সাত উপজেলায় বিএনপির ৮, কালীগঞ্জে এমপিপুত্র ও ভাই


উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের এমপি-মন্ত্রীদের আত্মীয়-স্বজনদের প্রার্থী না হতে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তা উপেক্ষা করে লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী ও লালমনিরহাট-২ আসনের সংসদ-সদস্য নুরুজ্জামান আহমেদের ছেলে রাকিবুজ্জামান আহমেদ ও ভাই মাহবুবুজ্জামান আহমেদ। অন্যদিকে বিএনপি এ নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত নিলেও সাত উপজেলায় দলটির আট নেতা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে খুলনার ফুলতলা ও দিঘলিয়ায় দুজন এবং বান্দরবানের লামা, দিনাজপুরের বীরগঞ্জ, টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর, সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ ও বরগুনা সদর উপজেলায় একজন করে রয়েছেন। দ্বিতীয় ধাপে ১৬০ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে দুই হাজার ৫৫ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৭৩০, ভাইস চেয়ারম্যান ৭৬৩ ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫৬২ জন মনোনয়ন দাখিল করেছেন। রোববার এসব উপজেলায় মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় শেষ হয়েছে। এদিন কুমিল্লা আদর্শ সদর ও চট্টগ্রামের রাউজানে তিনটি পদেই একজন করে প্রার্থী হয়েছেন। একক প্রার্থী হওয়ায় এ দুই উপজেলায় ভোটগ্রহণের প্রয়োজন হবে না। নির্বাচন কমিশন (ইসি) এ তথ্য জানিয়েছে। এছাড়াও চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান, নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান, মৌলভীবাজার সদর উপজেলায় মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান এবং রাঙামাটির রাজস্থলিতে ভাইস চেয়ারম্যান পদে একজন করে প্রার্থী মনোনয়ন দাখিল করেছেন। সব মিলিয়ে ১১ জন একক প্রার্থী হয়েছেন। বাছাইয়ে মনোনয়ন বৈধ হলে তারা বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হবেন। এর আগে প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনে ১২ জন একক প্রার্থী ছিলেন। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী দ্বিতীয় ধাপের উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র বাছাই ২৩ এপ্রিল, আপিল ২৪ থেকে ২৬ এপ্রিল, আপিল নিষ্পত্তি ২৭ থেকে ২৯ এপ্রিল, প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ৩০ এপ্রিল, প্রতীক বরাদ্দ ২ মে এবং ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ২১ মে। ব্যুরো ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর- লালমনিরহাট : কালীগঞ্জে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী ও লালমনিরহাট-২ (কালীগঞ্জ-আদিতমারী) আসনের সংসদ-সদস্য নুরুজ্জামান আহমেদের ছেলে রাকিবুজ্জামান আহমেদ ও ভাই মাহবুবুজ্জামান আহমেদ। দলীয় নির্দেশ উপেক্ষা করে চাচা-ভাতিজার এ মনোনয়ন দাখিল কেন্দ্র করে এলাকায় নানা আলোচনা সমালোচনা শুরু হয়েছে। এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রাকিবুজ্জামান আহমেদ বলেন, আমি দলীয়ভাবে সেরকম কোনো নির্দেশনা পাইনি। এলাকার মানুষজনের ভালোবাসার চাপে প্রার্থী হয়েছি। মাহবুবুজ্জামান আহমেদ বলেন, এমপি আমার ভাই হলেও আমি তার বলয়ের লোক নই। আমি ছাত্রলীগ থেকে রাজনীতি করে আজ এই পর্যায়ে এসেছি। খুলনা : ফুলতলায় চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া ছয়জনের মধ্যে রয়েছেন খুলনা জেলা যুবদল নেতা মো. সাব্বির হোসেন এবং সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা মরহুম সরদার আলাউদ্দীন মিঠুর স্ত্রী জুবাইদা খান সুরভী। এছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিনজন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে দুজন। দিঘলিয়ায় চেয়ারম্যান পদে পাঁচজনের মধ্যে বিএনপি নেতা গাজী মো. এনামুল হাচান মাসুম মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এখানে ভাইস চেয়ারম্যান পদে সাতজন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিনজন। এছাড়া তেরখাদায় চেয়ারম্যান পদে তিনজন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে পাঁচজন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে চারজন। লামা (বান্দরবান) : লামায় চেয়ারম্যান পদে দুজন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে চার ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিনজন। দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী হলেন-উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও বর্তমান চেয়ারম্যান মো. মোস্তফা জামাল এবং উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি জাকির হোসেন মজুমদার। এ বিষয়ে লামা উপজেলা বিএনপির সভাপতি আমির হোসেন বলেন, আমরা দলের সিদ্ধান্তে এই নির্বাচন বয়কট করছি। কেউ যদি দলের সিদ্ধান্তের বাহিরে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে তাহলে দল তাকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করবে। বীরগঞ্জ (দিনাজপুর) : বীরগঞ্জে চেয়ারম্যান পদে ছয়জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এদের একজন জেলা বিএনপির উপদেষ্টা মো. রেজওয়ানুল ইসলাম (রিজু)। এছাড়া এ উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে চারজন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিনজন। ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল) : ভূঞাপুরে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া ছয়জনের মধ্যে রয়েছেন উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান। এ উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে চারজন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে চারজন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। জামালগঞ্জ (সুনামগঞ্জ) : জামালগঞ্জে চেয়ারম্যান পদে জেলা আওয়ামী লীগ সহসভাপতি রেজাউল করিম শামীম, উপজেলা বিএনপির সভাপতি নূরুল হক আফিন্দী ও বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ইকবাল আল আজাদ। এছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান পদে চারজন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিনজন। বরগুনা : বরগুনা সদরে চেয়ারম্যান পদে ছয় প্রার্থীর মধ্যে রয়েছেন জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. হালিম মিয়া। এ উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে আট ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিনজন। বেতাগীতে চেয়ারম্যান পদে আটজন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে দুই ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে আরও চারজন। ভোলা : জেলা সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে তিনজন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে চারজন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে সাতজন। বোরহানউদ্দিনে চেয়ারম্যান পদে চারজন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে চারজন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিনজন। এছাড়া দৌলতখানে চেয়ারম্যান পদে পাঁচজন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিনজন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে চারজন। বাগেরহাট : ফকিরহাট উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে তিনজন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে চারজন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে দুজন। মোল্লাহাটে চেয়ারম্যান পদে চারজন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিনজন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে চারজন। চিতলমারীতে চেয়ারম্যান পদে চারজন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে চারজন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে চারজন। জয়পুরহাট : জয়পুরহাট সদরে চেয়ারম্যান পদে আটজন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ছয়জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ছয়জন। পাঁচবিবিতে চেয়ারম্যান পদে ছয়জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে চারজন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে চারজন। পঞ্চগড় : বোদায় চেয়ারম্যান পদে আটজন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে সাতজন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিনজন। লক্ষ্মীপুর : রায়পুরে চেয়ারম্যান পদে দুজন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে পাঁচজন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিনজন। রামগঞ্জে চেয়ারম্যান পদে ছয়জন, ভাইস চেয়ারম্যান চারজন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে চারজন। কুড়িগ্রাম : কুড়িগ্রাম সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ছয়জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে চারজন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিনজন। উলিপুরে চেয়ারম্যান পদে পাঁচজন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিনজন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিনজন। রাজারহাটে চেয়ারম্যান পদে চারজন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে চারজন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে চারজন। ধর্মপাশা (সুনামগঞ্জ) : চেয়ারম্যান পদে ছয়জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ছয়জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে পাঁচজন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। উলিপুর (কুড়িগ্রাম) : চেয়ারম্যান পদে পাঁচজন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিনজন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিনজন। উল্লাপাড়া (সিরাজগঞ্জ) : চেয়ারম্যান পদে ছয়জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে সাতজন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে পাঁচজন। নলছিটি (ঝালকাঠি) : চেয়ারম্যান পদে তিনজন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ছয়জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে পাঁচজন। গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) : চেয়ারম্যান পদে চারজন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে চারজন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে সাতজন। চাটখিল (নোয়াখালী) : চাটখিলে চেয়ারম্যান পদে পাঁচজন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে চারজন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান দুজন। ঠাকুরগাঁও : ঠাকুরগাঁও সদরে চেয়ারম্যান পদে পাঁচজন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিনজন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে চারজন। চিতলমারী (বাগেরহাট) : চেয়ারম্যান পদে চারজন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে চারজন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে চারজন। সেনবাগ (নোয়াখালী) : চেয়ারম্যান পদে ১০ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে পাঁচজন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে পাঁচজন। নাইক্ষ্যংছড়ি (বান্দরবান) : চেয়ারম্যান পদে তিনজন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিনজন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে চারজন। কোম্পানীগঞ্জ (সিলেট) : কোম্পানীগঞ্জে চেয়ারম্যান পদে তিনজন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে পাঁচজন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে চারজন। কালকিনি (মাদারীপুর) : চেয়ারম্যান পদে চারজন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিনজন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিনজন। নালিতাবাড়ী (শেরপুর) : চেয়ারম্যান পদে চারজন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে পাঁচজন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে চারজন। ময়মনসিংহ : ময়মনসিংহ সদরে চেয়ারম্যান পদে পাঁচজন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে সাতজন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে দুজন।