্ত্বাবধায়ক সরকার কি জুডিশিয়ারিকে অপশন রেখে চিপ জাস্টিস ও আপিল বিভাগের বিচারপতি রেখে থাকবে নাকি বিকল্প চিন্তা করা হবে-সে বিষয়ে বলেছি, আপনারা প্রস্তাব দেন। দেখি কোনো প্রস্তাব সাজানো যায় কি না।তিনি বলেন, এখন আরও হয়তো বিচার বিভাগের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক বা অনানুষ্ঠানিক আলোচনা হবে। এখানে হয়তো আরও কাছাকাছি আসতে পারব। আমরা চাই বাংলাদেশে একটি পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতা বাস্তবায়ন করতে চাই। সচিবালয়সহ ন্যাশনাল জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠনের কথা বলেছি।সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ঐকমত্য কমিশনের বেশির ভাগ সুপারিশে বিএনপির সমর্থন রয়েছে। আপত্তি রয়েছে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ আইন, মন্ত্রিপরিষদে প্রধানমন্ত্রীর কর্তৃত্ব কমানো নিয়ে।দলটি রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে অষ্টম, নবম, দশম, দ্বাদশ ও পঞ্চদশ সংশোধনীর পূর্বাবস্থা চায় বলে ঐকমত্য কমিশনকে জানায়। ধর্মনিরপেক্ষতার বিলুপ্ত করার সঙ্গে একমত বিএনপি। সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার আনার ক্ষেত্রেও তারা একমত। এগুলো মৌলিক অধিকারে আনার বিষয়ে কথা বলেছে বিএনপি। সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, নির্বাহী বিভাগে প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার মধ্যে ভারসাম্য আনা আমাদের অঙ্গীকার। পরপর দুবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী নয়, পরে এক মেয়াদ বাদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার ক্ষেত্রে আমরা মত দিয়েছি। একই ব্যক্তি সংসদনেতা ও দলীয় প্রধান হবেন না, এটির সঙ্গে একমত হইনি। প্রধানমন্ত্রীর কাছে সংসদনেতার পদ থাকা উচিত। বিষয়টি সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের ওপর ছেড়ে দেওয়া উচিত-দলের প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী একই ব্যক্তি হবেন কি না।সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, রাষ্ট্রপতির অভিশংসন প্রক্রিয়ায় পার্লামেন্টের উভয় কক্ষের দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যের ভোটের বিষয়ে বিএনপি একমত পোষণ করেছে। ন্যায়পাল নিয়োগের বিষয়েও একমত হয়েছে বিএনপি।তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে সংবিধানের অষ্টম, নবম, দশম, দ্বাদশ-এগুলো উনারা রিপ্লেস করতে বলেছিলেন। আমরা বলেছি রিপ্লেস করার বিষয়ে আমরা একমত। কারণ ওখানে ধর্মনিরপেক্ষতার কথা আছে এটার বিরুদ্ধে আমরা। বহুত্ববাদের বিরুদ্ধে আমরা। রিপ্লেসের সঙ্গে একমত, কিন্তু কি দিয়ে রিপ্লেস করা হবে সেটা বলেছি যে পঞ্চদশ সংশোধনীর পূর্বের অবস্থার যে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতিগুলো আছে ওগুলো রিপ্লেস করা হোক। সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার আনার ক্ষেত্রেও তারা একমত। এগুলো মৌলিক অধিকারে আনার কথা বলেছে বিএনপি।সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার মধ্যে ভারসাম্য আনা তাদের অঙ্গীকার। এক ব্যক্তির পরপর দুই মেয়াদের পর একবার বিরতি দিয়ে আবার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ রাখার কথা তারা বলেছেন। একই ব্যক্তি সংসদ নেতা ও দলীয় প্রধান হবেন না, এটার সঙ্গে বিএনপি একমত হয়নি।সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, মন্ত্রিপরিষদ প্রধানমন্ত্রীর কর্তৃত্বে পরিচালিত। কিন্তু কমিশন বলেছে, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে মন্ত্রিসভা কর্তৃক সরকার পরিচালিত হবে। তাতে এখানে প্রধানমন্ত্রীর কর্তৃত্ব থাকে না। প্রধানমন্ত্রীর কর্তৃত্ব থাকা উচিত।একজন সর্বোচ্চ দুবার প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন সংবিধান সংস্কার কমিশনের এ প্রস্তাবে দ্বিমত জানিয়েছে বিএনপি। দলটির প্রস্তাবে বলা হয়েছে, দুবারের পরে বিরতি দিয়ে আবারও প্রধানমন্ত্রী হওয়া যাবে। তবে রোববারে মুলতবি হওয়া বৈঠকে কমিশন প্রস্তাব করে, এক ব্যক্তি সর্বোচ্চ তিনবার প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন।সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, বিকল্প প্রস্তাবের জন্য অপেক্ষা করুন। আর কমিশনও প্রস্তাবটি আনুষ্ঠানিকভাবে দেয়নি।তিনি আরও বলেন, একজন ব্যক্তি যাতে প্রধানমন্ত্রী, দলীয় প্রধান এবং সংসদ নেতা পদে না থাকেন এ নিয়ে আলাপ হয়েছে। সংখ্যাগরিষ্ঠ সংসদীয় দলের সিদ্ধান্তে প্রধানমন্ত্রী হয়। এটা জরুরি নয়, দলের প্রধান প্রধানমন্ত্রী হবেন। কিন্তু সুযোগ রাখা উচিত। আর প্রধানমন্ত্রী যিনি হবেন, তিনিই সংসদ নেতা হবেন। এটাই রীতি। কোনো কোনো দেশে পৃথক সংসদ নেতার নজির রয়েছে। কিন্তু সেখানে সংসদ নেতার নির্বাহী ক্ষমতা নেই। বাংলাদেশে সংসদ নেতা এবং প্রধানমন্ত্রী অনেকটা অবিচ্ছেদ্য অংশ।তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়ে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ১৪ জন হবেন, এতে বিএনপি একমত। উপদেষ্টামণ্ডলী রুটিন দায়িত্ব পালন করবে, এতে বিএনপি একমত। প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগ করলে, উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য থেকে একজনকে মনোনীত করা হবে, এ সুপারিশেও একমত। স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষেত্রে একমত। স্থানীয় সরকারের কোনো নির্বাচনে দলীয় প্রতীক বরাদ্দ করা হবে না, এই ব্যাপারে আমরা সম্পূর্ণ একমত।সালাহউদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মানবাধিকার লঙ্ঘন প্রতিরোধের সুপারিশেও বিএনপি মোটামুটি একমত। তবে আরও বিস্তারিত আলোচনা করা দরকার। কারণ শৃঙ্খলা বাহিনী বলতে সশস্ত্র বাহিনীর তিন বিভাগসহ পুলিশ ও অন্যান্য বাহিনী সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত আছে। সুতরাং ঢালাওভাবে শৃঙ্খলা বাহিনীর ক্ষেত্রে একটি বিধান রাখলে, বিশৃঙ্খলা হয়ে যেতে পারে।সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, দ্বিকক্ষের আইনসভা গঠনে বিএনপি একমত। উচ্চ কক্ষের নাম সিনেট, নিম্ন কক্ষের নাম জাতীয় সংসদ হবে। নিম্ন কক্ষের ৪০০ আসনের মধ্যে ১০০ আসন নারীদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে এটা নিয়ে আমরা একমত, তবে সংরক্ষিত নারী আসনের নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে ভিন্নমত আছে। রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বৃদ্ধির কথা বলেছি। রাষ্ট্রপতির কাছে কী কী ক্ষমতা অর্পণ করা যায়, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে পরামর্শ ছাড়া রাষ্ট্রপতি কী কী করতে পারবেন, তা বিস্তারিত থাকবে। তবে এই মুহূর্তে বিস্তারিত উন্মোচন করছি না।বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কাছে সংসদ নেতার পদ থাকা উচিত। আর সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের ওপর ছেড়ে দেওয়া উচিত যে দলের প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী একই ব্যক্তি হবেন কিনা। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ব্যবহার করা যাবে না, এ বিষয়ে তারা একমত। স্থানীয় প্রশাসনে যে চারটি বিভাগের কথা বলা হয়েছে, সে বিষয়ে তারা একমত।বিএনপির এই নেতা বলেন, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের রিপোর্টে ২০৮ সুপারিশের মধ্যে ১৮৭টিতে একমত, আংশিক একমত ৫টিতে, একমত নয় ১১টায়। মন্তব্যসহ ভিন্নমত দিয়েছি ৫টিতে। যেসবে একমত নই, সেখানেও কিছু কিছু জায়গায় নীতিগতভাবে একমত হয়েছি। নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের রিপোর্টে ২৪৩টা সুপারিশ পেয়েছি। এর মধ্যে সরাসরি ১৪১টি সুপারিশের সঙ্গে একমত। ১৪টিতে আংশিক একমত। ৬৪ সুপারিশে মন্তব্যসহ ভিন্নমত। ২৪টিতে একমত হয়নি। দুদকসংক্রান্ত সংস্কার কমিশনের রিপোর্টে ২০টা সুপারিশ পেয়েছি। সরাসরি ১১টি প্রস্তাবে একমত। বাকি ৭-৮ প্রস্তাবে নীতিগতভাবে একমত বলে কিছু মন্তব্য দিয়েছিলাম। নীতিগত সিদ্ধান্তের বিষয়ে আরও কিছু কিছু বিষয়ে পরিষ্কার করতে হবে, উনাদের কাজ করতে হবে। আইন সংস্কারের বিষয় আছে, পর্যালোচনার বিষয় আছে। কোনোটার সঙ্গে দ্বিমত করিনি, নীতিগতভাবে একমত পোষণ করেছি। শুধু একটি প্রস্তাবে ভিন্নমত করেছি। যেটিও আইন সংশোধনের মাধ্যমে করতে পারে। দুদককে আমরা সর্বোচ্চ কার্যকর দেখতে চাই।তিনি বলেন, বিএনপি হচ্ছে সংস্কারের প্রথম প্রস্তাবক। এখন সংস্কার কমিশন গঠন হয়েছে এই সরকার গঠনের পর। ঐকমত্যের ভিত্তিতে চার্টার সই হলে পরবর্তী সরকার তা বাস্তবায়ন করবে।আলোচনায় সভাপতিত্ব করেছেন ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। বৈঠকে ছিলেন কমিশনের সদস্য বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, বদিউল আলম মজুমদার, ইফতেখারুজ্জামান, সফর রাজ হোসেন ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার। আলোচনায় সালাহউদ্দিন আহমদের সঙ্গে অংশ নেন বিএনপি চেয়ারপারসন উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ইসমাঈল জবিউল্লাহ, আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল ও সাবেক সচিব আবু মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান।সংস্কার প্রশ্নে ঐকমত্য গঠনের লক্ষ্যে পাঁচটি কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলো নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন-আলী রীয়াজ : এদিকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। তিনি জানান, ইতোমধ্যে যে সব রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে তা জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়মিত অবহিত করা হচ্ছে এবং প্রত্যেকটা বিষয়ে তিনি দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন। আলী রীয়াজ বলেন, বিএনপির সঙ্গে প্রথম পর্যায়ের আলোচনায় যেসব সুপারিশ ঐকমত্য কমিশন বা সংশ্লিষ্ট কমিশন থেকে পাঠানো হয়েছে তার মধ্যে বেশকিছু বিষয়ে তাদের সঙ্গে সামঞ্জস্য রয়েছে। আবার কিছু বিষয়ে মতের ভিন্নতাও রয়েছে। বিএনপি থেকে জানানো হয়েছে যেসব বিষয়ে মতভিন্নতা আছে তার অনেক বিষয়ে তাদের নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে আলোচনা করবেন এবং আমাদের জানাবেন।তিনি আরও বলেন, আমরা একটি ঐতিহাসিক মুহূর্তের সন্ধিক্ষণে আছি। সুপারিশমালার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত শুধু এই টেবিল থেকে হতে পারে না। কারণ, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলগুলোর নীতিনির্ধারকরা নিঃসন্দেহে অংশগ্রহণ করবেন।