কেজি ১ টাকা! খাজনার ভয়ে বেগুন রেখেই চলে গেলেন কৃষক


বগুড়ার শেরপুর উপজেলার পাইকারি বাজারে এক টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে বেগুন। কিছুক্ষণ পর আর বিক্রয় করতে না পেরে খাজনার ভয়ে বাজারেই বেগুন রেখে চলে গেলেন কৃষক তারিকুল ইসলাম। শনিবার সকালে চান্দাইকোনা হাটে এ ঘটনা ঘটে। উপজেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পাইকারি বাজারে ১ থেকে ৩ টাকা কেজি দরে বেগুন বিক্রি হয়েছে। মির্জাপুর, রেজিস্ট্রি অফিস, শেরুয়া বটতলা, বিকাল বাজার, সকাল বাজার, দশমাইল বাজারে খুচরা ১০ থেকে ১৫ টাকা কেজি দরে বেগুন বিক্রয় করা হচ্ছে। কৃষক ১ টাকা কেজি বিক্রয় করলেও ভোক্তাদের ক্রয় করতে হচ্ছে ১০ গুণ বেশি দিয়ে। কথা হয় সুঘাট ইউনিয়নের বিনোদপুর গ্রামের হোসেন আলীর ছেলে কৃষক তারিকুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি জানান, আমি এই প্রথম ৫ মণ বেগুন তুলেছি। বেগুনগুলো ৬০ টাকা খরচ করে চান্দাইকোনা পাইকারি বাজারে নিয়ে গিয়েছি। সেখানে ১ টাকা কেজি বিক্রয় হচ্ছিল। তখন আমি বিক্রয় করিনি। এর ১ ঘণ্টা পর আর বেগুন ক্রয় করার জন্য ক্রেতা নেই। তখন খাজনা দেওয়ার ভয়ে বাজারেই বেগুন রেখে চলে এসেছি। কৃষক আলম বলেন, ক্ষেতের বেগুন নিয়ে চান্দাইকোনা বাজারে গিয়েছিলাম। প্রতি মণ বিক্রি করেছি ৪০ টাকা দরে। এতে আমার বেগুন তোলার খরচ ও আড়তের খরচও উঠছে না। দাম না থাকায় কৃষকের ক্ষেতেই বেগুন পচে যাবে। আমরা বেগুন চাষ করে দিশেহারা হয়ে পড়েছি। সরকার সহযোগিতা করে হলেও কৃষকরা যেন তাদের ন্যায্য দাম পায়। সেদিকে সরকারের নজর দেওয়ার অনুরোধ জানাই। বিনোদপুর গ্রামের আরেক কৃষক ফুরকান আলী বলেন, বেগুনের ফলন ভালো হয়েছে। একজন শ্রমিক নিলে ৪০০-৫০০ টাকা গুণতে হয়। এই টাকা মজুরি দিয়ে বেগুন ক্ষেত থেকে তুলে বাজারে এনে যে দাম মিলছে, তাতে কোনো খরচই উঠছে না। এতে আমাদের মতো চাষিদের করুণ দশা হয়ে পড়েছে। এমন যদি হয় তাহলে কৃষকরা কৃষি আবাদ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে। পাইকারি আড়তের আড়তদাররা জানান, বেগুনের ব্যাপক আমদানি হওয়ায় বেগুনের তেমন চাহিদা নেই। শেরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ফারজানা আক্তার বলেন, এই উপজেলায় এবার ২২০ হেক্টর জমিতে বেগুন চাষ হয়েছে। বেগুনের ফলন এবার খুব ভালো হয়েছে। প্রতি বছর রমজানে বেগুনের চাহিদা বেশি থাকে এবার কেন দাম এত কম হলো বিষয়টি দেখতে হবে। যদি কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাহলে কৃষি বিভাগ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা দিয়ে তাদের সহায়তা করা হবে।