ছোটবেলায় কর্মঠ ও অনেক হাঁটতেন বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক পুরুষ


বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক পুরুষ হলেন জন টিনিসউড। টাইটানিক জাহাজ ডুবে যাওয়ার বছরে জন্ম নেওয়া বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক জীবিত পুরুষ মানুষ তিনি। জন টিনিসউডের বয়স এখন ১১২ বছর। ১৯১২ সালের ২৬ আগস্ট লিভারপুলে জন্মগ্রহণ করেন জন টিনিসউড। ১১২ বছরে পা রাখার পর তিনি বলেন, তার দীর্ঘ জীবনের জন্য কোনো ‘বিশেষ রহস্য’ নেই। জন টিনিসউড বলেন, এটাও জীবনের অন্যান্য ঘটনা আমি যেমনভাবে নেই, সেভাবেই নিচ্ছি। কেন আমি এতদিন বেঁচে আছি, তা আমার ধারণাতেও নেই। কোনো বিশেষ রহস্য নেই আমার জীবনে। তিনি গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষকে বলেছেন, কেন তিনি এতদিন বেঁচে আছেন, তা নিয়ে তার কোনো ধারণা নেই। লিভারপুল ফুটবল ক্লাবের আজীবন ভক্ত জন টিনিসউড বর্তমানে সাউথপোর্টের একটি কেয়ার হোমে থাকেন এবং ১১৪ বছর বয়সি জুয়ান ভিসেন্তে পেরেজ মোরার মৃত্যুর পর এপ্রিল মাসে বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক মানুষ হন জন টিনিসউড। তিনি বলেন, আমি ছোটবেলায় বেশ কর্মঠ ছিলাম এবং অনেক হাঁটতাম। তবে আমি নিজেকে অন্যদের থেকে আলাদা মনে করি না। আপনি হয় দীর্ঘজীবী হবেন বা স্বল্পজীবী হবেন। এ বিষয়ে আপনি তেমন কিছুই করতে পারবেন না। জন টিনিসউড দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় আর্মি পে কর্পসে প্রশাসনিক দায়িত্বে ছিলেন। যেখানে তিনি আটকেপড়া সৈন্যদের খুঁজে বের করা এবং খাবার সরবরাহের ব্যবস্থা করতেন। বর্তমানে তিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সৈনিক হিসেবে বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক জীবিত পুরুষ। এ ছাড়া তিনি শেল ও ব্রিটিশ পেট্রোলিয়ামে একজন হিসাবরক্ষক হিসেবে কাজ করেছেন এবং ১৯৭২ সালে অবসর নেন। টিনিসউড ১৯৪২ সালে তার স্ত্রী ব্লডওয়েনের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের মেয়ে সুসান ১৯৪৩ সালে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৮৬ সালে তার স্ত্রীর মৃত্যুর আগ পর্যন্ত একসঙ্গে ৪৪ বছরের দাম্পত্য জীবন কাটিয়েছেন। প্রতি শুক্রবার ব্রিটিশ খাবার জনপ্রিয় \'ফিশ অ্যান্ড চিপস\' খাওয়া ছাড়া কোনো বিশেষ নিয়ম মেনে চলেন না বলে জানিয়েছেন টিনিসউড। তিনি বলেন, যা দেওয়া হয়, তাই খাই— সবাই যেমন খায়। আমার কোনো বিশেষ খাদ্যাভ্যাস নেই। ২০১২ সালে ১০০ বছর পূর্ণ হওয়ার পর থেকে তিনি প্রতি বছর রাজপরিবার থেকে জন্মদিনের কার্ড পেয়ে আসছেন। প্রথমে প্রয়াত রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের কাছ থেকে, যিনি তার চেয়ে প্রায় ১৪ বছরের ছোট ছিলেন এবং এখন রাজা তৃতীয় চার্লসের কাছ থেকে এ শুভেচ্ছাবার্তা পান। তার শৈশব থেকে বর্তমান দুনিয়া কতটা পরিবর্তিত হয়েছে— এমন প্রশ্নের জবাবে টিনিসউড বলেন, আমার মতে খুব একটা ভালো হয়নি বা তেমন কোনো উন্নতি হয়নি। সম্ভবত কিছু জায়গায় উন্নতি হয়েছে। কিন্তু অন্য জায়গায় অবনতি হয়েছে। উল্লেখ্য, এর আগে বিশ্বের এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি দিন বয়স্ক জীবিত পুরুষ ছিলেন জাপানের জিরোয়েমন কিমুরা, যিনি ১১৬ বছর ৫৪ দিন বেঁচে ছিলেন এবং ২০১৩ সালে মারা যান। অন্যদিকে বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক জীবিত নারী হলেন জাপানের ১১৬ বছর বয়সি তোমিকো ইতোওকা।