বিপদসীমা ছুঁয়েছে দুধকুমারের পানি, আট শতাধিক পরিবার পানিবন্দি
অনলাইন নিউজ ডেক্স
কুড়িগ্রামে ধরলা, তিস্তা, দুধকুমার ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বেড়ে প্লাবিত এলাকার পরিসর বাড়ছে। দুধকুমার নদের পানি বেড়ে বিপদসীমা ছুঁয়েছে। প্রতিদিন বাড়ছে পানিবন্দি পরিবারের সংখ্যা। নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে নদ-নদী আববাহিকার আট শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ব্রহ্মপুত্র ও দুধকুমার অববাহিকার অনেক পরিবারের বাড়িঘরে পানি ঢুকতে শুরু করেছে। তবে এখনও ক্ষয়ক্ষতির হিসাব পায়নি জেলা প্রশাসনের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা শাখা।
স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানায়, জেলার প্রধান নদ-নদীগুলোর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। বুধবার সন্ধ্যা ৬টার প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় দুধকুমার নদের পানি পাটেশ্বরী পয়েন্টে ৪২ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমা স্পর্শ করেছে। এই সময়ে ব্রহ্মপুত্রের পানি নুন খাওয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৫০ সেন্টিমিটার এবং চিলমারী পয়েন্টে ৫৯ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। ধরলার পানি সেতু পয়েন্টে ৫৫ সেন্টিমিটার এবং তিস্তার পানি কাউনিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৮০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। তবে আগামী ২৩ জুন পর্যন্ত পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থেকে চরাঞ্চলসহ নদ-নদী তীরবর্তী এলাকা প্লাবিত হতে পারে।
সদরের যাত্রাপুর ও পাঁচগাছী ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল, ভূরুঙ্গামারী উপজেলার আন্ধারীরঝাড় এবং নাগেশ্বরী উপজেলার রায়গঞ্জ ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলগুলোতে পানি ঢুকতে শুরু করেছে। ফলে এসব এলাকার অন্তত আট শতাধিক পরিবার পানিবন্দি জীবনযাপন করছে।
সদরের যাত্রাপুর ইউনিয়নের ব্রহ্মপুত্র নদের পোড়ারচর, গোয়াইলপুরির চর, চিড়া খাওয়া, দক্ষিণ গোয়াইলপুরি গ্রামে পানি ঢোকায় দেড় শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। একই ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের চর ভগবতীপুর, ৪ নম্বর ওয়ার্ডের শিবের পাছি ও খাসের চরেও পানি ঢুকেছে। এখানকার শতাধিক পরিবার পানিবন্দি অবস্থায় আছে।
এই ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বার) আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘পানি বাড়ছে। তবে এখনও তেমন খারাপ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি। চরগুলো নিচু হওয়ায় অনেক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। কিছু বাড়িঘরে পানি ঢুকলেও বেশিরভাগ বাড়িঘর এখনও নিরাপদ আছে।’
নাগেশ্বরী উপজেলার রায়গঞ্জ ইউনিয়নে দুধকুমার নদের পানি বেড়ে চারটি গ্রামের তিন শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ওই ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ফান্দেরচর, চর দামাল গ্রাম, মাঝের চর ও আদর্শ বাজার গ্রামে পানি ঢোকায় মানুষের স্বাভাবিক চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
দুধকুমার নদের পানি বেড়ে চারটি গ্রামের তিন শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে
৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বার) রিয়াজ উদ্দিন বলেন, ‘নিচু এলাকার বাড়িঘরে পানি ঢুকেছে। এর মধ্যে তিন শতাধিক পরিবার পানিবন্দি। মানুষ নৌকা আর ভেলায় করে প্রয়োজনীয় কাজ সারছেন।’
জেলা প্রশাসনের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা শাখা সূত্রে জানা যায়, নদ-নদীর পানি বাড়ছে। সার্বিক অবস্থার ওপর সতর্ক নজর রাখা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট উপজেলাগুলো থেকে এখনও পানিবন্দি পরিবার ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি। তবে প্রতিবেদন চাওয়া হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘আগামী আরও দুই-তিন দিন পানি বাড়ার পূর্বাভাস রয়েছে। এ সময় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হবে। তবে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে বন্যার পূর্বাভাস নেই।
ডোনেট বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।