বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন প্রকল্প বাতিল


বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন প্রকল্প বাতিল
আলোচিত ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন’ প্রকল্প বাতিল করেছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির সত্যতা পাওয়ায় কার্যক্রম অসমাপ্ত রেখে প্রকল্প বাতিল করা হয়। একই সঙ্গে প্রকল্পে গবেষণা কাজে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান ও তাদের স্বত্বাধিকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে দুদকে চিঠি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। রোববার দুপুরে পূর্বনির্ধারিত বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত নেয় মন্ত্রণালয়। বৈঠক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।এর আগে ১৩ মার্র্চ জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) প্রকল্প বাতিলের সুপারিশ করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে রোববার মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে বৈঠক ডাকে।প্রকল্পটির অনিয়ম, দুর্নীতি নিয়ে রোববার জাতীয় ‘আওয়ামী লীগের চেতনার দোকানে লুটপাট-বুদ্ধিজীবীদের এ কেমন কাণ্ড’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করে। এরপরই প্রকল্পটি বাতিল করল মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়।বৈঠকে উপস্থিত একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, প্রকল্পটিতে সুনির্দিষ্ট করে অনিয়ম ও দুর্নীতির সত্যতা পাওয়া গেছে। যারা অনিয়ম-দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত তাদের শাস্তির বিষয়ে বৈঠকে একাধিক কর্মকর্তা পরামর্শ উত্থাপন করেন। সর্বসম্মতিক্রমে প্রকল্পটির কার্যক্রম বাতিল এবং দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) এ চিঠি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।প্রকল্পটি নিয়ে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির তথ্য আসে গত জানুয়ারি মাসে। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) ৮ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করে। ১৩ মার্চ কমিটি প্রতিবেদন দাখিল করে। প্রতিবেদনে আওয়ামী বুদ্ধিজীবীদের করা গবেষণাপত্রে কপি-পেস্ট করাসহ কাজ না করেই অর্থ তুলে নেওয়ার সত্যতা উঠে আসে।জামুকার প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন’ প্রকল্পে রীতিমতো লুটপাট করেছেন আওয়ামী বুদ্ধিজীবীরা। কাজ সম্পন্ন না করেই সাড়ে ২৩ কোটি টাকার প্রকল্প থেকে ১৩ কোটি টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়েছে প্রায় সাত কোটি টাকা।২০২২ সালের জানুয়ারিতে ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন’ নামে একটি প্রকল্প গ্রহণ করে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার। এতে ব্যয় ধরা হয় ২৩ কোটি ৫২ লাখ ৪৮ হাজার টাকা। প্রকল্পটির মেয়াদ শেষ হবে জুনে। ইতোমধ্যে কাজের ৮০ ভাগ সম্পন্ন দেখিয়ে সব মিলিয়ে ১৩ কোটি ২৫ লাখ ৭ হাজার ৪৫০ টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি মন্ত্রণালয়ের নজরে এলে প্রকল্পের কার্যক্রম স্থগিত রেখে তদন্ত করতে দেওয়া হয়।